|
|
|
|
ধূপগুড়িতে জোট-সঙ্গীর সমালোচনায় গৌতম-শুভেন্দু |
নিলয় দাস • ধূপগুড়ি |
আলাদাভাবে কংগ্রেস লড়াইয়ে নামায় আসন্ন পুরভোটে সিপিএম যাতে ‘অক্সিজেন’ না-পায় তা নিশ্চিত করতে সাধারণ মানুষ জোটবদ্ধ বলে দাবি করলেন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের প্রদেশ সভাপতি তথা তমলুকের সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী। বুধবার ধূপগুড়ি পুরভোটের প্রচারে উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়ে ওই বার্তা দিয়েছেন তৃণমূল সংসাদ। তিনি বলেন, “কংগ্রেসের স্থানীয় নেতারা অনেকে চাইলেও প্রদেশ নেতাদের একাংশের জন্য পুরভোটে ধূপগুড়ি সহ কয়েকটি এলাকায় জোট হয়নি। কিন্তু, জোট না-হলেও মানুষ পরিবর্তনের পক্ষেই রয়েছেন। গত বিধানসভা ভোটে পর্যুদস্ত সিপিএম যাতে অক্সিজেন না-পায় তা সাধারণ মানুষের জোটই নিশ্চিত করবে। মানুষের সেই জোটের জন্যই আমরা ধূপগুড়িতেও জয়ের ব্যাপারে পূর্ণমাত্রায় আশাবাদী।” পাশাপাশি, হলদিয়া, পাঁশকুড়াতেও তাঁরা জিতবেন বলে দাবি করেছেন তিনি। ওই সভায় উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবও কংগ্রেসের নেতাদের একাংশের সমালোচনায় সরব হন। গৌতমবাবুর দাবি, “গত বিধানসভা ভোটের ফলাফল থেকে স্পষ্ট, ধূপগুড়ি পুর এলাকার মানুষ বামেদের প্রত্যাখান করেছেন। তারই ধারাবাহিকতা পুরভোটে মানুষ বজায় রাখবেন।” |
|
ধূপগুড়িতে গৌতম দেব, হিতেন বর্মন ও শুভেন্দু অধিকারী। ছবি: রাজকুমার মোদক। |
ধূপগুড়িতে জোট না-হওয়ার ‘দায়’ তৃণমূল কংগ্রেসের উপরে চাপিয়ে দিয়েছে জলপাইগুড়ি জেলা কংগ্রেস। জলপাইগুড়ি জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহন বসুর দাবি, “কংগ্রেস জোট চেয়েছিল। কিন্তু, তৃণমূলের আভ্যন্তরীণ কারণে জোট হয়নি। তাতে সিপিএম কিছুটা সুবিধা পেলেও পেতে পারে। এখানে কংগ্রেসের কোনও দোষ নেই। সেটা মানুষের কাছেও স্পষ্ট বলে আমরা মনে করি।” এ দিন দুপুরে শিলিগুড়ি পৌঁছে তৃণমূলের তমলুকের সাংসদ প্রথমে বাগডোগরায় দলীয় সভায় যোগ দেন। সেখানে তিনি কংগ্রেস নেতাদের একাংশের সমালোচনা করলেও জোট রক্ষার জন্য তাঁদের কাছে আর্জি জানান। তৃণমূল সাংসদের বার্তা, “রাজ্যে ক্ষমতা হারিয়ে মৃতপ্রায় সিপিএম। এই মুহূর্তে আমাদের জোট শরিক হয়েও যাঁরা রাজ্য সরকারের সমালোচনা করছে, তাঁদের বলছি, এ ভাবে সিপিএমকে অক্সিজেন জোগানোর চেষ্টা করবেন না। আমাদের জোট আছে। আপনারাও থাকুন। মানুষকে বোঝান সিপিএম, বিজেপিতে যাবেন না। আসুন সবাই এক সঙ্গে মিলে লড়াই করি, যাতে আগামী ১০০ বছরেও সিপিএম ফিরে না আসতে পারে।” সম্প্রতি বাগডোগরা, নকশালবাড়িতে সভা করে কংগ্রেস নেত্রী দীপা দাশমুন্সি, প্রদীপ ভট্টাচার্যরা তৃণমূল কংগ্রেস ভাঙাতে সচেষ্ট বলে অভিযোগ করেন। রাজ্য সরকারের বিভিন্ন কাজের সমালোচনা করেন। শুভেন্দুবাবুর বক্তব্য, “কেন্দ্র সরকারও কোনও ছোট বিষয় নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা করে। কুৎসা রটিয়ে লাভ নেই। এই ৬টি পুরসভার ভোটেই মানুষ বুঝিয়ে দেবেন কুৎসা শেষ কথা নয়।” সেই সঙ্গে শিলিগুড়িতে পুরভোটের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে শুভেন্দুবাবুর মন্তব্য, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি মাথায় করে, কাঁধে তৃণমূলের পতাকা নিয়ে শিলিগুড়িতে কংগ্রেস প্রার্থীরা জিতেছেন। আমরাও প্রচার করেছি। কিছু নেতা এখন শিলিগুড়ি পুরসভায় দাদাগিরি দেখাচ্ছেন। তাদের বলব পদত্যাগ করে নিজেরা একা দাঁড়িয়ে জিতে দেখান।” এর পরেই জলপাইগুড়িতে আর্ট গ্যালারিতে তৃণমূল যুব কংগ্রেসের কর্মী সমাবেশে যোগ দেন তৃণমূল সাংসদ। সেখানে সবার পরে তিনি বলেন, “প্রদেশ কংগ্রেসে মার্কসবাদী কমিউনিস্ট পার্টির বন্ধু নেতারা আছেন। যাঁরা ২০১০ সালেও কলকাতা কর্পোরেশন কিংবা রাজ্যের ৮১ টা পুরসভায় জোট করতে দেননি। তারাই জোট ভেঙেছেন। মনে রাখা দরকার, মানুষ কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষেই তখন রায় দিয়েছেন।”
|
(সহ প্রতিবেদন: সৌমিত্র কুণ্ডু, অনির্বাণ রায়) |
|
|
|
|
|