কর্মীর অভাবে আলিপুরদুয়ার-২ ব্লকের তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার অতিরিক্ত প্রাণী সম্পদ বিকাশ কেন্দ্র বন্ধ থাকায় বিভিন্ন মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, প্রায় এক বছর থেকে অসুস্থ গবাদি পশু ও পাখির জন্য সরকারি চিকিৎসা পরিষেবার বেহাল দশা চললেও প্রশাসনের তরফে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সমস্যার কথা অস্বীকার করেননি ব্লক প্রাণী সম্পদ বিকাশ আধিকারিক সুজিত নেওয়ার। তিনি বলেন, “কর্মী না থাকায় ব্লকের তিনটি অতিরিক্ত প্রাণী চিকিৎসা কেন্দ্র বন্ধ রাখতে হয়েছে। সেগুলি ফের চালু করার জন্য কর্মী চাওয়া হয়েছে। যতদিন না সেটা হচ্ছে ওই সমস্ত এলাকায় গবাদি পশু চিকিৎসায় যেন সমস্যা না হয় সেটা দেখা হবে।” স্থানীয় বিডিও সৌমেন মাইতি বলেন, “যে তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় প্রাণী চিকিৎসা কেন্দ্র বন্ধ আছে সেখানে বিশেষ শিবির করে গবাদি পশুর চিকিৎসার ব্যবস্থা করার জন্য ব্লক প্রাণী সম্পদ আধিকারিককে বলব। এটা হলে সমস্যা অনেকটা মিটবে।” যদিও প্রাণী সম্পদ বিকাশ আধিকারিক অথবা ব্লক প্রশাসনের কর্তাদের ওই আশ্বাসে ভরসা রাখতে পারছেন না এলাকার বাসিন্দা ও পঞ্চায়েত কর্তারা। |
মাঝেরডাবরি গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান গীতা রায় বলেন, “অতিরিক্ত প্রাণী সম্পদ বিকাশ কেন্দ্রটি বন্ধ থাকায় গ্রামের বাসিন্দারা বিপাকে পড়েছেন। সমস্যার কথা সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্তাদের কয়েকবার জানানো হয়েছে। কিন্তু তাঁরা আশ্বাস দেওয়ার বাইরে কোনও ব্যবস্থা নেননি।” ওই ঘটনায় ক্ষুব্ধ উত্তর শিবকাটা গ্রাম উন্নয়ন কমিটির সচিব পীযূষ সরকার আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন। তিনি বলেন, “গ্রামের ৫ কিলোমিটারের মধ্যে গবাদি পশু চিকিৎসা কেন্দ্র নেই। যেতে হয় সলসলাবাড়িতে। গরু, ছাগল নিয়ে সেখানে যাওয়া অনেকের পক্ষে সম্ভব হয় না। ওই পরিস্থিতিতে কয়েক মাসে এলাকায় প্রচুর হাঁস, মুরগি, গরু, ছাগল মারা গিয়েছে। দ্রুত সমস্যার সমাধান না হলে আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব।” প্রাণী সম্পদ বিকাশ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কর্মী সমস্যার কারণে ব্লকের যে তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় চিকিৎসা কেন্দ্র বন্ধ করে দিতে হয়েছে সেগুলি হলটটপাড়া-২, মাঝেরডাবরি এবং কোহিনূর গ্রাম পঞ্চায়েত। চিকিৎসক ছাড়াই চলছে তুরতুরি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার অতিরিক্ত প্রাণী সম্পদ বিকাশ কেন্দ্র। দফতরের কর্তারা জানান, ২০০৮ সাল থেকে কর্মী নিয়োগ না হওয়ায় ওই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। যদিও বাসিন্দারা প্রশ্ন তুলেছেন কর্মী নেই ওই অজুহাত শুনে আর কত দিন তাঁদের দুর্ভোগ পোহাতে হবে! টটপাড়া-২ গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য অসীম সরকার বলেন, “কর্মীর অভাবে চিকিৎসা পরিষেবা বন্ধ থাকবে এটা মেনে নেওয়া যায় না। তাই বাধ্য হয়ে আন্দোলনের কথা ভাবতে হচ্ছে।” |