সামনে সেবক স্টেশন। সিগন্যালে দাঁড়িয়ে নিউ জলপাইগুড়ি থেকে আলিপুরদুয়ারগামী প্যাসেঞ্জার ট্রেন। দু’দিকে মহানন্দা অভয়ারণ্যের জঙ্গল। হঠাৎ কামরার মেঝের দিকে তাকিয়েই এক যাত্রীর চক্ষু চড়কগাছ! ফণা তুলে বসে অতিকায় শঙ্খচূড়! প্রথমে বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না কেউ। মুহূর্তেই ঘোর ভাঙে। কামরা জুড়ে আতঙ্কিত যাত্রীদের হইচই, ছুটোছুটি। শেষমেশ বনকর্মীরা পৌঁছলে ধড়ে প্রাণ ফেরে যাত্রীদের। তাঁরাই উদ্ধার করেন শঙ্খচূড়টিকে। ততক্ষণে সেটি আশ্রয় নিয়েছে কামরার শৌচাগারে। প্রায় ১২ ফুট লম্বা সাপটিকে বনকর্মীরা উদ্ধার করে জঙ্গলে ছাড়লে হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন যাত্রীরা।
বৃহস্পতিবার সেবকের কাছে ১০ মাইল এলাকায় প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে এই অভিজ্ঞতা হল একদল যাত্রীর। রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ সেবক স্টেশনের খানিক আগে সিগন্যাল না পেয়ে জঙ্গলের মাঝে ট্রেনটি দাঁড়িয়ে ছিল। তখনই এই ঘটনা। জঙ্গলে নামতে প্রথমটায় ইতস্তত করলেও শঙ্খচূড়ের ফণা দেখেই হুড়মুড়িয়ে অন্ধকারেই ট্রেন থেকে নেমে পড়েন অনেকে। চিৎকার-চেঁচামেচিতে ছুটে আসেন অন্য কামরার যাত্রীরাও। ওই কামরার পরেই ছিল গার্ডের কামরা। আসেন গার্ড এবং রেলকর্মীরাও। খবর যায় ডিআরএমের দফতরে। সেখান থেকে বন দফতরে। মহানন্দা ওয়াইল্ড লাইফ স্কোয়াডের রেঞ্জ অফিসার কাঞ্চন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের কর্মীরা গিয়ে সাপটিকে ট্রেন থেকে বার করে জঙ্গলে ছেড়ে দেন। প্রায় ১২ ফুটের ওই শঙ্খচূড়টি কী ভাবে ট্রেনে উঠল তা পরিষ্কার নয়। তবে জঙ্গলের মধ্যে ট্রেনটি কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিল। ওই মাপের শঙ্খচূড় প্রায় ৪ ফুট উঁচু ফণা তুলতে পারে। হয়তো দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেনে সাপটি নিজেই উঠে গিয়েছিল।”
রাত ৯টা নাগাদ ফের ট্রেন ছাড়ে। যাত্রীদের অভিযোগ, সেবক স্টেশন থেকে ট্রেনটি ছাড়তে দেরি হওয়ায় তারা স্টেশন ম্যানেজারের কাছে খোঁজ নিতে যান। সে সময় আরপিএফ যাত্রীদের একাংশের উপরে লাঠিচার্জ করে। ওই ক্ষোভে রাত ১০টা নাগাদ ওদলাবাড়িতে ট্রেন পৌঁছলে নতুন করে বিক্ষোভ হয়। |