একে তো রাস্তায় সারি সারি গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকে। তার উপর রাস্তা জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে আবর্জনা স্তূপ। দিনের বেলা ব্যস্ত সময়ে ঘন্টার পর ঘন্টা ধরে ট্রাক দাঁড় করিয়ে ওই আবর্জনা ট্রাকে তোলার কাজ চলে। এতে চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। যানজটে জেরবার হয় এলাকায়। এমনকী নাকে রুমাল চেপে ওই ট্রাকের পাশ দিয়ে অনেককেই দৌঁড়ে পার হতে দেখা যায়। তাতে বাড়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কা। শিলিগুড়ি শহরের ব্যস্ততম রাস্তা বিধান রোডে কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামের সামনের রাস্তা এই হালে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়েছে। দিনের পর দিন ধরে এমন চলতে থাকলেও পুরসভার তরফে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত বলেন, “আবর্জনা এক জায়গায় করে তা ট্রাকে করে ডাম্পিং গ্রাউন্ডে নিয়ে যাওয়া হয়। শিলিগুড়িতে জায়গার খুব অভাব। সেই কারণেই বিধানরোডের পাশে একটি জায়গায় আবর্জনা রেখে পরে তা নিয়ে যাওয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ যখন উঠছে আমরা তা অবশ্যই দেখব।” |
রাস্তায় এ ভাবেই চলে ট্রাকে জঞ্জাল তোলার কাজ। নিজস্ব চিত্র। |
সিপিএমের শিলিগুড়ি জোনাল কমিটির সম্পাদক মুকুল সেনগুপ্ত অভিযোগ করেন, বিধান রোডের মত একটি ব্যস্ত রাস্তায় যেভাবে আবর্জনার স্তূপ ফেলে রাখা হয় তাতে যে কোনও সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তিনি বলেন, “আবর্জনার জন্য ফুটপাত দিয়ে চলাচল করা যায় না। রাস্তার একটি অংশ বন্ধ হয়ে থাকে। চার ঘন্টারও বেশি সময় ধরে ওই অবস্থা থাকায় সাধারণ মানুষ চলাচল করতে পারে না। আমরা মেয়রকে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েছি।” এলাকার বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা জানান, শহরে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা না থাকায় সকাল থেকে বিধান রোডের স্টেডিয়ামের সামনে প্রচুর গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকে। তার মধ্যে অধিকাংশই সেনাবাহিনীর গাড়ি। সেখানেই আবর্জনার স্তূপ থাকায় চরম বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। চারপাশে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। ওই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন সুভাষপল্লির বাসিন্দা নির্মল দত্ত। নাকে হাত দিয়ে বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর একরকম দৌড় দিয়েই তিনি ওই রাস্তা পার হন। তিনি বলেন, “শহরের বাইরে কোনও ফাঁকা জায়গায় এটা করা যেতে পারে।” পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিদিন সকাল থেকে হাকিমপাড়া, বিধান মার্কেট সহ একাধিক জায়গা থেকে রিকশা ভ্যানে করে আবর্জনা সংগ্রহ করেন পুর কর্মীরা। তার পরে সেগুলি বিধান রোডের স্টেডিয়ামের সামনে জড়ো করা হয়। সেখান থেকে কয়েক দফায় ট্রাক দিয়ে সেগুলি সেবক রোডের ডাম্পিং গ্রাউন্ডে নিয়ে যাওয়া হয়। সিপিএমের দাবি, “বাম আমলে রাত ও ভোরেই আবর্জনা সংগ্রহ করে ডাম্পিং গ্রাউন্ডে নিয়ে যাওয়া হত। এভাবে রাস্তায় ফেলে সমস্যা তৈরি করা হত না।” |