বান্ধবীর ব্যাঙ্কঋণ শোধ করতেই অপহরণের নাটক
ভ্যাবলা স্টেশনে ধৃত ‘নিখোঁজ’ ব্যবসায়ী
বান্ধবীর ব্যাঙ্কঋণ শোধ করার জন্য কোম্পানির টাকা আত্মসাত ও অপহরণের নাটক সাজিয়েও শেষ রক্ষা হল না। বুধবার দুপুরে বসিরহাটের ভ্যাবলা স্টেশন থেকে ট্রেনে উঠে পালানোর সময় পুলিশের হাতে ধরা পড়ে গেলেন মিনাখাঁর ঘোনারবন গ্রামের ‘নিখোঁজ’ ব্যবসায়ী মণ্টু বিশ্বাস। পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেছে। সেই সঙ্গে উদ্ধার হয়েছে মোবাইল সংস্থার টাকাও। মণ্টুর ‘নিখোঁজ’ হওয়ার ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক এক মহিলা-সহ তিনজনকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ।
বসিরহাটের এসডিপিও আনন্দ সরকার বলেন, “মণ্টুকে জেরা করে জানা গিয়েছে, বান্ধবীর ব্যাঙ্কঋণ শোধের জন্য সে কোম্পানির টাকা আত্মসাত করেছিল। তাকে অপহরণ করা হয়েছে বলে জানিয়ে আরও ২ লক্ষ টাকা হাতানোর মতলবে ছিল। বুধবার রাতে তাকে ভ্যাবলা স্টেশন গ্রেফতার করা হয়। বকচোরা গ্রামে একটি বালির স্তূপ থেকে মোবাইল সংস্কার ৮৫ হাজার টাকাও উদ্ধার হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে আর কেউ জড়িত কি না তা তদন্ত শুরু হয়েছে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতায় একটি মোবাইল সংস্থায় কাজ করত মণ্টু। তার মেছোভেড়ির ব্যবসা রয়েছে। সোমবার বেলা ১১টা নাগাদ মোবাইল সংস্থার ৮৫ হাজার টাকা ব্যাঙ্কে জমা দিতে যাওয়ার পথে সে নিখোঁজ হয়। এর পরে সে এক বন্ধুকে ফোন করে জানায়, তাকে দুষ্কৃতীরা অপহরণ করেছে। মুক্তিপণ হিসাবে ২ লক্ষ টাকা দিলে তবেই তাকে ছাড়া হবে। মণ্টুর বান্ধবী সান্ত্বনাদেবী এ খবর তার পরিবারকে জানান।
মণ্টুর দাদা, লাল্টুবাবু বলেন, “বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও মণ্টুর সঙ্গে সান্ত্বনা দেবীর সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। সোমবারই রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ সান্ত্বনা বাড়িতে ফোন করে ২ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে মণ্টুকে ছাড়িয়ে আনার কথা বলে। এমনকী বিষয়টি পুলিশকে জানালে মণ্টুকে খুন করা হবে বলেও হুমকি দেয়।” যদিও সান্ত্ব্না দেবী তা অস্বীকার করেন। তবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে আটক করে পুলিশ। আটক করা হয় আরও দু’জনকে। মোবাইল সংস্থার পক্ষ থেকে মম্টুর বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করা হয়। পুলিশ জানায়, আটকদের জিজ্ঞাসা করে এবং মণ্টুর মোবাইল ফোনের টাওয়ার লোকেশন পরীক্ষা করে বোঝা যায় ঘটনাটি আর যাই হোক, অপহরণ নয়। টাওয়ার লোকেশন পরীক্ষা করে জানা যায়, মণ্টু হাসনাবাদ, মিনাখাঁ এবং বসিরহাটের কোনও জায়গায় রয়েছে। অথচ সে বলেছিল দুষ্কৃতীরা তাকে কলকাতার কোনও একটি জায়গায় লুকিয়ে রেখেছে। পুলিশের দাবি, মঙ্গলবার রাতে একবার অভিযান চালিয়েও অল্পের জন্য হাতছাড়া হয় মণ্টু। শেষ পর্যন্ত বুধবার দুপুরে বসিরহাটের ভ্যাবলা স্টেশনে সে ধরা পড়ে। পুলিশের দাবি, জেরায় মণ্টু জানায়, টাকা জোগাড়ের জন্য সে এই কাজ করেছে। নিখোঁজ হওয়ার দিন সে কোম্পানির টাকা নিয়ে মিনাখাঁয় ফিরে আসে। তার পরে রাতে খাওয়া সেরে বকচোরায় তার মেছোভেড়িতে চলে যায়। রাতটা সেখানে কটিয়ে মঙ্গলবার ভোরে সে বসিরহাটে চলে আসে। পুলিশ জানিয়েছে, ভেবিয়ার বাসিন্দা সান্ত্বনাদেবীর সঙ্গে মণ্টুর সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। মণ্টুর দাবি, সান্ত্বনা ব্যাঙ্ক থেকে লক্ষাধিক টাকা ঋণ নিয়েছিল। সম্প্রতি সেই টাকা মিটিয়ে দেওয়ার জন্য তার বাড়িতে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ নোটিস পাঠায়। সে কথা জানার পরে সে সান্ত্বনাকে বলে টাকার ব্যবস্থা সে করছে। এর পর কোম্পানির টাকা হাতে পাওয়ার পরে তার মাথায় এই মতলব আসে। যদিও সান্ত্বনাদেবী পুলিশকে জানান, তিনি মণ্টুকে কোনও টাকার কথা বলেননি। এ দিন মণ্টুকে গ্রেফতার করার পরে তাকে নিয়ে পুলিশ বকচোরা গ্রামে যায়, সেখানে বালির স্তূপ থেকে একটি প্লাস্টিকের প্যাকেটে মোবাইল সংস্থার ৮৫ হাজার টাকা উদ্ধার হয়।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.