|
|
|
|
‘অতিরঞ্জিত রিপোর্টে’ বিভ্রান্তি, ক্ষোভ বিমানের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
বিধানসভা ভোটের পরে দলের বিভিন্ন জেলা-কমিটি থেকে ‘অতিরঞ্জিত রিপোর্ট’ পাঠানো হয়েছিল। আর তাতেই ‘বিভ্রান্ত’ হয়ে ভোটের ফলাফল নিয়ে তাঁর পূর্বাভাসে ভুল হয়েছিল। বুধবার পশ্চিম মেদিনীপুরে দলীয় কর্মীদের সামনে এই স্বীকারোক্তির সঙ্গেই সিপিএম রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু ওই ‘রিপোর্ট’ নিয়ে তাঁর ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাঁর কথায়, “কোনও জেলা রিপোর্ট দিল, সব আসনই পাব। আবার কোনও জেলা রিপোর্ট দিল, একটি বাদে বাকি সব আসনই পাব। এ কী! এই সব রিপোর্ট ঠিক মনে করেই ভুল হল।” যদিও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা থেকেও এমন অতিরঞ্জিত রিপোর্ট গিয়েছিল কি না, তা স্পষ্ট করেননি রাজ্য সম্পাদক। |
|
মেদিনীপুরে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক। নিজস্ব চিত্র। |
বুধবার মেদিনীপুরের জেলা পরিষদ হলে সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য, জোনাল সম্পাদক, লোকাল সম্পাদক, জোনাল সদস্যদের নিয়ে এক সভায় উপস্থিত ছিলেন বিমানবাবু। মূলত পার্টি-কংগ্রেসে গৃহীত দলের রাজনৈতিক প্রস্তাব, রাজ্য সম্মেলন ও পার্টি কংগ্রেসের সাংগঠনিক রিপোর্ট এবং মতাদর্শগত দলিল নিয়ে আলোচনা করতেই বিমানবাবুর জেলায় আসা। বক্তব্যের শুরুতেই রাজ্য সম্পাদক স্পষ্ট করে দেন, তিনি যা বলবেন, তা কোনও একটি জেলা নিয়ে নয়। রাজ্য সম্মেলনে ১৯টি জেলা নিয়েই আলোচনা হয়েছে। তাই তাঁর বক্তব্য ১৯টি জেলার পরিস্থিতির প্রেক্ষিতেই। বিমানবাবু বলেন, “যাঁরা মনে করেন, আমরা তাঁদের লোক নই, তাঁদের কাছে যেতে হবে। ভাল আচরণ করতে হবে। তাঁদের বোঝাতে হবে, আমরা তাঁদেরই লোক। এটাই আমাদের আগামী দিনের লক্ষ্য।” সেই সঙ্গে ‘স্বচ্ছ’ ভাবমূর্তি-সম্পন্ন কর্মীদের কাজে ফেরানো এবং ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ কর্মীদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখারও পরামর্শ দেন বিমানবাবু। তাঁর কথায়, “দুর্নীতিগ্রস্ত সদস্যদের থেকে দূরে থাকতে হবে। যাঁরা কোনও না-কোনও কারণে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন, তাঁদের ফের সক্রিয় করে দলের কাজে লাগাতে হবে।” গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে ‘বামফ্রন্টগত ঐক্যে’র ক্ষেত্রেও ঘাটতি ছিল বলে স্বীকার করেন বিমানবাবু।
পাশাপাশি, পার্টির সদস্যপদে শ্রেণি-সামঞ্জস্য থাকছে না বলেও উদ্বেগ প্রকাশ করেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক। বিমানবাবু বলেন, “কৃষক-খেতমজুর সদস্যের সংখ্যা বাড়াতে হবে। শ্রেণি-সামঞ্জস্য গড়ে তুলতে হবে।” যাঁদের বয়স হয়েছে, তবু পদ আঁকড়ে রয়েছেন, তাঁদের পদ ছেড়ে দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, “এখনও এমন অনেকে রয়েছেন, যাঁরা শারীরিক ভাবে অসুস্থ। তবু পদে থাকতে চান। কেউ জোনাল কমিটির সদস্য হয়ে আছেন। কেউ লোকাল কমিটির সম্পাদক। আপনারা পদ না-ছাড়লে নতুনদের তুলে আনা হবে কী করে?” সভায় সিপিএমের জেলা সম্পাদক দীপক সরকার বলেন, “প্রতিকূলতা, চক্রান্ত, আক্রমণ মোকাবিলা করেই আমাদের এগোতে হবে। ঘুরে দাঁড়ানোর প্রচেষ্টাকে অব্যাহত রাখতে হবে।” বর্তমান পরিস্থিতিতে জঙ্গলমহলে সম্ভাব্য রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বিমানবাবু বলেন, “পরিস্থিতি কী, তা সকলেই জানেন। এ ক্ষেত্রে যেমন ভাবে করা সম্ভব, তেমন ভাবেই কাজ করা হচ্ছে।” |
|
|
|
|
|