দিল্লিবাসী বাম নেতারা এ বার ভারত সফরে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
রাজনৈতিক ভাবে কোণঠাসা অবস্থা। জাতীয় স্তরে ক্রমশ অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ার আশঙ্কা। দলের মধ্যেই উঠছে আন্দোলনের দাবি। ঘরে-বাইরে চাপের মুখে এ বার ঘরের আরাম ত্যাগ করে বাইরে বেরনোর সিদ্ধান্ত নিতে হল বাম নেতাদের। জুলাই মাসে কার্যত ভারতে সফরে বেরোবেন প্রকাশ কারাট-সহ চার বাম দলের শীর্ষ নেতারা। খাদ্য সুরক্ষা আইনের দাবিতে গোটা মাস রাজ্যে রাজ্যে প্রচার চালাবেন তাঁরা। এর পর সংসদের বাদল অধিবেশনের সময় টানা পাঁচ দিন ধর্নায় বসবেন যন্তর মন্তরে।
দলের আন্দোলনবিমুখতা নিয়ে কোঝিকোড় পার্টি কংগ্রেসেই প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল কারাটকে। বিভিন্ন রাজ্যের প্রতিনিধি প্রশ্ন তোলেন, জঙ্গি-আন্দোলনের জন্য পরিচিত যে দল, সেই সিপিএমই আন্দোলনের পথ থেকে সরে আসছে কেন? কেন্দ্রীয় নেতারা দিল্লিতে বসে বসে কী করছেন, রাজ্যে রাজ্যে গিয়ে কেন তাঁরা দলীয় কর্মীদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন না, ওঠে সেই প্রশ্নও। এমন অভিযোগও ওঠে যে, নেতারা শুধুই টিভিতে মুখ দেখিয়ে, প্রতিক্রিয়া জানিয়ে দায়িত্ব সারছেন। অন্য বাম দলগুলির মধ্যে থেকে অভিযোগ উঠেছিল,আন্দোলনবিমুখতার ফলেই বামেদের পরিসর নিয়ে নিয়েছে অণ্ণা হজারেদের অ-রাজনৈতিক শক্তি। প্রশ্ন ছিল, আন্দোলন হবে কোন বিষয়ে? শেষ পর্যন্ত চার বাম দলের বৈঠকে আজ সকলের জন্য খাদ্য সুরক্ষা আইন প্রণয়নের দাবিটিকে বেছে নেওয়া হয়। সিপিএম নেতারা মনে করছেন, এই নিয়ে আন্দোলন হলে বৃহত্তর বাম গণতান্ত্রিক জোট গড়ে তোলা সম্ভব। কারণ, খাদ্য সুরক্ষার দাবিতে বহু বেসরকারি সংগঠন, বামপন্থী মনোভাবাপন্ন মানুষও দেশের বিভিন্ন অংশে কাজ করছেন। তাঁদেরও এই আন্দোলনে জড়িয়ে নেওয়া সম্ভব হবে।
এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে এ বারই প্রথম জাতীয় স্তরে বামফ্রন্টের সমন্বয় কমিটি তৈরি হচ্ছে। সিপিএমের কোঝিকোড় পার্টি কংগ্রেসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গিয়ে সমন্বয় কমিটির দাবি তুলে কারাটকে ঘোর অস্বস্তিতে ফেলেছিলেন সিপিআই নেতা এ বি বর্ধন। তাঁর বক্তব্য ছিল, মাঝে মাঝে দিল্লিতে বাম নেতারা যে আলোচনায় বসেন, তা নিয়মিত করার জন্য একটি প্রক্রিয়ার দরকার। বাম ঐক্যকে এ বার প্রাতিষ্ঠানিক চেহারা দেওয়া হোক। আজ এ কে জি ভবনে চার বাম দলের বৈঠকে সেই একই দাবি তোলেন ফরওয়ার্ড ব্লকের জি দেবরাজন। সিপিএম নেতারা সেই যুক্তি মেনে নেন। বৃন্দা কারাট, ডি রাজা, দেবরাজন ও অবনী রায়কে নিয়ে ওই কমিটি তৈরি করে রাজ্যগুলির সঙ্গে সমন্বয় ও প্রচার-পরিকল্পনা তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়। আজকের বৈঠকে ঠিক হয়েছে, চার বাম দলের দিল্লির নেতারা ভাগাভাগি করে রাজ্য সফরে যাবেন। ৩০ জুলাই থেকে ৩ অগস্ট সংসদের অধিবেশন চলাকালীন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ধর্নায় বসবেন বাম নেতারা। |