প্রতিবেশী যুবকের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসের অভিযোগ করেছিলেন বছর আঠারোর এক তরুণী। তাও মাস দুয়েক আগে। গাইঘাটার ভাদুরিয়ার ওই ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত যুবক পলাতক। এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে তার পরিবারের সদস্যেরাও। গাইঘাটা থানার পুলিশ জানায়, অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
কিন্তু এত কিছুর পরেও সন্তান নষ্ট করার কথা একবারও ভাবেননি ওই তরুণী। পাশে পেয়েছেন বাবা-মাকে। সোমবার সকালে বাড়িতে পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছেন ওই তরুণী। বাবা-মা দু’জনই দিনমজুরি করেন। অভাবের সংসারে সন্তানকে মানুষ করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ তিনি। ওই তরুণীর কথায়, “স্বীকৃতির জন্য আইনি পথে লড়াই চলবে। শেষ পর্যন্ত কিছুই না হলে নিজের জীবন দিয়ে ছেলেকে মানুষ করব। লেখাপড়া শেখাব। মায়ের পরিচয়েই বড় হবে সে।”
পুলিশ ও বাসিন্দারা জানান, বছর কয়েক আগে প্রতিবেশী যুবকের সঙ্গে পরিচয় হয় ওই তরুণীর। ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। অভিযোগ, ওই যুবক বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ওই তরুণীর সঙ্গে সহবাস করে। অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন ওই তরুণী। বিষয়টি জানাজানি হলে তরুণীর পরিবার থেকে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়। সালিশি সভা ডাকেন গ্রামের মাতব্বরেরা। কিন্তু অভিযুক্ত যুবক ঘটনার কথা অস্বীকার করে। ওই যুবকেরই এক আত্মীয় ডিএনএ পরীক্ষার দাবি তোলেন। মেয়েটির পরিবার তা মেনে নেয়। কিন্তু বেঁকে বসেন ওই যুবক। গত মার্চে ওই যুবকের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ করেন ওই তরুণী। তাঁর কথায়, “আমার কাছে সন্তানের বিষয়টি এক বার স্বীকার করেছিল ওই যুবক। পরে মত বদল করে।” গ্রামবাসীর দাবি, অভিযুক্তের মামাবাড়ির লোক সব জানে। অভিযুক্ত যুবক কোথায় আছে তাও তাঁরা জানেন। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করলেই পুলিশ ওই যুবকের খোঁজ পেয়ে যাবে। এ পর্যন্ত অভিযুক্ত গ্রেফতার না হওয়ায় পুলিশের বিরদ্ধে তদন্তে গড়িমসির অভিযোগ তুলছেন ওই তরুণীর পরিবারের লোক এবং গ্রামবাসীরা। এ দিকে, বুধবার গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, দিদা ছোট্ট নাতিকে নিয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, “গ্রামের অনেককেই বলেছিলাম সমস্যা মিটিয়ে দিতে। দু’জনের বিয়ের ব্যবস্থা করতে। কিন্তু কেউ আমাদের কথা শোনেনি। দিনমজুরি করে কোনও মতে সংসারটা চলে। এর মধ্যে নাতিকে কীভাবে মানুষ করব, জানি না।” |