সপ্তাহখানেক আগে প্রথমে কোমায়, সেখান থেকে আরসিবি-র সৌজন্যে কোনও রকমে জেনারেল বেডে। আর দু’দিন যেতে না যেতে রোগী হাসপাতাল থেকে শুধু ছাড়াই পায়নি, একেবারে হইহই করে অফিস যাচ্ছে! আত্মীয়স্বজন তো আহ্লাদে আটখানা হবেই!
মারিনা বিচ পেরিয়ে যত অটো এগোবে ওয়ালাজা রোড এবং চিপকের দিকে, তত চোখ টানবে আহ্লাদের ছবি। আর স্টেডিয়ামে ঢুকতে না ঢুকতে ধোনি হাসছেন, রায়না হাসছেন, পোস্টারে হাসি মাইক হাসির মুখেও। মূল ফটক থেকে মাঠে যাওয়ার রাস্তায় সর্বত্র হলুদ-নীল পতাকার গর্বিত উপস্থিতি। প্রতিটি পোস্টারের তলায় ‘হুইসল পোডু’চেন্নাই সুপারকিংসের এ বারের আইপিএল অভিযানের ছবি। অথচ সপ্তাহখানেক আগে ডেকান-আরসিবি ম্যাচের দিনও ২৭ মে-র ফাইনালে মাঠ ফাঁকা থাকার সম্ভাবনা নিয়ে উত্তাল ছিল তামিলানাড়ু ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের অফিস। বৃহস্পতিবার সন্ধেয় সহবাগের দিল্লি যখন প্র্যাক্টিসের জন্য মাঠে পৌঁছচ্ছে, টিকিটের চাহিদা সামাল দিতে কর্তারা ‘ছিটকে ছ’! স্টেডিয়ামের ১২ হাজার আসন মামলার কারণে এতদিন ফাঁকা থাকত, যে জন্য ফাইনাল সরিয়ে নেওয়ার কথাও হয়েছিল। আজ জানিয়ে দেওয়া হল, মামলা মিটে গিয়ে কাল আর ফাইনালে ওই বাধা থাকছে না। অর্থাৎ আরও, আরও ‘হুইসল পোডু’! |
বেঙ্গালুরুতে মুম্বইকে উড়িয়ে দিয়ে সিএসকে শহরে পা রাখল সন্ধে নাগাদ এবং সর্বত্র ধোনির জয়-জয়কার। ২০ বলে ৫১ নট আউটের ইনিংস নিয়ে বলা হচ্ছে, ধোনির ব্যাট যখন কথা বলতে শুরু করেছে, তখন ট্রফিও হাঁটতে হাঁটতে আসবে। আইপিএল জয়ের হ্যাটট্রিক সিএসকে করে ফেললে চিপকে না ভারত অধিনায়কের আবক্ষ মূর্তি বসে যায়!
গ্রুপ লিগে দুটো সাক্ষাতে রেকর্ড ১-১। বীরুর টিম জিতেছিল কোটলায়, চিপকে মাত্র ১২ দিন আগে পাল্টা জয় ধোনির। বেন হিলফেনহসের বলে বোল্ড হয়ে সহবাগ সাফাই দিয়েছিলেন, “আনপ্লেয়েবল ডেলিভারি!” এ বারও হিলেফেনহসই হতে চলেছেন ধোনির বাজি। বীরু-ওয়ার্নারকে পাওয়ার প্লে-তে তুলে নিলে যে দিল্লিকে অত ভয়ঙ্কর লাগে না, মাহেলা জয়বর্ধনে যে অতীতের ফিনিশিং টাচ হারিয়েছেন, এই অঙ্ক স্টিভন ফ্লেমিং জানেন না, হয়?
দিল্লির সমস্যা আবার অন্য। বেঙ্গালুরুতে রস টেলরকে পরে নামানো নিয়ে প্রশ্ন আছে, প্রশ্ন পুণের উইকেটে টিমে একগাদা পেসার ঠেসে দেওয়া নিয়েও। রাতের খবর, পুণেতে কেকেআর ম্যাচে পিটুনি খাওয়া বরুণ অ্যারন বসবেন ডাগআউটে, চিপকে নেগির সঙ্গে দ্বিতীয় স্পিনার হিসেবে খেলবেন শাহবাজ নাদিম। সংশয় ছিল ইরফান পাঠানের চোট নিয়েও। আগের ম্যাচে বল ধরতে গিয়ে হাত ফেটে যাওয়া ইরফান অবশ্য হাতে স্টিচ নিয়ে বল করছেন দেখলাম। টিম ম্যানেজার জানাচ্ছেন, কালকের মরণবাঁচনের ম্যাচে খেলবেন।
গোটা টুর্নামেন্টে ভাল খেলে এসে লিগ টেবিলের ফার্স্ট বয় দিল্লি পুণেতে হোঁচট খেয়েছে। কাল দ্বিতীয় হোঁচট মানেই এ বারের মতো আইপিএল অভিযান শেষ। তা-ও খেলতে হবে ছাইয়ের গাদা থেকে উঠে আসা ধোনিদের বিরুদ্ধে, তাদের মাঠে। যেখানে রঙ বলতে ব্রাজিলের হলুদ আর ইতালির নীল। আর ক্যাচলাইন? অবশ্যই ‘হুইসল পোডু’!
হুইসল থামাতে গেলে চাই দিল্লি দাওয়াই। পারেন তো ওই একজনই। বীরেন্দ্র সহবাগ! |