১০০ দিনের কাজের মজুরি না পেয়ে কোথাও বিডিওকে স্মারকলিপি, কোথাও পঞ্চায়েত প্রধানকে আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখালেন শ্রমিকেরা। এই ঘটনা ঘটেছে বুধবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং মহকুমার গোসাবা ব্লকের বালি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতে এবং কাকদ্বীপ মহকুমার পাথরপ্রতিমা ব্লকে।
বালি-১ পঞ্চায়েতের সত্যনারায়ণপুরের বাসিন্দা বিমল মণ্ডল, নিশিকান্ত মণ্ডলের অভিযোগ, “১০০ দিনের কাজ করে আমরা কোনও মজুরি পাচ্ছি না। গ্রামের প্রধানকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন পোস্ট অফিসে গিয়ে খোঁজ নিতে। পোস্ট অফিসে গিয়ে জানতে পারি আমাদের নামে টাকা তোলা হয়ে গিয়েছে।” ওই গ্রামেরই কার্তিক মণ্ডল, বিমল বিশ্বাসদের অভিযোগ, “ইন্দিরা আবাস যোজনায় ঘরের জন্য পঞ্চায়েত থেকে নাম নিয়ে গিয়েছিল। অথচ আজও আমরা কোনও টাকা পাইনি।” বিধবা ভাতা, বার্ধক্য ভাতার টাকাও তাঁকা পাচ্ছেন না বলে গ্রামের অনেকের অভিযোগ। এ ব্যাপারে বালি-১ পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান সুব্রত মণ্ডল বলেন, “আমরা প্রত্যেক বেনিফিশিয়ারির নামে কাগজপত্র তৈরি করে টাকা জমা দিয়েছি। পোস্ট অফিসের কোনও গাফিলতির কারণে ওঁরা টাকা পাচ্ছেন না। বিষয়টি আমি বিডিওকে জানিয়েছি।” গোসাবার বিডিও বিশ্বজিৎ পাণ্ডা বলেন, “১০০ দিনের মজুরি না পাওয়া নিয়ে গ্রামবাসীরা একটি স্মারকলিপি দিয়েছেন। এ ব্যাপারে আমি পোস্ট অফিসের সঙ্গে কথা বলেছি। যাতে প্রত্যেক বেনিফিশিয়ারি ঠিকমতো টাকা পান। কিন্তু ওঁদের কোনও সমস্যার কারণে আমাদের প্রায় ২ কোটি টাকা পড়ে রয়েছে। সমস্যাটি আমি জেলাশাসককে জানিয়েছি।’’
অন্যদিকে, পাথরপ্রতিমার অচিন্ত্যনগর গ্রাম পঞ্চায়েতে নদীবাঁধ নির্মাণ, পুকুর কনন, রাস্তাঘাট তৈরি নিয়ে১০০ দিনের প্রকল্পের মধ্যে প্রায় সাড়ে তিন হাজার শ্রমিক কাজ করেছিলেন। স্থানীয় বিরাট বাজার বঙ্গীয় গ্রামীণ বিকাশ ব্যাঙ্কের মাধ্যমে তাঁদের মজুরির চাকা দেওয়া হত। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে ব্যাঙ্কের ম্যানেজার গরহাজির থাকার কারণে শ্রমিকেরা মজুরির টাকা পাচ্ছেন না। সেই কারণে মঙ্গলবার তাঁরা ওই ব্যাঙ্কে গিয়ে ঘেরাও, বিক্ষোভ দেখান। পরে প্রধানের আশ্বাসে ঘেরাও তুলে নেন। কিন্তু বুধবার সকালে ফের ব্যাঙ্কে গিয়ে তাঁরা দেখেন সেখানে তালা ঝুলছে। এর পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁরা। পঞ্চায়েত প্রধান রামচন্দ্র মাইতি বিষয়টি মেটাতে গেলে তাঁকে বিকেল পর্যন্ত আটকে রাখেন তাঁরা। পাথরপ্রতিমা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শেখ রাজ্জাক বলেন, “ব্যাঙ্কের ম্যানেজার গরহাজির থাকার জন্যই ১০০ দিনের কাজের ৪৫ লক্ষ টাকা আটকে রয়েছে। এ ছাড়াও অন্যান্য ভাতার টাকা আটকে থাকায় সমস্যা তৈরি হয়েছে। বিষয়টি জেলাশাসককে জানানো হয়েছে।” জেলাশাসক নারায়ণ স্বরূপ নিগম বলেন, “ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে তাড়াতাড়ি টাকা মিটিয়ে দিতে বলা হয়েছে।” |