এমএএমসি
সিআইএসএফ প্রত্যাহার নিয়ে দোষ তৃণমূলকেই
কেন্দ্রীয় সরকারের শরিক হওয়া সত্ত্বেও এমএএমসি থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রত্যাহার আটকাতে সরব হয়নি তৃণমূল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে এমনই অভিযোগ তুললেন বর্ধমান-দুর্গাপুরের সিপিএম সাংসদ সাইদুল হক।
এমএএমসি থেকে সিআইএসএফ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বুধবারই জাতীয় সড়ক অবরোধ করে আইএনটিইউসি, আইএনটিটিইউসি এবং এআইটিইউসি। তবে এই কর্মসূচির নেতৃত্বে ছিল মূলত আইএনটিইউসি এবং আইএনটিটিইউসি। পুরভোটের মুখে এমএএমসি নিয়ে সরব হয়েছে কংগ্রেস ও তৃণমূলের এই দুই শ্রমিক সংগঠন। আগের দিনের কর্মসূচিতে সিপিএমের শ্রমিক সংগঠনের দেখা মেলেনি। তবে বৃহস্পতিবারই এ নিয়ে আসরে নামল সিপিএম। সিআইএসএফ প্রহরা রাখার ব্যাপারে তৃণমূলের তরফে কেন্দ্রীয় সরকারের উপরে কোনও চাপই দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ তুলল তারা।
১৯৬৫ সালে চালু হয় এমএএমসি। খনির কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন যন্ত্রপাতি তৈরি হত এই কারখানায়। ১৯৯২ সালে তা বিআইএফআর-এ চলে যায়। ২০০১ সালের ৫ অক্টোবর কারখানা বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়। ২০১০ সালের ১১ জুন তিন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা কোল ইন্ডিয়া লিমিটেড (সিআইএল), দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন (ডিভিসি) ও ভারত আর্থ মুভার্স লিমিটেডের (বিইএমএল) কনসর্টিয়াম মিলিত ভাবে হাইকোর্টে নিলামে সর্বোচ্চ দর দিয়ে কারখানার দায়িত্ব পায়। অগস্টে কনসর্টিয়ামের হাতে কারখানার চাবি তুলে দেন লিক্যুইডেটর। এর পরেই কারখানা থেকে ধাপে ধাপে সিআইএসএফের পাহারা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানায় কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু শ্রমিক সংগঠনগুলির চাপে তা এখনও কার্যকর করতে পারেনি তারা। আজ, ২৫ মে সিআইএসএফ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। তার বিরোধিতা করে বুধবার সকালে যৌথ ভাবে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে আইএনটিইউসি, আইএনটিটিইউসি এবং এআইটিইউসি। তাদের অভিযোগ, সিআইএসএফ চলে গেলে দেদার চুরি শুরু হয়ে যাবে কারখানায়। তখন এই কারখানা আদৌ আর চালু হবে কি না তা নিয়ে সংশয় দেখা দেবে।
গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে দুর্গাপুরে এসে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য আশ্বাস দেন, এমএএমসি শীঘ্রই চালু হবে। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে তা হয়নি। দুর্গাপুরে বিধানসভা ভোটের প্রচারে বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল। রাজ্যে কংগ্রেস-তৃণমূল জোট সরকার ক্ষমতায় আসার কয়েক মাস পরে নতুন শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, দ্রুত কারখানাটি চালু হয়ে যাবে। যদিও তিন সংস্থার কনসর্টিয়াম কারখানার দায়িত্ব নেওয়ার পরে দু’বছর পেরিয়ে গেলেও তা এখনও চালু হয়নি। এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারের জোট শরিক তৃণমূলের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সিটু।
সিটু নেতা বিনয়েন্দ্রকিশোর চক্রবর্তীর অভিযোগ, “কেন্দ্রীয় সরকার বা তার শরিক দল, কোনও তরফেই এমএএমসি খোলার কোনও স্পষ্ট উদ্যোগ এখনও চোখে পড়েনি।” সিপিএম সাংসদ সইদুল হকের দাবি, “বামফ্রন্ট সরকারের উদ্যোগেই এমএএমসি কারখানা খোলার ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকার তিন কেন্দ্রীয় সংস্থার কনসর্টিয়াম গড়ে। ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের জন্য কারখানা খোলার উদ্যোগ সাময়িক থমকে যায়। কিন্তু রাজ্যের নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিষয়টি একটুও এগোয়নি।”
এমএএমসি-র আইএনটিটিইউসি নেতা শঙ্করলাল চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, “সিআইএসএফ রাখার জন্য আন্দোলনের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আমরা বারবারই দাবি জানিয়েছে। এখনও সেই আন্দোলন চলছে। ইতিমধ্যে রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী বিইএমএলের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। কারখানা খুলে গেলে অনেক সমস্যাই মিটে যাবে বলে আশা করি।”
ভোট এলেই প্রচারে উঠে আসে কারখানার কথা। আশায় বুক বাঁধেন শ্রমিক-কর্মীরা। ভোট ফুরোলেই আলোচনা শেষ। কবে আবার ভোঁ শোনা যাবে, অপেক্ষাতেই থাকে এমএএমসি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.