কংগ্রেসের ডাকা বৃহস্পতিবারের ১২ ঘন্টার বহরমপুর বন্ধে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন দফতরের পাশাপাশি এ দিন বন্ধ ছিল শহরের সমস্ত দোকানপাট। বিচ্ছিন্ন ভাবে দু-একটি চায়ের দোকান খোলা থাকলেও সেখানে ভিড় চোখে পড়েনি। এ দিন সকালে বহমরপুরে জেলা প্রশাসনিক ভবনে ঢুকতে গিয়ে বন্ধ সমর্থকদের বাধার মুখে পড়েন সরকারি কর্মীরা। এমনকী বহরমপুরের মহকুমাশাসকও প্রশাসনিক ভবনে ঢুকতে গিয়ে বাধা পান। মহকুমাশাসক অধীর বিশ্বাস বলেন, “জেলা প্রশাসনিক ভবনের কর্মীদের এদিন কাজে যোগ দিতে বাধা দেওয়া হয়। পরে অনেকে এলেও অন্যান্য দিনের তুলনায় এদিন কর্মী সংখ্যা ছিল কম।” |
বন্ধ সমর্থকেরা মিছিল করে বন্ধ করল পেট্রল পাম্প। নিজস্ব চিত্র। |
কংগ্রেস কর্মী বাপী ঘোষ গত সোমবার রাত থেকে নিখোঁজ ছিলেন। পরে বুধবার সকালে রেজিনগরের কাছে তারানগরে ভাগীরথী থেকে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার হয়। ওই খুনের প্রতিবাদে কংগ্রেস এ দিন ১২ ঘন্টার বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়। তবে কোথাও কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। মুর্শিদাবাদের পুলিশ অফিসার হুমায়ুন কবীর বলেন, “বন্ধে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর নেই। কেউ গ্রেফতারও হয়নি।” এ দিন অবশ্য ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক, রেল-সহ জরুরি বেশ কিছু পরিষেবা বন্ধের আওতার বাইরে ছিল। ফলে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে বাস চলাচল করলেও বেসরকারি কোনও বাস এ দিন বহরমপুরে ঢোকেনি। তবে দূরপাল্লার বেশ কিছু সরকারি-বেসরকারি বাস চলাচল করেছে। বাস মালিক সংগঠনের সম্পাদক তপন অধিকারি বলেন, “জাতীয় সড়ক ও রেল এদিনের বন্ধের আওতার বাইরে ছিল। ফলে রেল ও দূরপাল্লার যাত্রীদের সহায়তা দিতেই এদিন বাস চালানো হয়। তবে কোনও বাস বহরমপুর শহরে ঢোকেনি। শহরের দু-প্রান্ত থেকে এ দিন যাত্রী ওঠানামা করেছে।”
বহরমপুর বাস টার্মিনাস থেকে প্রতি দিন যে সমস্ত বাস জেলার বিভিন্ন প্রান্তে যাতায়াত করে থাকে, বন্ধের কারণে বহরমপুরে তারা ঢোকেনি। তার মধ্যে ডোমকল-করিমপুর-লালগোলা-বেলডাঙা-আমতলা রুটের বাসগুলি শহরের পূর্বপ্রান্তে পঞ্চাননতলা মোড় এবং বীরভূম-বর্ধমান-কান্দি-রঘুনাথগঞ্জ-ফরাক্কা রুটের বাসগুলি পশ্চিম প্রান্তে উত্তরপাড়া মোড়ে দাঁড়িয়ে যায়। সেখান থেকেই যাত্রী ওঠানামা করে। এ দিকে অটো-ট্রেকার এদিন পথেই নামেনি। শহরে রিকশাও চলেনি। ফলে পঞ্চাননতলা এবং উত্তরপাড়া মোড় থেকে বহরমপুরে যাতায়াত করতে কিছুটা হলেও যাত্রীদের অসুবিধার মুখে পড়তে হয়। ওই যাত্রীদের ভরসা বলতে ছিল যন্ত্রচালিত লছিমন।
জেলা কংগ্রেসের মুখপাত্র অশোক দাস বলেন, “বন্ধে স্বতস্ফূর্ত সাড়া মিলেছে। বিভিন্ন সরকারি দফতরে কর্মী হাজিরা ছিল না। সমস্ত দোকানপাটও বন্ধ ছিল। এই শহর ফের অশান্ত হয়ে উঠুক বহরমপুরের সাধারণ নাগরিকরা চান না, এদিনের সফল বন্ধে তারই প্রতিফলন হয়েছে।” জেলা কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, “বহরমপুর শহরকে ফের অশান্ত করে তুলতে খুন-সন্ত্রাস শুরু হয়েছে। পুলিশ প্রশাসনের অবিলম্বে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।” |