রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে সনিয়া গাঁধী কী তাস খেলেন, তা দেখার অপেক্ষায় বিজেপি। দলের কৌশল, শুধু মাত্র গাঁধী পরিবারের প্রতি আনুগত্য দেখিয়ে কেউ যাতে রাইসিনা হিলসে পৌঁছে না যান, সে জন্য তলে-তলে অ-কংগ্রেসি দলগুলিকেও একজোট করার চেষ্টা চালানো। দলের লক্ষ্য হল, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের মাধ্যমে এনডিএ-র ভিত্তিটা আরও বড় করা এবং লোকসভা ভোটের এক দফা প্রস্তুতি সেরে ফেলা। এর জন্য বিভিন্ন আঞ্চলিক দলকেও পাশে টানার চেষ্টা করছে বিজেপি।
আজ বিজেপি কর্মসমিতির বৈঠকে দলের কৌশল ব্যাখ্যা করে সভাপতি নিতিন গডকড়ী বলেন, “সংবিধানকে রক্ষা করতে পারবেন এমন যোগ্য ব্যক্তিকেই রাষ্ট্রপতি করার জন্য অ-কংগ্রেসি দলগুলির সঙ্গে ঐকমত্য রচনার চেষ্টা করছে বিজেপি। কিন্তু কংগ্রেস-প্রধান চান, সংবিধানের পরিবর্তে গাঁধী পরিবারের প্রতি কেউ আনুগত্য দেখালে তাঁকেই রাষ্ট্রপতি করতে। এতে রাষ্ট্রপতি পদের অবমূল্যায়ন হয়। কোনও অবস্থাতেই এই প্রচেষ্টা সফল হতে দেব না।”
বিজেপির বক্তব্য, ইউপিএ-র সহযোগী দলের নেতা পি এ সাংমাকে সমর্থন জানিয়েছেন নবীন পট্টনায়ক, জয়ললিতা। দু’জনেই এখন বিজেপির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বজায় রাখছেন। রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে বিজেপি এখনই তাদের তাস দেখাতে চাইছে না। বিশেষ করে সনিয়া যখন এখনও রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থীর নাম কথা ঘোষণা করেননি। বিজেপি অ-কংগ্রেসি দলগুলির সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছেন। ‘সাম্প্রদায়িক’ তকমা লাগিয়ে তাদের প্রস্তাবিত নাম নিয়ে বাকিদের যাতে আপত্তি না হয়, সে জন্য নবীন-জয়ললিতার মতো ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ ভাবমূর্তির নেতাদের দিয়ে ঐকমত্যের চেষ্টা করছে বিজেপি। মমতার মতো ইউপিএ-র একাধিক শরিক, যাঁদের সঙ্গে কংগ্রেসের সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে, তাঁদের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছে।
বিজেপির এক নেতার বক্তব্য, দলের এই সব পদক্ষেপের অর্থ এই নয় যে সাংমাকেই শেষ পর্যন্ত সমর্থন করবে বিজেপি। কিন্তু নবীন-জয়ললিতার সমর্থনের মাধ্যমে তারা জল মাপার কাজ করছে। অরুণ জেটলি বিভিন্ন দলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। নবীন-জয়ললিতা ছাড়াও চন্দ্রবাবু নায়ডু, বামেরা এমনকী কংগ্রেসের একাধিক শরিক দলের সঙ্গেও আলোচনা চালাচ্ছেন। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে যাঁর নামে ঐকমত্য রচনা করা যাবে ও কংগ্রেসের প্রার্থীকে হারানো যাবে, তাঁকেই সমর্থন করবে বিজেপি। গডকড়ী বলেন, “এনডিএ-র আমলে অনেক আঞ্চলিক দলই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। বিভিন্ন দলের মধ্যে মতপার্থক্য থাকবেই। কিন্তু আঞ্চলিক দলগুলিকে সঙ্গে নিয়ে অভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে বিজেপিই পারে দিল্লির মসনদে বিকল্প সরকার দিতে।” |