বধূ-মৃত্যুর তদন্তে নিষ্ক্রিয়তার নালিশ
ঝাড়গ্রাম শহরের তরুণী বধূ মলিনা আখতারের অস্বাভাবিক মৃত্যুর তদন্তে ‘পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা’র অভিযোগ তুলেছেন মৃতার বাপের বাড়ির লোকজন। তাঁদের অভিযোগ, হত্যার ঘটনাকে ‘আত্মহত্যা’ বলে চালাতে চাইছে পুলিশ। সুবিচারের আশায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আবেদনপত্র পাঠিয়েছেন মলিনার বাবা, পেশায় রাজমিস্ত্রি শেখ মুরসেদ আলি। অভিযোগ জানানো হয়েছে পুলিশ-প্রশাসনের উপর মহলেও। মলিনা যে ‘পণের বলি’ হয়েছেন সে ব্যাপারে ঘটনার দিনই, গত ১৮ এপ্রিল, ঝাড়গ্রাম থানায় মলিনার স্বামী, ননদ, শাশুড়ি ও এক সম্পর্কিত দেওরের নামে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন মৃতার বাবা। পুলিশের এখনও দাবি, অভিযুক্তরা ‘ফেরার’।
মুরসেদের পাশে দাঁড়িয়েছে ঝাড়গ্রামের মহিলা সংগঠন ‘সুচেতনা’। সুচেতনার সম্পাদিকা স্বাতী দত্তের দাবি, “ময়না-তদন্তের রিপোর্ট নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। বিয়ের সাত বছরের মধ্যে কোনও বধূর অপমৃত্যু হলে ময়না-তদন্তের প্রক্রিয়াটি ভিডিও রেকর্ডিং করে রাখা হয়। এ ক্ষেত্রে তা হয়নি। অথচ মৃতদেহের সুরতহালকারী ম্যাজিস্ট্রেটের রিপোর্টে মৃত্যুর কারণ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করা হয়েছিল।” সে জন্য কবর থেকে মৃতদেহ তুলে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের তত্ত্বাবধানে পুনরায় ময়না-তদন্তেরও দাবি করেছেন স্বাতীদেবীরা। প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে স্মারকলিপিও দিয়েছেন তাঁরা। মলিনা-কাণ্ডে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে ও পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার প্রতিবাদে এপিডিআর-সহ একাধিক গণ সংগঠনও প্রশাসনিক মহলে স্মারকলিপি দিয়েছে। কিছুদিন আগে শহরে মিছিলও করেছে।
মলিনা আখতার। নিজস্ব চিত্র।
পুলিশ জানিয়েছে, ময়না-তদন্তের রিপোর্টে মৃত্যুর কারণ ‘অ্যান্টি-মর্টেম হ্যাংগিং’ বলা হয়েছে। অর্থাৎ ঝুলন্ত অবস্থায় শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মৃত্যু। তবে ভিসেরা রিপোর্ট এখনও আসেনি। ভিসেরা রিপোর্ট পাওয়ার পরেই মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে। গত ১৮ এপ্রিল সকালে ঝাড়গ্রাম শহরের পুরনো ঝাড়গ্রাম এলাকায় শ্বশুরবাড়ির একটি ঘরে বছর একুশের মলিনাকে সিলিং থেকে গলায় দড়ি দিয়ে খাটে পা-মোড়া (অর্ধ-ঝুলন্ত) অবস্থায় পাওয়া যায়। ওই ঘরটি থেকে খবরের কাগজের উপর লেখা একটি মৃত্যুকালীন জবানবন্দিও উদ্ধার হয় বলে পুলিশের দাবি। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতেই ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজের বাংলা অনার্সের দ্বিতীয় বর্ষের এই ছাত্রীর সঙ্গে পুরনো ঝাড়গ্রামের যুবক শেখ আবদুল মকসুদের সম্বন্ধ করে বিয়ে হয়। চন্দ্রি অঞ্চলের আস্তি প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতা করেন মকসুদ। মলিনার বাপের বাড়ি শহরেরই নৃপেন পল্লিতে।
মৃতার বাবার অভিযোগ, “বিয়ের সময় জামাইকে সাধ্যমতো যৌতুক দিয়েছিলাম। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই নগদ-পণের দাবিতে মলিনার উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু হয়। মৃত্যুর কয়েক দিন আগেও মলিনাকে মুখে বালিশ চাপা দিয়ে মারধর করা হয়েছিল।” স্বাতীদেবীদের আবার দাবি, “অনুসন্ধান চালিয়ে দেখেছি, গলায় দড়ি দেওয়া মৃতদেহের পরনে ছিল পাটভাঙা শাড়ি। মাথায় ঘোমটা দেওয়া। যা অস্বাভাবিক। শরীরের একাধিক জায়গায় আঘাতেরও চিহ্ন ছিল।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.