জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া রায়পুর চা বাগানের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে গিয়ে শ্রমিকদের প্রতিরোধের মুখে পড়ে ফিরে যেতে হল পুলিশ প্রশাসন-সহ হাইকোর্টের প্রতিনিধি দলকে। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে বৃহস্পতিবার রায়পুর চা বাগানের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে যায় প্রতিনিধি দলটি। দীর্ঘ কয়েক বছর বন্ধ থাকার পরে ২০০৯ সালের অগস্ট মাসে অন্য একটি সংস্থাকে আইনগত ভাবে বাগানের পরিচালনার অধিকার দেয় রাজ্য সরকার। তবে বাগানের লিজ পুরানো মালিকানা সংস্থার হাতেই রয়ে গিয়েছে। জানা গিয়েছে, রায়পুর চা বাগানের মূল মালিক সংস্থার কাছে কয়লা সরবরাহ বাবদ প্রায় ১৪ লক্ষ টাকা দেনা রয়েছে শিলিগুড়ির একটি সংস্থার। সেই দেনা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে একটি মামলাও রয়েছে। সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্ট রায়পুর চা বাগানের মূল মালিকানা সংস্থার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেওয়ার পরেই এদিন প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে যায় হাইকোর্টের প্রতিনিধি দল। |
এ দিকে হাইকোর্টের নির্দেশের কথা জানাজানি হয়ে পড়ায় গত কয়েকদিন ধরেই শ্রমিকরা বাগানে পাহারার কাজ শুরু করেন। এদিন সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার জন্য প্রতিনিধি দলটি বাগানে পৌঁছালে মহিলা ও পুরুষ শ্রমিকরা হাতে তির ধনুক নিয়ে অবরোধ শুরু করেন। বাধ্য হয়েই প্রতিনিধি দলটি সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত না করেই ফিরে যায়। কলকাতা হাইকোর্টের লিকুইডেশন অফিসার রানা সেনগুপ্ত জানান, যে সংস্থা টাকা পাবে তাঁদের করা মামলার ভিত্তিতেই হাইকোর্ট সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেয়। শ্রমিকদের বাধায় তা সম্ভব হয়নি। ফিরে গিয়ে হাইকোর্টে তিনি রিপোর্ট দেবেন বলে জানিয়েছেন। বাগানের তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের নেতা বিতনা বরাইক বলেন, “পুরানো মালিক কী করেছেন জানি না। তবে নতুন মালিক ভাল ভাবেই বাগান চালাচ্ছেন। এখন বাগানের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হলে নতুন করে অনিশ্চয়তা তৈরি হবে। শ্রমিকদের ফের অনাহারে থাকতে হবে।” সিটুর শ্রমিক সংগঠনের নেতা প্রধান হেমব্রম বলেন, “বাগানের সম্পত্তি কাউকে বাজেয়াপ্ত করতে দেব না।” কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠনের নেতা মংলু প্রধান জানিয়েছেন, এ বিষয়ে রাজনীতি নেই। সব সংগঠনের শ্রমিকরাই এক হয়ে প্রতিবাদ করেছেন। জলপাইগুড়ির ডিএসপি হরিপদ শী বলেন, “শ্রমিকদের বাধার মুখে পড়েই হাইকোর্টের প্রতিনিধিরা ফিরে যাওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেন। বাগানের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে না পারলেও জলপাইগুড়ি শহরে মালিক সংস্থার এক অফিস এদিন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।” |