গঙ্গার হাওয়ায় গভীর রাত পর্যন্ত অবাধে ঘুরে বেড়ানোর দিন ফিরছে কলকাতায়। শহরের নাগরিক ও পর্যটকদের জন্য এই নতুন উপহারের কথা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই আলোয় সাজল শহরের ঐতিহ্যশালী গঙ্গা তীরবর্তী প্রিন্সেপ ঘাট থেকে বাজে কদমতলা ঘাট। সাড়ে ছ’কোটি টাকায় ঘাটগুলি বাঁধানো হয়েছে। মনোরম পরিবেশে ঘুরে বেড়ানোর সরণি ও বিশ্রামের জায়গা। আবহে রবীন্দ্রসঙ্গীত। জাজেস ঘাটের কাছে গঙ্গাতীরের ‘পুনরুজ্জীবন’ উপলক্ষে অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বললেন, “রাত ১২টা অবধি সকলের জন্য এই ঘাটগুলি খোলা থাকবে। সপরিবার আসুন। মুক্ত হাওয়ার স্বাদ নিন।” পুর-তত্ত্বাবধানে গঙ্গার এই অংশটুকু সাজিয়েছে রেলের সহযোগী সংস্থা রাইট্স। |
আম-নাগরিকদের সুরক্ষার দিকটা দেখতে এ দিন মঞ্চ থেকেই পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। বহু বছর আগে সন্ধ্যার ইডেন গার্ডেন্সে সেনাবাহিনীর ব্যান্ডের বাজনা শুনতে ভিড় হত। সেই স্মৃতি ফিরিয়ে আনতে শনি-রবির সন্ধ্যায় প্রিন্সেপ ঘাটে বসবে কলকাতা পুলিশের ব্যান্ডের আসর।
রাজ্যে ক্ষমতায় আসার দু’বছর আগে গত পুরভোটের সময় থেকেই কলকাতাকে ‘লন্ডন’ বানানোর ডাক দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। গঙ্গার ঘাটের এই অংশ সাজানোর প্রকল্প সেই লক্ষ্যপূরণের পথেই একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে তুলে ধরছে সরকার। সুদৃশ্য গঙ্গাতীরের সঙ্গে ত্রিফলা আলো ও নীল-সাদা সাজ সবটাই পরিবর্তনের পরে নতুন কলকাতার ‘ব্র্যান্ড’ বা ‘মোটিফ’ হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে। কেন? কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রেরা মনে করিয়ে দিলেন, দুনিয়ার সর্বত্র নদীর ধারে গড়ে ওঠা শহর মাত্রেই পর্যটনের বিপুল সম্ভাবনা। |
মমতাও বলছিলেন, “লন্ডনে টেমসের ধারে অনেকটা খোলা জায়গা। এখানে গঙ্গাপাড়ে কিন্তু খানিকটা করে সেনা বা বন্দর কর্তৃপক্ষের এলাকা। সকলের সাহায্য নিয়ে দখলদার (এনক্রোচমেন্ট) হটিয়ে গঙ্গাপাড় সাজাতে হবে। আপাতত সেজে ওঠা অংশটুকু ছাড়াও বাগবাজার বা কাশীপুর সর্বমঙ্গলা ঘাট ও বরাহনগরে রতনবাবুর ঘাট অবধি ‘ওয়াকওয়ে’ গড়তে চায় রাজ্য। মমতার ইচ্ছা, দক্ষিণেশ্বর ও ত্রিবেণী অবধি সেজে উঠুক। তাঁর কথায়, “লন্ডন যা পারে, কলকাতা তা পারবে না কেন?” দখল হটাতে উপস্থিত সেনাকর্তাদের মাধ্যমে প্রতিরক্ষা মন্ত্রককেও এ দিন অনুরোধ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। |