খুন, অভিযুক্ত ‘সিপিএম-ঝাড়খণ্ডী জোট’
রাজ্যে পালাবদলের আগে জঙ্গলমহলে দলীয় কর্মী খুন হলে তখনকার শাসকদল সিপিএম দায় চাপাত ‘মাওবাদী-তৃণমূল যৌথ বাহিনী’র উপরে। শুক্রবার গভীর রাতে পশ্চিম মেদিনীপুরে বেলপাহাড়ির ভেলাইডিহার বড়শোল গ্রামে দলীয় এক কর্মীর ছেলে খুনের ঘটনায় বর্তমান শাসকদল তৃণমূলের নেতারা ‘সিপিএম-মাওবাদী-ঝাড়খণ্ডী জোটে’র বিরুদ্ধে ‘সন্ত্রাস ছড়ানো’র অভিযোগ তুলল। শ্যামল সাহা (৪০) নামে ওই যুবককে খুনে জড়িত সন্দেহে পুলিশ সিপিএম সমর্থক এক ডাককর্মী এবং ঝাড়খণ্ড পার্টির এক কর্মীকে গ্রেফতার করেছে। দীর্ঘ দিন পরে জঙ্গলমহলে ফের
— নিজস্ব চিত্র।
খুনের ঘটনায় প্রশাসনও উদ্বিগ্ন। শনিবার গ্রামে যান আইজি (পশ্চিমাঞ্চল) গঙ্গেশ্বর সিংহ, ডিআইজি (মেদিনীপুর রেঞ্জ) লক্ষ্মীনারায়ণ মিনা।
পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়নমন্ত্রী সুকুমার হাঁসদা ও দলের জেলা সভাপতি দীনেন রায়ের নেতৃত্বে তৃণমূলের প্রতিনিধিদলও গ্রামে যায়। সুকুমারবাবুর অভিযোগ, “জঙ্গলমহলে শান্তি ফেরায় বিচলিত সিপিএম, মাওবাদী, ঝাড়খণ্ডীরা মিলে ফের গোলমাল পাকাতে চাইছে।” দীনেনবাবুরও বক্তব্য, “আমাদের সমর্থন বাড়ায় শঙ্কিত সিপিএমের বাহিনী সন্ত্রাস ছড়াতেই এই খুন করেছে।” ১ জুন ভেলাইডিহায় ধিক্কার-সভাও ডেকেছে তৃণমূল। সিপিএমের বেলপাহাড়ি জোনাল-সম্পাদক উদ্ধব মাহাতোর অবশ্য দাবি, “ব্যক্তিগত রেষারেষির জেরে এই খুনের ঘটনাকে ব্যবহার করে শাসকদল পঞ্চায়েত ভোটের আগে এলাকায় বিরোধীদের জব্দ করতে চাইছে। মিথ্যা অভিযোগ করছে।” নিহত শ্যামল কয়েক বছর আগে তাঁদের যুব সংগঠনেই ছিল বলেও দাবি সিপিএম নেতৃত্বের। আর ঝাড়খণ্ড পার্টির নেত্রী চুনিবালা হাঁসদার কটাক্ষ, “কারা মাওবাদীদের দোসর ছিল, তা এলাকাবাসী জানেন। আমরা অশান্তির বিরুদ্ধে।”
বাঁকুড়ার বারিকুল লাগোয়া বড়শোল গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষক, তাঁদের দলের ‘কর্মী’ সুধীর সাহাকে না পেয়েই তাঁর ছেলে শ্যামলকে কুড়ুল দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয় বলে অভিযোগ তৃণমূলের। মাটির বাড়ির দোতলা থেকে ঝাঁপিয়ে লুকিয়ে পড়েছিলেন বৃদ্ধ সুধীরবাবু। ঝাঁপের জেরে চোট পেয়ে ঝাড়গ্রাম হাসপাতালে ভর্তি সুধীরবাবু বলেন, “কয়েক দিন আগে রাজ্য সরকারের বর্ষপূর্তিতে এলাকায় তৃণমূলের অনুষ্ঠানে দলের পতাকা তুলেছিলাম। স্থানীয় তৃণমূলের উপদেষ্টা হলেও সদস্য নই। ছেলেও রাজনীতি করত না।” তাঁর কথায়, “রাত দু’টো নাগাদ কয়েক জন আমার নাম ধরে ডাকে। গ্রামেরই বিকাশ মুর্মু, ভৈরব মুর্মুর গলা চিনতে পারি। অত রাতে দরজা খুলতে স্ত্রীকে নিষেধ করি। কিন্তু ওরা গোয়ালঘরের ছাদের টালি খুলে ঢোকার চেষ্টা করতেই খারাপ কিছুর আশঙ্কায় দোতলা থেকে ঝাঁপিয়ে লুকিয়ে পড়ি। জ্ঞান হারাই। জ্ঞান ফিরলে জানতে পারি, ছেলেকে খুন করেছে।”
সুধীরবাবুর দাবি, “বিকাশ মুর্মু, ভৈরব মুর্মুরা এক সময়ে যেমন মাওবাদী-জনগণের কমিটি করেছে, তেমনই পরে সিপিএমের বাহিনীতেও দেখা গিয়েছে। ঝাড়খণ্ডী মিছিলেও থাকত।” সুধীরবাবুর স্ত্রী বেলারানিদেবী বলেন, ‘‘হামলাকারীরা গ্রামেরই হরেন্দ্রনাথ মুর্মুর কথামতো আলোচনার জন্য এসেছে বলে জানিয়েছিল।” এই অভিযোগের ভিত্তিতেই সিপিএম সমর্থক ডাককর্মী হরেন্দ্রনাথ ও পাশের টংভেদার ঝাড়খণ্ড পার্টি-কর্মী বিক্রম টুডুকে ধরেছে পুলিশ।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.