উত্তরবঙ্গের জঙ্গল এলাকার কোথায় হোম ট্যুরিজম গড়ে উঠবে। কোথায় হবে পর্যটক আবাস। পযর্টকরা কোন এলাকায় বেড়াতে পারবেন। ভ্রমণের সময় তাঁদের কোন নিয়ম অবশ্যই মেনে চলতে হবে তা নিয়ে সুনির্দিষ্ট রূপরেখা তৈরি করতে আলোচনা শুরু করল ‘ইকো ট্যুরিজম গাইড লাইন কমিটি।’ বুধবার আলিপুরদুয়ারের রাজাভাতখাওয়ায় কমিটির প্রথম বৈঠক হয়। সভার পরে কমিটির চেয়ারম্যান তথা বন উন্নয়ন নিগমের অধিকর্তা সম্পদ সিংহ বিস্ত বলেন, “ইকো ট্যুরিজমের সুনির্দিষ্ট বিধি তৈরির জন্য জেলাশাসক, পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, পযর্টন সংস্থা, বিধায়ক, বন দফতরের আধিকারিকদের পরামর্শ নেওয়া হবে। আগামী ২৫ অগস্ট সুকনায় ফের আলোচনায় বসে বিধি তৈরি করে অনুমোদনের রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হবে।” প্রথম সভায় কমিটির ১৩ জন সদস্যের মধ্যে পাঁচজন উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা হলেন জোয়াকিম বাকলা, পবন লাকড়া, মৃদুল গোস্বামী, অনিমেষ বসু, রবীন্দ্রপাল সাইনি। বাইরে থাকায় সভায় যোগ দিতে পারেননি আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক দেবপ্রসাদ রায়, কালচিনির বিধায়ক উইলসন চম্পামারি এবং কয়েক জন বনকর্তা। |
ছবিটি তুলেছেন নারায়ণ দে। |
উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জঙ্গলে যে ভাবে পর্যটক আবাস গড়ে উঠছে তা নিয়ে কমিটি তরফে এ দিন উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। পর্যটক আবাস এবং পর্যটকের সংখ্যা বৃদ্ধি জঙ্গল ও বন্যপ্রাণের উপরে কী প্রভাব ফেলছে সেটা খতিয়ে দেখে ইকো ট্যুরিজমের গাইড লাইন তৈরির উপরে গুরুত্ব দেওয়া হয়। কমিটির কয়েকজন সদস্য জানান, জঙ্গল এলাকায় পর্যটন নিয়ে নির্দিষ্ট বিধি না-থাকায় বনকর্মী থেকে পর্যটন সংস্থা প্রত্যেকে বিভ্রান্ত হচ্ছে। ওই সমস্যা কাটাতে সুনির্দিষ্ট বিধি তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে। ইকো ট্যুরিজম গাইড লাইন কমিটির সদস্য অনিমেষ বসু বলেন, “পর্যটনের বিষয়ে গাইড লাইন তৈরি করা জরুরি হয়ে পড়েছিল। এত দিন কোনও নিয়ম ছিল না। এ জন্য জঙ্গল ও সংলগ্ন বনবস্তি এলাকায় জটিল সমস্যার সৃষ্টি হয়। বনবস্তিগুলিতে হোম ট্যুরিজম বা পযর্টক আবাস তৈরি করতে গেলে পরিবেশের সঙ্গে ভারসাম্য বজায় রেখে তা করা উচিত। থাকার ঘর স্থানীয় প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি করতে হবে।” কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, জঙ্গল এলাকার পরিবেশ ও বন্যপ্রাণের কথা চিন্তা করে ইকো ট্যুরিজমের বিধি তৈরি করা হবে। বিধিগুলি আইনে পরিণত করার জন্য কমিটির তরফে রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন জানানো হবে। কমিটির সদস্য জোয়াকিম বাকলা ও মৃদুল গোস্বামী বলেন, “ইকো ট্যুরিজমের বিধি তৈরি হয়ে গেলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক বিকাশ ঘটবে। এ ছাড়াও জঙ্গল ও লাগোয়া বনবস্তির অনেক সমস্যা কমবে।” |