মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে পঞ্চায়েত ভোটে কোনও সমঝোতায় যাচ্ছেন না কংগ্রেসে তাঁর ‘ঘোষিত বিরোধী’রা। দুই সাংসদঅধীর চৌধুরী, দীপা দাশমুন্সি এবং দুই জেলা কংগ্রেস সভাপতিআবু হাসেম খান চৌধুরী (ডালু) এবং শঙ্কর সিংহ।
শনিবার মালদহে আবু হাসেম খান চৌধুরী দাবি করেছেন, “প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির উপস্থিতিতে সম্প্রতি প্রদেশ কংগ্রেস সিদ্ধান্ত নিয়েছে মালদহ, মুর্শিদাবাদ, উত্তর দিনাজপুর ও নদিয়ায় কংগ্রেস পঞ্চায়েত নির্বাচনে একক ভাবে লড়াই করবে। আরও কোন জেলা নেতৃত্ব যদি একক ভাবে লড়াই করতে চান, তবে প্রদেশ কংগ্রেস সেই জেলাকেও স্বাধীনতা দেবে।”
এই ‘অবস্থান’ অবশ্য অপ্রত্যাশিত নয়। কারণ, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য একাধিক বার বলেছেন, “পঞ্চায়েত ভোটে জোট গড়ার সিদ্ধান্ত দলের স্থানীয় নেতৃত্বের উপরেই ছাড়া হয়েছে।” তা ছাড়া, রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অভিমত, তৃণমূলের সঙ্গে জোট না হওয়ায় আপাতত আসন্ন পুর-ভোটের ফলাফলে নজর রাখতে চান কংগ্রেস নেতৃত্ব। পুর-ভোটে কংগ্রেস কেমন ফল করে, তার উপরে নির্ভর করছে পঞ্চায়েত ভোট পর্যন্ত জোট না করার এই ‘ধারা’ বজায় রাখা হবে কি না। |
অধীর, দীপারা আগে একাধিকবার নিজস্ব যুক্তিতে পঞ্চায়েত ভোটে কংগ্রেসের একক লড়াইয়ের পক্ষে সওয়াল করেছেন। এ দিন আবু হাসেম বলেন, “নানা প্রলোভন দেখিয়ে মালদহ-সহ যে সব জেলায় কংগ্রেস শক্তিশালী সেখানেই কংগ্রেসকে ভাঙার চক্রান্ত শুরু করেছে তৃণমূল। সে জন্যই একক ভাবে পঞ্চায়েতে লড়াই করার দাবি উঠেছিল। আমাদের দাবি মেনে প্রদেশ কংগ্রেসও সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে। তাই আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলকে একটি আসনও ছাড়া হবে না এই চারটি জেলায়। প্রতিটি আসনে প্রার্থী দিয়ে কংগ্রেস একক ভাবে লড়ে জেলা পরিষদগুলি দখল করবে।”
পক্ষান্তরে, মালদহ জেলা তৃণমূল সভানেত্রী তথা রাজ্যের নারী ও সমাজকল্যাণমন্ত্রী সাবিত্রী মিত্রের দাবি, “কংগ্রেস জোট গড়ে মালদহে লড়বে না বলে অনেকদিন ধরেই হুমকি দিচ্ছে। আমরা তা নিয়ে প্রদেশ তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করেছি। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে গোটা জেলায় একক ভাবে লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছি। প্রার্থী বাছাইয়ের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।” সাবিত্রীদেবীর বক্তব্য, “জেলায় শক্তি বাড়লেও আমরা পঞ্চায়েত ভোটে জোট করে লড়তে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের সঙ্গে আলোচনা না করে মালদহ জেলা কংগ্রেস সভাপতি পঞ্চায়েত নির্বাচনে একক ভাবে লড়াই করার কথা ঘোষণা করেছেন। তাই আমরা প্রতি আসনে প্রার্থী দেব।” তাঁর ‘চ্যালেঞ্জ’, “আলাদা ভাবে পঞ্চায়েত ভোটে লড়াই হোক। ফলাফলই বুঝিয়ে দেবে কে বেশি শক্তি ধরে।” আবু হাসেমের ‘জবাব’, “তৃণমূলের জেলা সভানেত্রী যে ফাঁকা আওয়াজ দিচ্ছেন, সেটা পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলেই স্পষ্ট হয়ে যাবে।” |