রবিবারে ফাইনাল নিয়ে উত্তেজনা এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, বলে বোঝানো অসম্ভব। গোটা শহরটাই যেন টেনশনে ভুগছে। চেনাশোনা যার সঙ্গে দেখা হচ্ছে, মুখে নানা প্রশ্ন। এত দূর এসে ফাইনাল জেতা যাবে তো? দিল্লি না চেন্নাই, কাকে ফাইনালে পেলে কেকেআরের সুবিধা?
ক্রিকেটে কোনও ভবিষ্যদ্বাণী চলে না জানি। কিন্তু যুক্তি বলছে, কেকেআরের আইপিএল না জেতার কোনও কারণ নেই। দুর্দান্ত অধিনায়ক, প্রয়োজনীয় আগ্রাসন, টিম স্পিরিট কোনও কিছুরই অভাব নেই নাইটদের। শুধু ফাইনালে নামার আগে গম্ভীরদের কয়েকটা জিনিস মনে করিয়ে দিতে চাইব।
চেন্নাইয়ের উইকেট কিন্তু টার্নার হবে। এক কথায়, স্পিনারদের ম্যাচ। যারা স্পিন ভাল সামলাতে পারবে, ম্যাচও তাদের। আর সে কারণেই টস জেতাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ হবে। টস জিতে প্রথমে ব্যাট করে তুলে ফেলতে হবে ১৫০-১৬০। আর তার জন্য দরকার গম্ভীরকে। আমার মনে হয়, চিপকের পিচে বিদেশিদের উপর বেশি নির্ভর করা ঠিক হবে না। কারণ, যে উইকেটে বল ঘুরবে সেখানে ম্যাকালাম বা কালিসদের থেকে বিশাল কিছু আশা করলে ডুবতে হতে পারে। দরকার ভারতীয়দের। আর সেখানে কেকেআরে ভরসার এক নম্বর লোক তো গম্ভীর। চোখের নিমেষে ওর ব্যাট থেকে পাওয়া যাচ্ছে একটা ১৬ বলে ৩২ বা আরও বেশি কিছু। ও তাড়াতাড়ি আউট হলেই কিন্তু বিপদে পড়ে যাচ্ছে নাইটদের মিডল অর্ডার। দিল্লির বিরুদ্ধে ইউসুফ-লক্ষ্মীর জুটিটা কিন্তু এত দিন পর হল। তাই বলছি, ফাইনালে গম্ভীরকে গম্ভীরের মতোই খেলতে হবে। যে ভাবে ও খেলে যাচ্ছে। ফাইনাল বলে যেন বাড়তি সতর্ক না হয়ে পড়ে গম্ভীররা। কালিস বরং শিট অ্যাঙ্করের দায়িত্বটা নিক। চেন্নাইয়ে মাইক হাসি যেটা করছে। কালিস সেটা ভাল পারবে বলেই বিশ্বাস।
মনোজ তিওয়ারিকেও কিন্তু দরকার ফাইনালে। আমি তো বলব, দেবব্রত দাসের আগে মনোজকেই পাঠানো উচিত। ফাইনাল কিন্তু অন্য জিনিস। নার্ভের ব্যাপার থাকে। টেম্পারামেন্টের প্রশ্ন আসে। মনোজ চাপটা সামলাতে পারবে। দেবব্রত আসুক, কিন্তু পরের দিকে। তিন স্পিনারের স্ট্র্যাটেজিও একদম ঠিক আছে। ফাইনালেও লাগবে। সুনীল নারিন যে ভাবে আসছে, সে ভাবেই আসুক। পাওয়ার প্লে-তে এক ওভার, মাঝে দু’টো, স্লগে একটা। আর সাকিব দেশে এ রকম উইকেটেই খেলে অভ্যস্ত। তাই ওর বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাটিংটাও কাজে আসবে।
অনেকেই বলছেন, কেকেআর এত ভাল ভাল ম্যাচ জিতছে। ফাইনালে আবার আত্মতুষ্টিতে না ভোগে। আমি কোনও লক্ষণ দেখছি না। কেকেআরকে সতর্ক হতে নিশ্চয়ই বলব। টি-টোয়েন্টি ম্যাচে একটা বাজে ওভার, একটা দুর্দান্ত রান আউট, একটা ক্যাচ মিস অনেক কিছু পাল্টে দিতে পারে। তাই সতর্ক থাকা ভাল। কিন্তু তার জন্য যেন বাড়তি ডিফেন্সিভ না হয়ে পড়ে গম্ভীররা। ও ভাবে টি-টোয়েন্টি হয় না। দুই প্রতিপক্ষের মধ্যে দিল্লি উঠলে নাইটদের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে। দিল্লির তেমন ভাল স্পিনার নেই। তা ছাড়া দিল্লি এত দিন ভাল উইকেটে খেলে জিতেছে। নাইটদের মতো খারাপ উইকেটে খেলে নয়। বরং ধোনির টিম উঠলে লড়াইটা জমবে। ওদের ভাল স্পিনার আছে। আর আছে ধোনির কপাল। যা অবিশ্বাস্য বললেও কম বলা হয়!
তবু বলব, ধোনিদেরও সেই ধারাবাহিকতাটা নেই। কেকেআরের যা আছে। যে-ই উঠুক, সব মিলিয়ে তাই ‘অ্যাডভান্টেজ’ কেকেআর বলতেই হচ্ছে। |