অস্ত্রোপচারের পর স্তন ক্যানসারের যন্ত্রণা থেকে কিছুটা মুক্তি পেতে না পেতেই কেমোথেরাপির যন্ত্রণায় ভুগতে হয় বহু মহিলাকে। কারণ স্তন ক্যানসারের ভয়াবহতা ঠিক কতটা, আদৌ তাঁদের কেমোথেরাপির প্রয়োজন রয়েছে কি না তা নিশ্চিত করে বোঝার উপায় নেই। এই ‘অপ্রয়োজনীয়’ কেমোথেরাপির হাত থেকে মুক্তির উপায় খুঁজে পেয়েছেন বলে দাবি করলেন লন্ডনের রয়্যাল মার্সডেন হাসপাতালের বিজ্ঞানীরা।
বিজ্ঞানীদের দাবি, ‘আইসিএইচ৪’ পরীক্ষার মাধ্যমে ধরা যাবে স্তন ক্যানসারে আক্রান্তের অস্ত্রোপচারের পর কেমোথেরাপি প্রয়োজন কি না। ব্রিটিশ পত্রিকা ‘ক্যানসারে’ গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে।
স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত অধিকাংশ মহিলাকেই অস্ত্রোপচারের পর কেমোথেরাপি নিতে হয়, যাতে ওই রোগ আর ফিরে না আসে। বিজ্ঞানীদের দাবি, শুধু ব্রিটেনেই প্রতি বছর চার থেকে পাঁচ হাজার মহিলাকে প্রয়োজন না থাকলেও কেমোথেরাপি নিতে হয়। যেখানে তাঁদের স্তন ক্যানসার ফিরে আসার আশঙ্কা একেবারেই নেই। ফলে অযথা দুর্বলতা, মাথা ঘোরা, বমি ভাব ও চুল পড়ার মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় কষ্ট পান তাঁরা। কেমোথেরাপি নেওয়ায় বন্ধ্যাও হয়ে যান অনেকে।
রয়্যাল মার্সডেনের বিজ্ঞানীদের দাবি, টিউমার কোষগুলোয় ইস্ট্রোজেন, প্রজেস্টেরন, হার২ এবং কেআই৬৭ প্রোটিন বিপদসীমার উপরে থাকলে তা ‘আইসিএইচ৪’ পরীক্ষায় ধরা যাবে। এই সব প্রোটিন বেশি থাকার অর্থ, স্তন ক্যানসারের ভয়াবহতা ভালই। অর্থাৎ কেমোথেরাপির অবশ্য প্রয়োজন। আর ওই সব প্রোটিন কম থাকলে কেমোথেরাপির দরকার নেই। প্রধান গবেষক অধ্যাপক মিচ ডসেট জানান, ‘আইসিএইচ৪’ পরীক্ষা মোটেই জটিল কিছু নয়। খরচ ১০৫০০ টাকা। এতে কেমোথেরাপির খরচা ও মারাত্মক কষ্ট, দু’য়ের থেকেই রক্ষা পাবেন অনেকে। ডসেটের আশা, এ বছরের শেষেই ব্রিটেনের বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এই পরীক্ষা চালু হয়ে যাবে। ‘আইসিএইচ৪’-কে ব্যবহারের আগে এখন শেষ মুহূর্তের গবেষণায় ব্যস্ত ব্রিটেনের ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর হেল্থ অ্যান্ড ক্লিনিক্যাল এক্সেলেনস’। |