সাক্ষরিত একাধিক মউ
মায়ানমারকে বিপুল ঋণের আশ্বাস ভারতের
নমোহন সিংহের ‘পুবে তাকাও’ নীতির সফল রূপায়ণের সূচনা হল আজ থেকে। দীর্ঘ ২৫ বছর পরে গত কালই মায়ানমারের মাটিতে পা রেখেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। আর আজই ভারত-মায়ানমার দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতায় নতুন যাত্রা শুরু হল। তার সূত্র ধরে আজ মায়ানমারকে ৫০ কোটি ডলার ঋণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে ভারত।
এর আগে ২০১০ সালে বাংলাদেশকে ১০০ কোটি ডলার ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ভারত সরকার। সেটা ছিল শেখ হাসিনার ভারত সফর। আর এ বার মায়ানমার সফরে এসে খোদ ভারতের প্রধানমন্ত্রী অর্থ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন। আর তার পরিবর্তে পেলেন সীমান্ত এলাকায় জঙ্গি কার্যকলাপ রোধের প্রতিশ্রুতি।
তবে ভারতের জন্য কালকের দিনটিও খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ মায়ানমারের বিরোধী দলনেত্রী নোবেলজয়ী আউং সাং সু চি-র সঙ্গে আগামী কালই বৈঠকে বসবেন মনমোহন সিংহ।
আজ সকালে মায়ানমারের প্রেসিডেন্ট থেন সুইয়ের সঙ্গে বৈঠকে বসেন মনমোহন সিংহ। প্রথমেই এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার সঙ্গে মায়ানমারের ফরেন ট্রেড ব্যাঙ্কের একটি ‘মেমোরান্ডাম অফ আন্ডারস্ট্যান্ডিং’ (মউ) স্বাক্ষরিত হয়। সেখানেই মায়ানমারকে ৫০ কোটি ডলার ঋণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় ভারত। অক্টোবরে মায়ানমারের প্রেসিডেন্ট যখন ভারতে যান, তখনই এই বিপুল অর্থ সাহায্যের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল নয়াদিল্লি।
মায়ানমারের প্রেসিডেন্ট থেন সুইয়ের সঙ্গে মনমোহন সিংহ। ছবি: এ এফ পি
এ ছাড়াও একাধিক ক্ষেত্রে দু’দেশের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। তালিকায় রয়েছে বিমান পরিষেবা, যৌথ বাণিজ্য ও বিনিয়োগের জন্য ফোরাম গঠন, সীমান্ত এলাকা উন্নয়ন ও সীমান্ত বাণিজ্য কেন্দ্র গঠনের চুক্তিও। ইন্দো-মায়ানমার সীমান্ত এলাকা উন্নয়ন নিয়ে আজ যে মউটি স্বাক্ষরিত হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, ওই এলাকায় স্কুল আর স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়তে মায়ানমারকে সাহায্য করবে ভারত। শিক্ষা ক্ষেত্রেও একে অপরকে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দু’দেশ। আজ ইয়াঙ্গনের ড্যাগন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে গবেষণায় সহযোগিতা নিয়ে একটি চুক্তি সই হয়েছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের। এই উপলক্ষে আপাতত মায়ানমারেই আছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস। যদিও ইম্ফল থেকে মান্দালয় পর্যন্ত বাস পরিষেবার চুক্তিটি আজ হয়নি। কারণ মায়ানমারের মন্ত্রিসভায় প্রস্তাবটি পাশ হয়নি।
আসলে ভারত যে বিনিয়োগ এবং রফতানির এক নতুন যুগের সূচনা করতে চায়, সেই ইঙ্গিত কালই দেন মনমোহন সিংহ। কৌশলগত ভাবে মায়ানমারকে পাশে পাওয়াটাও ভারতের পক্ষে খুবই জরুরি। আর তার জন্যই আজকের এই চুক্তিগুলির গুরুত্ব এক অন্য মাত্রা পেয়েছে। এত দিন ধরে মায়ানমারকে উপেক্ষা করার ফল এখন ভালমতোই টের পাচ্ছে নয়াদিল্লি। কারণ প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর এই দেশের উপর চিনের নজর বহু দিন থেকেই। চিনের সেই আধিপত্যের জায়গাটাকেই এখন দখল করতে চাইছে ভারত।
তা ছাড়া, মনমোহন সিংহের ‘পুবে তাকাও’ নীতি সফল করতে গেলে মায়ানমারকে পাশে পাওয়াটা কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটাও ভারত ভাল করেই জানে। মায়ানমারকে পাশে পেলে হ্যানয় (ভিয়েতনাম) পর্যন্ত যোগাযোগের রাস্তাটাও পরিষ্কার হয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। মনমোহন সিংহ আজ থেন সুইকে বলেছেন, “আমরা দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে এক নতুন অধ্যায় শুরু করতে চলেছি। তাই একে অপরকে সাহায্য করেত আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
নিরাপত্তার দিক দিয়েও মায়ানমার গুরুত্বর্পূণ। উত্তর-পূর্বের কিছু জঙ্গি সংগঠনের ঘাঁটি আছে সীমান্ত সংলগ্ন পাহাড়ি জঙ্গলে। ভারত তাই চায় অনুপ্রবেশ ও জঙ্গি দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিক থেন সুই সরকার। সে প্রতিশ্রুতিও দিল্লি আজ আদায় করছে। সন্ত্রাস দমনে দিল্লির সঙ্গেই একজোট হয়ে লড়বেন বলে জানান মায়ানমারের প্রেসিডেন্টও।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.