রাজেশ ও নূপুর তলোয়ারের বিরুদ্ধে মেয়ে আরুষিকে খুনের মামলা শুরুর অনুমতি দিল এখানকার এক স্থানীয় আদালত। তলোয়ার দম্পতির বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ নম্বর ধারায় খুনের চার্জ গঠন করা হবে বলে আজ জানিয়ে দিয়েছে আদালত। আগামী কাল তা করা হবে। অতিরিক্ত জেলা বিচারক শ্যামলাল তাঁর নির্দেশে জানান, নূপুর ও রাজেশের বিরুদ্ধে খুনের মামলা শুরুর জন্য প্রাথমিক ভাবে যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। এ দিনই ছিল আরুষির ১৯তম জন্মদিন। শুধু খুনই নয়, প্রমাণ লোপাট বা ভুল তথ্য দেওয়ার (২০১ নম্বর ধারা) অভিযোগেও চার্জ গঠন করা হবে তলোয়ার দম্পতির বিরুদ্ধে। সেই সঙ্গেই সিবিআইয়ের আইনজীবী আর কে সাইনি জানান, নয়ডা থানায় বিভ্রান্তিকর এফআইআর দায়ের করার অভিযোগও রয়েছে রাজেশের বিরুদ্ধে। চার্জ গঠন করা হবে সেই ক্ষেত্রেও।
২০০৮-এর ১৫ মে রাতে নয়ডার জলবায়ু বিহারের ফ্ল্যাটে খুন হয় নয়ডার কিশোরী আরুষি তলোয়ার। দু’দিন পরে বাড়ির ছাদ থেকে উদ্ধার হয় তলোয়ারদের পরিচারক হেমরাজের দেহ। জোড়া খুনের মামলায় আরুষির বাবা-মা রাজেশ ও নূপুরই মূল অভিযুক্ত। এ বিষয়ে সিবিআই-এর যুক্তি আদালত গ্রহণ করেছে বলে সাইনি আজ জানান।
আরুশির বাবা-মাকে প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে তুলে ধরতে কী কী যুক্তি দিয়েছিল সিবিআই? সিবিআইয়ের যুক্তি, প্রথমত, ঘটনার দিন যে চার জন বাড়িতে ছিল, তাঁদের মধ্যে রাজেশ ও নূপুর ছাড়া বাকি দু’জন খুন হয়। তাই সে রাতে কী হয়েছিল, তা তলোয়ার দম্পতিই বলতে পারবেন। কিন্তু তাঁরা সেটা না করে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করেছেন। খুনের পর দিন আরুষির ঘর যে ধুয়ে মুছে সাফ করা হয়, তা স্বীকার করেছে পুলিশও। দ্বিতীয়ত, তলোয়ারদের আইনজীবীর দাবি, যারা আরুষিকে হত্যা করে, সেই দুষ্কৃতীদের বাড়িতে ঢুকিয়েছিল হেমরাজই। কিন্তু সে দাবি সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা উড়িয়ে দেন। সে রাতে বাড়িতে অন্য কারও প্রবেশের চিহ্নও সিবিআই পায়নি বলে আদালতকে জানানো হয়। তৃতীয়ত, গোয়েন্দারা বলেছেন, যদি কোনও বাবা-মা দেখেন, তাঁদের মেয়ে খুন হয়েছে, তখন স্বাভাবিক ভাবেই তাকে তাঁরা জড়িয়ে ধরবেন। সে ক্ষেত্রে বাবা-মায়ের পোশাকে রক্তের দাগ থাকাটা স্বাভাবিক। কিন্তু খুনের পর দিন রাজেশ ও নূপুরের পোশাক ছিল পরিষ্কার। তাঁরা এত পরিষ্কার পোশাক পরে কী ভাবে ঘোরাফেরা করছিলেন, সে প্রশ্ন তোলে সিবিআই। চতুর্থত, আরুষি ও হেমরাজের ঘাড়ের আঘাত অস্ত্রোপচারের সরঞ্জাম থেকে হয়েছিল বলে আদালতকে জানায় সিবিআই। যে হেতু তলোয়ার দম্পতি ডাক্তার, সে ক্ষেত্রে খুনে তাঁদের হাত আছে বলে দাবি সিবিআইয়ের। |