হাম্পি এক্সপ্রেসের মহিলা কামরা
মোটরবাইকের তেল, স্টোভ থেকে ‘অনিয়মে’র আগুন
দুর্ঘটনাগ্রস্ত হাম্পি এক্সপ্রেসের মহিলা কামরায় আগুন ধরেছিল লাগেজ ভ্যানে (এসএলআর) রাখা তিনটি তেল-ভর্তি মোটরবাইক থেকে। প্রাথমিক তদন্তে এমনটাই মনে হয়েছে রেলের তদন্তকারীদের। তদন্তকারীরা রেল-কর্তৃপক্ষকে যে প্রাথমিক রিপোর্ট দিয়েছেন তাতে বলা হয়েছে, তেল-ভরা মোটরবাইক থেকেই সম্ভবত প্রথম আগুন লেগেছিল। অসংরক্ষিত মহিলা কামরায় ছিলেন বেশ কিছু মহিলা শ্রমিক। তাঁদের কাছে ছিল কেরোসিনের স্টোভ। ওই স্টোভ ফেটে আগুন আরও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
সোমবার বেশি রাতে পেনুকোন্ডা স্টেশনে হাম্পি এক্সপ্রেস মাঝের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি মালগাড়ির পিছনে গিয়ে ধাক্কা মারে। দুর্ঘটনায় হাম্পি এক্সপ্রেসের মহিলা কামরা-সহ প্রথম তিনটি কামরা লাইনচ্যুত হয়। ওই মহিলা কামরাটির অর্ধেক ছিল লাগেজ ভ্যান। রেল সূত্রের খবর, লাগেজ ভ্যানে ছিল তিনটি মোটরবাইক। হরপেট স্টেশন থেকে সেগুলি বেঙ্গালুরু পর্যন্ত বুকিং করা হয়েছিল। রেলের নিয়ম হল, ওই সব যানবাহন লাগেজ ভ্যানে তোলার আগে সব তেল ফেলে দিতে হয়। তদন্তকারীদের অনুমান, এ ক্ষেত্রে সেই নিয়ম মানা হয়নি। মোটরবাইক তিনটিতে যথেষ্ট তেল ছিল বলেই সন্দেহ।
পুলিশ ও রেল সূত্রের খবর, মালগাড়ির সঙ্গে প্রচণ্ড ধাক্কায় কামরার লোহার চাদরের ঘর্ষণে স্ফুলিঙ্গ তৈরি হয়েছিল। তা থেকেই সম্ভবত আগুন ধরে যায় মোটরবাইকে রাখা পেট্রোলে। তারপরে সেটা দ্রুত ছড়িয়ে যায় কামরায় ভিতরে। পাশাপাশি কামরায় রাখা কেরোসিন স্টোভ থেকে ওই আগুন বিরাট আকার নেয়। রেল বোর্ড সূত্রে বলা হয়েছে, আগুন এত দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছিল যে কেউ বেরোতে পারেননি। দেহগুলি পুরো ঝলসে গিয়েছিল।
সোমবারের এই দুর্ঘটনার প্রেক্ষিতে বুধবার দুপুরে রেল বোর্ডের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন রেলমন্ত্রী মুকুল রায়। সেখানে তিনি রেলে যাত্রী সুরক্ষা নিয়ে আগামী ৩০ জুনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। ওই রিপোর্টে কী ভাবে দুর্ঘটনার সংখ্যা ‘শূন্যে’ নামিয়ে আনা যায় সেই রাস্তা খুঁজে বার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মুকুলবাবু বলেন, “স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি ভিত্তিতে পরিকল্পনা নিতে বলা হয়েছে রেল বোর্ডকে।”
পূর্ববর্তী রেলমন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদীর আমলে পরমাণু শক্তি কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান অনিল কাকোদকরের নেতৃত্বে একটি কমিটি রেলের নিরাপত্তাব্যবস্থার উপর সার্বিক রিপোর্ট জমা দিয়েছিল। হাম্পি এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার পর রেল বোর্ডকে ফের নতুন করে রিপোর্ট তৈরি করতে বলায় কাকোদকরের ওই রিপোর্ট আপাতত ঠান্ডা ঘরে চলে যাবে বলে মনে করছেন অনেকেই। রেলমন্ত্রী এ প্রসঙ্গে বলেন, “এদিনের বৈঠকে কাকোদকরের রিপোর্টের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। যদি ওই রিপোর্টের কোনও অংশ দরকারি হয়, তবে তা নতুন রিপোর্টে সংযোজন করা হবে।”
সুরক্ষা ব্যবস্থা ঢেলে সাজতে নতুন করে প্রধানমন্ত্রীর দ্বারস্থও হচ্ছে রেল মন্ত্রক। নীতীশ কুমারের আমলে যে ভাবে কেন্দ্র রেলের সুরক্ষা খাতে ১৭ হাজার কোটি টাকা সাহায্য করেছিল, সেই ধরনের একটি তহবিল গঠন করার কথা ভাবছে মন্ত্রক। মুকুলবাবু বলেন, “নিরাপত্তা খাতে অর্থ দিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে দরবার করব। প্রয়োজনে সমস্ত সাংসদদের বুঝিয়ে রেলের স্বার্থে এ ব্যাপারে সহমত গঠন করা হবে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.