আর আড়াল থেকে সমর্থন দেওয়া নয়, টোলগে ওজবে নাটকে সরাসরি মাঠে নেমে পড়ল মোহনবাগান। অস্ট্রেলীয় স্ট্রাইকারের সঙ্গে সবুজ-মেরুনের দু’বছরের চুক্তি বুধবার আই এফ এ-তে জমা দিল তারা। চুক্তিতে দেখা যাচ্ছে, ১৮ মে চুক্তি সই হয়েছে। পয়লা জুন থেকে তা কার্যকর হবে।
টোলগেকে চিঠি পাঠিয়ে ইস্টবেঙ্গলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল সামনের মঙ্গলবার ক্লাব তাঁবুতে উপস্থিত না হলে শাস্তির মুখে পড়তে হবে। মেলে চিঠি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই উত্তর পাঠিয়ে দেন ইউরোপ ভ্রমণে যাওয়া টোলগে। লিখে দেন, “ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের সঙ্গে আমার চুক্তি শেষ হয়ে গিয়েছে। আমি এখন ফ্রি প্লেয়ার। তা ছাড়া আমার বিরুদ্ধে অভিযোগও আপনারা আই এফ এ থেকে প্রত্যাহার করেন নি। ফলে আমার পক্ষে যাওয়া সম্ভব নয়।” সবথেকে মজার ব্যাপার হল, টোলগে অন্য সব চিঠির সঙ্গে এই উত্তরটিও পাঠিয়ে দিয়েছেন ফিফা, ফেডারেশন-সহ সবাইকেই। টোলগের উত্তর পেয়ে বুধবার পাল্টা আবার তাকে চিঠি দিল ইস্টবেঙ্গল। বলা হল ২৬ মে ক্লাবে আসতে।
ইস্টবেঙ্গলের তিন নম্বর ‘শাস্তির হুমকি’-র দিনই মোহনবাগান তাদের চুক্তিপত্র দেওয়ায় অবশ্য নাটক আরও জমে গেল। টোলগের মতো মোহনবাগানও তা পাঠিয়ে দিয়েছে ফিফা-সহ সবাইকে। অর্থ সচিব দেবাশিস দত্ত বললেন, “ফেডারেশনের নিয়ম হল চুক্তির সাত দিনের মধ্যে নোটারি করে তা জমা দিতে হয়। আমরা সেটাই করেছি।” টোলগে এপিসোডে মোহনবাগান সরাসরি মাঠে নামার কারণ প্রধানত দু’টো।
এক) সামনের সপ্তাহে আই এফ এ প্লেয়ার্স স্ট্যাটাস কমিটির সভায় যাতে টোলগের সঙ্গে মোহনবাগানকেও ডাকা হয় তার পথ তৈরি করা।
দুই) টোলগে যে ১৪ মে কলকাতা লিগের শেষ ম্যাচের পর ফ্রি হয়ে গিয়েছেন সেটা আরও জোরালো ভাবে প্রতিষ্ঠা করা। আই এফ এ সচিব উৎপল গঙ্গোপাধ্যায় পুরো ঘটনায় বিরক্ত। বললেন, “এ রকম ঘটনা বারবার ঘটছে এবং তা ফুটবলের ক্ষতি করছে। যাতে এসব আর না হয় সে জন্য টোলগে বা ইস্টবেঙ্গল যে-ই অন্যায় করুক তাকে এ বার শাস্তি পেতেই হবে।” মুখে এ কথা বললেও আই এফ এ অবশ্য তাকিয়ে আছে ফিফার দিকে। তাদের আশা, ফিফা কংগ্রেস মিটলেই এ ব্যাপারে তাদের রায় জানিয়ে দেবে বিশ্বের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থা। সাধারণত বিদেশি ফুটবলারদের ক্ষেত্রে এ রকম ঝামেলায় দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয় ফিফা।
মোহনবাগান চুক্তিপত্র জমা দিলেও ইস্টবেঙ্গল এখনও তা দেয়নি। তবে লাল-হলুদ শিবির টোলগের অগ্রিম নেওয়ার ভাউচার ও টোকেন জমা দিয়েছে। ইস্টবেঙ্গলের বক্তব্য, যে কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়েছে সেটাই যথেষ্ট। জানা গিয়েছে, ইস্টবেঙ্গল টোলগেকে সাসপেন্ড করার পথ প্রশস্ত করছে পরপর চিঠি পাঠিয়ে। সেটা ৩১ মে-র আগেই করতে চায় তাঁরা। জানা গিয়েছে, টোলগে তাতে উদ্বিগ্ন নন। তিনি অস্ট্রেলীয় দূতাবাসের মাধ্যমে ফিফা থেকে দ্রুত ‘নির্দেশ’-এর চিঠি আনানোর চেষ্টা করছেন। নিজের পুরনো এজেন্টকেও এ ব্যাপারে কাজে লাগাচ্ছেন তিনি। |