কী ছিল না গত চার বছরে? কেন এই বছর অপ্রতিরোধ্য লাগছে কেকেআর-কে? ফাইনালের আগে একান্ত সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে টিমের সাফল্যের কারণগুলো খুঁজলেন প্রথম প্লে-অফে ১১ বলে ২৪ নট আউটের ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলা লক্ষ্মীরতন শুক্ল
প্র: চেন্নাইয়ের ফাইনালের টিকিটের অসম্ভব চাহিদা। লোকে ধরেই নিচ্ছে, আপনাদের প্রতিদ্বন্দ্বী ধোনিরাই হতে যাচ্ছেন। আর সে ক্ষেত্রে ওদের সামনে থাকবে ট্রফি জয়ের হ্যাটট্রিকের হাতছানি...
লক্ষ্মী: আগে ওরা ফাইনালে উঠুক, কালকের ম্যাচটা জিতুক। তার পর ওদের নিয়ে ভাবা যাবে।
প্র: চার বছর ধরে যে টিমটা কোটি কোটি টাকা খরচ করেও কিছু করতে পারছিল না, তাদের এ বছর ধারাবাহিক ভাবে ভাল খেলে যাওয়াটা ব্যখ্যা করবেন?
লক্ষ্মী: এক কথায়, টিমের মধ্যে শুরু থেকেই একটা প্যাশন ছিল। প্রত্যেকের মধ্যে ছিল এ বার আমরা একটা কিছু করে দেখাব তাগিদটা। গত চার বছরে কী হয়েছে বা কী হয়নি, সেই তুলনায় যাব না। কিন্তু এটা বলব, ক্রিকেটীয় স্কিলের পাশাপাশি এ বারে টিম অনেক বেশি মোটিভেটেড। এটা থাকলে যে কোনও খেলায় টিম ভাল করবেই।
প্র: কিন্তু মোটিভেশন তো সব টিমেরই আছে। সবাই ট্রফি জিততে চায়। কেকেআরেরটা আলাদা হচ্ছে কী ভাবে?
লক্ষ্মী: অন্যদের কথা জানি না। আমাদের টিমটা গত দু’মাসে একটা জয়েন্ট ফ্যামিলির মতো হয়ে গিয়েছে। যৌথ পরিবার যেমন হয়। সবাই মিলেমিশে একটা কমন লক্ষ্য নিয়ে থাকে। সংসারটা ভাল করার লক্ষ্য। একটা বড় কারণ গৌতম গম্ভীর। এই আইপিএলে দুর্দান্ত ক্যাপ্টেন্সি করেছে আমাদের ক্যাপ্টেন। |
প্র: অথচ ফর্মে থাকলেও সব ম্যাচ খেলেননি। গম্ভীর নিজে প্রেসকে বলেছেন, দিল্লি ম্যাচে আপনার ইনিংসটা না হলে টিম জিতত না...
লক্ষ্মী: আমি কোন ম্যাচ খেলিনি, সেটা মোটেই গুরুত্বপূর্ণ নয়। কারওই ডাগআউটে বসে থাকতে ভাল লাগে না। কিন্তু ব্রেট লি বা ব্রেন্ডন ম্যাকালামের মতো প্লেয়ারকেও যখন দেখছি ডাগআউটে বসতে, তখন আমি কোন ছার! টিম কম্বিনেশনের জন্য সবাইকেই বসতে হতে পারে। আসল কথা হল টিমটা জিতছে কি না।
প্র: তা হলে গম্ভীরই কি এই আইপিএলে সেরা অধিনায়ক?
লক্ষ্মী: নিশ্চয়ই। ব্যাটে ৬০০-র মতো রান আর কোন ক্যাপ্টেন করেছে? ক্যাপ্টেন যখন নিজের পারফরম্যান্স দিয়ে টিমকে জেতায়, যে কোনও টিম তেতে যায়। গৌতম নিজের পারফরম্যান্স দিয়ে গোটা টিমটাকে একটা অন্য মাত্রায় পৌঁছে দিয়েছে। ম্যাচের সময় মাঠে নিজের দু’শো শতাংশ দেয়। যতক্ষণ মাঠে থাকে, একটা বলের জন্যও বল থেকে চোখ সরায় না। ওর জন্যই আমাদের ট্রফিটা জেতা উচিত।
প্র: বেশ কিছু বিশেষজ্ঞ আবার বলছেন, কেকেআর আসল বাজিটা মেরেছে সুনীল নারিনকে দিয়ে। ওর চারটে ওভার বেশির ভাগ ম্যাচে তফাত গড়ে দিয়েছে। নারিন ফ্যাক্টর সাফল্যে কতটা জরুরি ছিল?
লক্ষ্মী: এটা মেনে নিতেই হবে, এই আইপিএলে নারিন সবাইকে চমকে দিয়েছে। স্পিনের বিরুদ্ধে আমার কাছে সেরা দুটো ব্যাট হল সচিন আর সৌরভ। এই দু’জনকেই এই আইপিএলে ভুগিয়েছে নারিন। দাদি নিজে তো আমাদের সঙ্গে ইডেনে খেলার পরে বলেছিল, নারিন না থাকলে জিতে যেত। নারিনকে নেটে খেলে দেখেছি, বল কোন দিকে যাবে বোঝা প্রায় দুঃসাধ্য। না লেগস্পিন, না অফস্পিন, ও ঠিক কী বল করে এখনও বুঝিনি।
প্র: পুণের ম্যাচ জেতার পর শাহরুখ কী বললেন?
লক্ষ্মী: শিশুর মতো উচ্ছ্বাস করছিল। প্রত্যেককে জড়িয়ে ধরছিল। হেরেও চার বছর ওকে আমাদের পিঠ চাপড়ে বলতে হয়েছে, ‘‘ঠিক হ্যায়, কোই বাত নেহি।” এ বার আশা করি, আর বলতে হবে না।
প্র: সেমিফাইনালে টস জেতাটা পক্ষে গিয়েছে। ট্রফি জয়ের ‘লাক’ সঙ্গে আছে মনে হচ্ছে...
লক্ষ্মী: আমরা ভাল খেলেছি, জিতেছি। ভাল খেলেছি বলেই তো আমরা লাকি। আরও একটা ম্যাচ যেন জিততে পারি। |