কাজিয়ায় আধুনিক পশু-ক্লিনিকের কাজ বন্ধ ছয় মাস
প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে শিলিগুড়ির অদূরে খাপরাইলে পশু চিকিৎসার জন্য অত্যাধুনিক পলিক্লিনিক তৈরি হয়েছে। তার পরে ৬ মাস পেরিয়ে গিয়েছে। এখনও তা চালু করা নিয়ে রাজ্য প্রাণিসম্পদ দফতর ও মহকুমা পরিষদ টালবাহানা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই পশু চিকিৎসা কেন্দ্রের ভবন, কর্মী আবাসন তৈরির কাজ গত বছরই শেষ হয়ে গিয়েছে। চিকিৎসার জন্য প্রায় ৬৪ লক্ষ টাকার অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি বসানো হয়েছে। তবে চিকিৎসক ও কর্মী নিয়োগ হয়নি। বসানো হয়নি জেনারেটর। সমস্যার কথা জেনে ফেব্রুয়ারি মাসে রাজ্যের প্রাণি সম্পদ দফতরের মন্ত্রী নূরে আলম চৌধুরী পলিক্লিনিকটি পরিদর্শন করেন। দ্রুত চালু করার ব্যাপারে আশ্বাসও দেন। মন্ত্রীর ওই আশ্বাস সত্ত্বে ক্লিনিক চালুর ব্যাপারে কোনও অগ্রগতিই হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। এই ব্যাপারে খোঁজ নিতে গিয়ে দেখা গিয়েছে, পলিক্লিনিক চালু নিয়ে শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ ও প্রাণি সম্পদ দফতরের আধিকারিকদের মধ্যে চলছে চাপানউতোর। প্রাণি সম্পদ দফতরের শিলিগুড়ির ডেপুটি ডিরেক্টর সজল ভুঁইয়া বলেন, “চিকিৎসক ও কর্মী নিয়োগের বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দেখছেন। তবে পলিক্লিনিকের নির্মাণ ও যন্ত্রপাতি কেনার কাজ করেছে মহকুমা পরিষদ। যতদূর জানি, কিছু কাজ বাকি রয়েছে। সেটা শেষ না-হলে পলিক্লিনিক কী ভাবে চালু করা সম্ভব?” শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের সভাধিপতি পাসকেল মিনজের পাল্টা দাবি, “পলিক্লিনিক চালু করার জন্য কোনও কাজই বাকি নেই। রাজ্য সরকারের সদিচ্ছা থাকলে স্থানীয় চিকিৎসকদের দিয়েই সেটা আপাতত চালু করা যেতে পারত।” ওই পলিক্লিনিকে একটি জেনারেটর বসানোর কথা রয়েছে। কারা সেটির ব্যয়ভার কারা বহণ করবে তা নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে অনিশ্চয়তা ছিল। মহকুমা পরিষদ কর্তৃপক্ষ নিজেদের ব্যয়ে জুলাইয়ের আগে সেটি বসিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছেন। এই ব্যাপারে সভাধিপতি বলেন, “আধিকারিকদের পরিদর্শন-সহ কয়েকটি তদারকি খাতে কয়েক লক্ষ টাকা ব্যয় হয়েছে। সেই টাকাও দিচ্ছে না প্রাণি সম্পদ দফতর। তবে আমরা ওই টাকা আর চাইব না ঠিক করেছি। নিজেদের ব্যয়ে জেনারেটর বসিয়ে দেওয়া হবে।” শিলিগুড়ি শহরে একটি সরকারি পশু চিকিৎসালয় কেন্দ্র থাকলেও সেখানে কেবল বহির্বিভাগ চলছে। চিকিৎসা কেন্দ্রে রেখে দিনরাত চিকিৎসার কোনও ব্যবস্থা নেই। অথচ শিলিগুড়ি মহকুমা জুড়ে অন্তত কয়েক লক্ষ গবাদি পশু রয়েছে। রয়েছে কুকুর-সহ বিভিন্ন ধরনের গৃহপালিত জন্তু। মহানন্দা, কার্শিয়াং বন বিভাগের জখম পশুর চিকিৎসার জন্যও প্রায়ই দৌড়তে হয় পশু চিকিৎসকদের। চিকিৎসকদের বক্তব্য, স্থায়ী চিকিৎসা কেন্দ্রে এনে চিকিৎসা করালে দ্রুত সুস্থ করে তোলা সম্ভব। এ সব চিন্তাভাবনা করেই খাপরাইলে ওই পলিক্লিনিক তৈরি হয়। ঠিক হয়, ৪ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, টেকনিশিয়ান এবং প্রয়োজনীয় কর্মী নিয়োগ করে চব্বিশ ঘণ্টা ক্লিনিক খোলা রাখা হবে যাতে যে কোনও সময়ে বাসিন্দারা এখানে পরিষেবা পান। ভবন তৈরির পরেও চিকিৎসক ও কর্মী নিয়োগ করে সেই কাজ কেন দ্রুত শুরু করা হচ্ছে না সেই প্রশ্ন উঠেছে। মহকুমার এক পশু চিকিৎসক বলেন, “মহকুমায় পশু চিকিৎসার পরিকাঠামোর উন্নতির জন্যই পলিক্লিনিক চালু করা দরকার। সেই জন্যই অর্থ বরাদ্দ করা হয়। অথচ, কর্মী-চিকিৎসক নিয়োগ কেন্দ্র করে টালবাহানা চলায় সেটি চালু করা যাচ্ছে না। এমন চললে চিকিৎসক হিসাবে প্রতিবাদের পথ বেছে নিতে হবে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.