|
|
|
|
হচ্ছে নতুন দোকানও |
রেশন দোকানের যাবতীয় তথ্যসংগ্রহ শুরু সরকারের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
কোন জেলায় কত রেশন দোকান রয়েছে। কোন রেশন দোকানের অধীনস্থ এলাকা কত বড়। গ্রাহক সংখ্যাই বা কত। জেলায় খাদ্য দফতরের ক’টা গুদাম রয়েছে, ডিস্ট্রিবিউটরদের গুদামই বা ক’টা। এত দিন এই সব তথ্যসংগ্রহ করতে রীতিমতো বেগ পেতে হত। তবু ঠিক তথ্য পাওয়া যেত না বলেই অভিযোগ। সমস্যা চিরতরে দূর করতে রেশন সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্যের সার্বিক পঞ্জিকরণে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার। তথ্য-সংগ্রহের কাজ চলছে রাজ্য জুড়েই। সংগৃহীত তথ্য রাখা হবে কম্পিউটরে। যাতে মাউসের একটা ক্লিকেই রাজ্যের সমস্ত রেশন দোকানের তালিকা থেকে গণবন্টন ব্যবস্থা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য পাওয়া যায়। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাতেও তথ্য-সংগ্রহের কাজ চলছে। চলতি মাসের মধ্যেই কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে খাদ্য দফতরের আশা। জেলা খাদ্য নিয়ামক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “হাতের কাছে তথ্য থাকলে প্রতিটি ক্ষেত্রেই সুবিধে হয়। এত দিন তথ্যের জন্য এ-দিক সে-দিক হন্যে হয়ে ঘুরতে হত। এ বার মাউসের ক্লিকেই যাতে এক লহমায় সমস্ত তথ্য পাওয়া যায়, সেই লক্ষ্যে কাজ শুরু হয়েছে।”
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ৩ হাজার রেশন দোকান রয়েছে। তার মধ্যে ১৪০০ রেশন দোকান থেকে কেবল খাদ্যশস্য বিতরণ করা হয়। ১৬০০ রেশন দোকান থেকে খাদ্যশস্যের পাশাপাশি কেরোসিন তেলও দেওয়া হয়। কোন ব্লকে কতগুলি রেশন দোকান রয়েছে। সেই রেশন দোকানের মালিকের নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর, উপভোক্তার সংখ্যা কত। কতটা এলাকা সেই রেশন দোকানের পরিধিতে রয়েছে, রেশন ডিলার কোন ডিস্ট্রিবিউটরের কাছ থেকে খাদ্যশস্য নেন--এ রকম যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করার কাজ চলছে। এর বাইরেও জেলায় কেরোসিনের বড় ডিলার ও ডিস্ট্রিবিউটর রয়েছেন ১৭৮ জন। তাঁদের নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর, কতগুলি গুদাম রয়েছে, কোথায় কোথায় সেই গুদাম রয়েছে, গুদামে কী পরিমাণ খাদ্যশস্য মজুত রাখা যায়, গুদামগুলি ডিস্ট্রিবিউটরের নিজস্ব না ভাড়া করা---এ সব তথ্যও নথিভুক্ত করা হচ্ছে। এর বাইরে থাকবে সরকারি গুদামের তথ্যও। জেলায় কতগুলি সরকারি গুদাম রয়েছে, তার মধ্যে সরকারের নিজস্ব গুদাম ক’টি, ক’টি ভাড়া নেওয়া, কোন গুদামে কত পরিমাণ খাদ্যশস্য মজুত করা যায়--সব তথ্যই থাকবে কম্পিউটরে।
গ্রাহকদের সুবিধার্থে অন্য ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে। যে সব রেশন দোকানে কার্ডের সংখ্যা ৫ হাজারের বেশি সেই সব দোকান ভেঙে দু’টি দোকান করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। জঙ্গলমহলে ৫ হাজারেরও কম উপভোক্তা থাকলেই যাতে নতুন রেশন দোকান খোলা হয় সেই প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। যদিও এ বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি বলে খাদ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। ৫ হাজারের বেশি কার্ড রয়েছে, এ রকম ৬টি রেশন দোকানের সন্ধান মিলেছে মেদিনীপুর সদর ও শালবনি ব্লকে। এই ৬টি দোকান ভেঙে আরও ৬টি রেশন দোকান তৈরি করা হবে বলে খাদ্য দফতর জানিয়েছে। জেলা খাদ্য নিয়ামক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “নতুন ৬টি রেশন দোকান তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। যাবতীয় রিপোর্ট রাজ্য সরকারের কাছে পাঠিয়েও দেওয়া হয়েছে। লাইসেন্স দিলেই দোকান চালু হয়ে যাবে।” প্রত্যন্ত এলাকার গ্রাহকদের কথা ভেবে একটা সময় ভ্রাম্যমাণ গণবণ্টন ব্যবস্থা গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পরে একটি দোকানের অধীনে একটি অতিরিক্ত কাউন্টার খোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। সেই কাউন্টার সংশ্লিষ্ট রেশন ডিলারেরই চালানোর কথা। জঙ্গলমহলে এ রকম ১২টি অতিরিক্ত কাউন্টার চলছে। কিন্তু তাতেও সমস্যার সমাধান হচ্ছে না বলে অভিযোগ। তাই একটি দোকান ভেঙে নতুন দোকান তৈরিতে জোর দেওয়া হচ্ছে। তবে এ ক্ষেত্রেও রয়েছে সমস্যা। সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী, কোনও দোকানে ৫ হাজারের বেশি রেশন কার্ড না থাকলে তা ভাঙা যাবে না। নতুন রেশন দোকান খুলতে হলে সেখানে ন্যূনতম ৩ হাজার কার্ড থাকতে হবে। তাই জঙ্গলমহলের ক্ষেত্রে এই বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। দেড়-দু’হাজার গ্রাহক থাকলেই যাতে নতুন রেশন দোকান খোলা যায়, সেই ব্যবস্থা করার আবেদন জানানো হয়েছে। |
|
|
|
|
|