গোদের উপর বিষফোড়া। বুধবার পেট্রোলের রেকর্ড মূল্যবৃদ্ধিকে এ ভাবেই ব্যাখ্যা করছে ক্ষুব্ধ গাড়ি শিল্প। তাদের অভিযোগ, চড়া মূল্যবৃদ্ধি, আকাশছোঁয়া সুদ আর টালমাটাল অর্থনীতির কারণে এমনিতেই ধুঁকছে গাড়ি শিল্প। কমছে যাত্রীবাহী গাড়ির বিক্রি। তাই এক লাফে সাড়ে ৭ টাকা দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত আরও বেশি করে অন্ধকারে ঠেলে দেবে গাড়ি সংস্থাগুলিকে।
শুধু তা-ই নয়। শরিকি রাজনীতির বাধ্যবাধকতায় কেন্দ্র যে ভাবে শুধু পেট্রোলের দাম বাড়াচ্ছে, তা নিয়েও ক্ষুব্ধ গাড়ি শিল্প। গাড়ি সংস্থাগুলির সংগঠন সিয়ামের সিনিয়র ডিরেক্টর সুগত সেনের মতে, “যদি ডিজেলেরও দাম সামান্য বাড়ানো যেত, তা হলে এতটা বৃদ্ধির বোঝা বইতে হত না কাউকেই।” ডিজেলের দাম বাড়লে যে নিত্যব্যবহৃত পণ্যের দাম বাড়ে, তা মেনেও তাঁর যুক্তি, “পেট্রোল-চালিত গাড়ি শুধু উচ্চবিত্তরা চড়েন না। ভারতে ফি-বছর দু’চাকার গাড়ি বিক্রি হয় প্রায় ১.৩ কোটি। যার একটা বড় অংশ আবার গ্রামাঞ্চলে। ওই সব পেট্রোল-গাড়ি তা হলে চড়েন কারা?”
ক্ষোভের আরও কারণ, ডিজেলের মূল্য নিয়ন্ত্রণমুক্তির বিষয়ে কেন্দ্রের অস্বচ্ছতা। তাদের দাবি, ২৪ জুনের পর থেকে শুধু পেট্রোলের দাম বাড়িয়েছে কেন্দ্র। ডিজেল-পেট্রোলের দামে এখন ফারাক অনেক। যার জেরে পেট্রোল-গাড়ির চাহিদা কমলেও, বেড়েছে ডিজেল-গাড়ির। বাড়তি চাহিদা পূরণে লগ্নি করতে তৈরি অনেকেই। কিন্তু কেন্দ্র বাজারের হাতে ডিজেলের দাম ছাড়বে কিনা, তা স্পষ্ট হওয়ার আগে মোটা টাকা ঢালতে রাজি নয় তারা।
পরিস্থিতি কতটা সঙ্গীন, তা স্পষ্ট কয়েকটি সংস্থার কর্তাদের কথায়। জেনারেল মোটরস ইন্ডিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট পি বলেন্দ্রন জানান, “চলতি বছরে ৮-১০% বিক্রি বাড়ার আশা ছিল। এখন বিক্রি কমলেও অবাক হওয়ার নয়।” মারুতি সুজুকি ইন্ডিয়ার ম্যানেজিং এগ্জিকিউটিভ অফিসার (বিপণন) ময়াঙ্ক পারেখের মতে, “পেট্রোল ও ডিজেল গাড়ির চাহিদার ভারসাম্য আরও কমবে। ধাক্কা খাবে ছোট গাড়ি বিক্রি।” হুন্ডাই মোটর ইন্ডিয়ার ডিরেক্টর (বিপণন) অরবিন্দ সাক্সেনার মতে, “ক্রেতা বা গাড়ি সংস্থা এই মূল্যবৃদ্ধি সমস্যার মুখে ঠেলে দেবে দু’পক্ষকেই।” |