চাই পানীয় জল। এই দাবিতে প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন গ্রামবাসীরা। বুধবার সকালে হিঙ্গলগঞ্জের কাঠাখালিতে পানীয় জলের দাবিতে রাস্তার উপরে কলসি রেখে বিক্ষোভ দেখাতে থাকায় পারহাসনাবাদ ও লেবুখালির মধ্যে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। কাজ বের হওয়া মানুষজন চরম অসুবিধায় পড়েন। ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের অভিযোগ, পানীয় জলের জন্য প্রশাসনের সর্বত্র ছোটাছুটি করেও কাজ হচ্ছে না। বাধ্য হয়ে রাস্তা নেমেছেন তাঁরা। অবরোধের খবর পেয়ে পুলিশ অবরোধ তুলতে গেলে বিক্ষোভের মুখে পড়ে। পরে এলাকার জলের সমস্যা নিয়ে প্রশাসনকে জানানোর আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে।
উত্তর ২৪ পরগনার সুন্দরবন অঞ্চলের প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতে প্রয়োজনের তুলনায় এমনিতেই পানীয় জলের কলের সংখ্যা কম। সামান্য যে কটি রয়েছে তাতেও দিনের বেশিরভাগ সময় জল থাকে না। |
যে টুকু সময় থাকে তাও অত্যন্ত সরু। ফলে পানীয় জল নেওয়ার জন্য ভোর থেকেই দেখা যায় কলের সামনে বালতি, কলসির বিরাট লম্বা লাইন। বসিরহাট মহকুমার হিঙ্গলগঞ্জের কাঠাখালি, উত্তর বোলতলা, কেওড়াখালি গ্রাম সর্বত্রই একই ছবি। কাঠাখালি এলাকায় বাঁকড়া পাম্প হাউস থেকে জল পাঠানো হয়। গ্রামবাসীর অভিযোগ ১২ ঘণ্টা পাম্প চালিয়ে জল দেওয়ার কথা। অথচ দিনে মাত্র ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা পাম্প চালানো হয়। ফলে দূরবর্তী বহু গ্রামের মানুষই জল পান না। গ্রামবাসীরা জানান, বরুণহাট, ট্যাংরা, উত্তর মামুদপুর, সুতিরআটি, মঙ্গলআটি-সহ বেশ কিছু গ্রামের জন্য একটিই মাত্র কল। তাতে কখন জল আসবে কেউ জানে না। ফলে দীর্ঘ সময় ধরে লাইন দিতে পানীয় জলের জন্য। জল এলেও তা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয় না। তা ছাড়া কল থেকে নোংরা জল বেরোনোর মতো ঘটনাও ঘটে। বাধ্য হয়ে বহু মানুষকে জল কিনে খেতে হচ্ছে। বরুণহাট, কাঠাখালির বাসিন্দা আছিয়া বেগম, মনিকা মণ্ডল, তহমিনা বিবিরা বলেলন, “রাত থাকতে হাঁড়ি, কলসি আর সঙ্গে মুড়ি নিয়ে জলের জন্য লাইন দিই। তাতেও বহু সময় দুপুর গড়িয়েও জল মেলে না।”
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সুন্দরবন এলাকার বাসিন্দাদের আর্সেনিকমুক্ত পানীয় জল সরবরাহের জন্য ১৯৮৩ সালে সান্ডেলেরবিল এলাকার বাঁকড়ায় একটি পাম্প হাউস তৈরি করা হয়। সেখান থেকেই সর্বত্র জল সরবরাহ করা হয়। হিঙ্গলগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আবু বক্কর গাজি বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় অনেক জায়গাতেই মাটির নীচে পাইপ ফুটো হয়ে গিয়েছে। তা ছাড়া বিভিন্ন জায়গায় মানুষ পাইপ ফাটিয়ে জল বের করে নিচ্ছে। এ সব নানা কারণে কেবল কাঠাখালি নয়,সাহেবখালি, সামসেরনগর-সহ দূরবর্তী গ্রামগুলির মানুষ পানীয় জল পাচ্ছেন না। বিডিও এবং জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরকে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।” |