|
|
|
|
গম বিলিতে দুর্নীতি, সিপিএম প্রধান গ্রেফতার নারায়ণগড়ে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
ত্রাণের গম বিলিতে দুর্নীতির অভিযোগে সিপিএমের এক পঞ্চায়েত প্রধানকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ঘটনাটি রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের নির্বাচনী এলাকা নারায়ণগড়ের। বৃহস্পতিবার ধৃত পঞ্চায়েত প্রধান মুকুল ভুঁইয়াকে মেদিনীপুর আদালতে হাজির করানো হলে ১৪ দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় রাজনৈতিক চাপানউতোর ও শুরু হয়েছে। তৃণমূলের অভিযোগ, এ ভাবেই গরিব মানুষের জন্য বরাদ্দ খাদ্যশস্য নিয়ে দুর্নীতি করে এসেছে সিপিএম পরিচালিত অধিকাংশ পঞ্চায়েত। আর সিপিএমের বক্তব্য, ওই প্রধানকে মিথ্যে মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে।
নারায়ণগড় গ্রাম পঞ্চায়েতে ত্রাণের (জেনারেল রিলিফ) গম পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু প্রধান তালিকায় থাকা সব গরিব মানুষকে তা বিলি করেননি। অথচ ব্লক প্রশাসনকে জানিয়েছিলেন, ত্রাণের গম বিলি হয়ে গিয়েছে। এই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় মোট ৫৪ জন উপভোক্তা রয়েছেন, যাঁরা ত্রাণের খাদ্যদ্রব্য পেতে পারেন। জানা গিয়েছে, ২০১১ সাল থেকে ৩ দফায় এখানে ১৩ মাসের ত্রাণের গম এসেছিল। অভিযোগ, বরাদ্দ এই গম গরিব মানুষকে না-দিয়ে খোলা বাজারে বিক্রি করা হয়েছে। বুধবার এই অভিযোগ তুলে প্রধান মুকুল ভুঁইয়াকে ঘেরাও করেন স্থানীয় তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা। স্থানীয় সূত্রে খবর, লক্ষ্মী মাইতি নামে এক গ্রামবাসী নারায়ণগড়ের বিডিও কল্যাণ দাসের কাছে অভিযোগ জানান। তাঁর বক্তব্য, প্রাপক-তালিকায় নাম থাকলেও তাঁকে গম দেওয়া হয়নি। এ ক্ষেত্রে যদি মাস্টার রোল তৈরি হয়ে থাকে, তাহলে তা ভুয়ো। কেন তাঁকে গম দেওয়া হচ্ছে না, পঞ্চায়েতের কাছে তার সদুত্তরও মেলেনি। |
|
ধৃত গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান |
অভিযোগ পেয়েই নড়েচড়ে বসেন বিডিও। কয়েকজন আধিকারিককে তিনি তদন্তে পাঠান। প্রাথমিক তদন্তে দেখা যায়, তালিকায় নাম থাকা অনেকেই ত্রাণের গম পাননি। মাস্টার রোলও তৈরি করা হয়নি। এর পরই ব্লক প্রশাসন নারায়ণগড় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। বুধবার রাতে ওই পঞ্চায়েত প্রধানকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মুকুলবাবুর বাড়ি বাঁধগোড়া গ্রামে। তিনি সিপিএমের লোকাল কমিটির সদস্য। পুলিশ জানিয়েছে, নির্দিষ্ট অভিযোগেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা প্রাক্তন মন্ত্রী সূর্যকান্ত মিশ্রের নির্বাচনী এলাকার এক সিপিএম প্রধান গ্রেফতার হওয়ায় জেলার রাজনৈতিক মহলেও শোরগোল পড়েছে। সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য ভাস্কর দত্ত অবশ্য বলেন, “একটি পরিকল্পিত ঘটনা। গম বিলি নিয়ে মিথ্যে মামলা সাজানো হয়েছে।” তবে স্থানীয় এক সিপিএম নেতা মানছেন, “মাস্টার রোল তৈরি করেই ওই গম বিলি করা উচিত ছিল।” নারায়ণগড়েরই অন্য একটি গ্রাম পঞ্চায়েতের সিপিএম প্রধানের বিরুদ্ধেও পুলিশের কাছে একই অভিযোগ জমা পড়েছে। গ্রামের গরিব মানুষের জন্য আসা ত্রাণের গম ‘আত্মসাৎ’ করেছেন, এই অভিযোগে গত ১৬ মে নারায়ণগড়ের তুতরাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বিমল ভঞ্জকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল কর্মী- সমর্থকেরা। ওই গম কোথায় গেল, তার হিসেব চাওয়া হয়। বৃহস্পতিবার ওই পঞ্চায়েত প্রধানের নামে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছে ব্লক প্রশাসন। এই এলাকাটি বেলদা থানার অন্তর্গত। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে। |
|
|
|
|
|