টেন্ডার ডেকে নয়া শরিক বাছল ওয়েবেল
জেলায় হার্ডওয়্যার প্রশিক্ষণ নিয়ে অচলাবস্থা
রাজ্য যখন হার্ডওয়্যার শিল্পে বিশেষ নজর দিতে উৎসাহী, ঠিক তখনই সরকারি সংস্থা ওয়েবেলের জেলায় জেলায় হার্ডওয়্যার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালানোর উদ্যোগ মুখ থুবড়ে পড়েছে। আগেই সরে গিয়েছে প্রকল্পের অন্যতম শরিক বেসরকারি সংস্থা। কিন্তু পরিকাঠামো গড়তে ঋণগ্রস্ত রাজ্যের কোষাগার থেকে ইতিমধ্যেই গলে গিয়েছে প্রায় দেড় কোটি টাকা। আপাতত প্রকল্প বাঁচাতে টেন্ডার ডেকে নয়া শরিক ঠিক করেছে ওয়েবেল।
বর্তমান সরকার প্রস্তাবিত তথ্যপ্রযুক্তি নীতিতে সফটওয়্যারের পাশাপাশি হার্ডওয়্যারের উপরেও সমান জোর দিয়েছে। লক্ষ্য, বিনিয়োগ টানা ও দ্রুত কর্মসংস্থান। একই পথে হাঁটতে চেয়েছিল বাম সরকারও। বিধানসভা নির্বাচনের মুখে ‘ডিস্ট্রিক্ট আইটি ট্রেনিং সেন্টার’ প্রকল্প তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় বিগত সরকার। মূলত হার্ডওয়্যার সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ দেওয়ার লক্ষ্যে কলকাতা বাদ দিয়ে ১৮টি জেলায় এই প্রকল্প চালু করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) মডেলে ৬০০ কোটি ডলার ব্যবসা করা এইচ সি এল টেকনোলজিস-এর সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধে রাজ্য। কিন্তু বাণিজ্যিক ব্যর্থতার কারণে এই প্রকল্প থেকে হাত ধুয়ে ফেলে এইচ সি এল। প্রকল্প একলা চালাতে পারার ক্ষমতা নেই ওয়েবেলেরও। ফলে গত বছরের শেষ থেকে কার্যত বন্ধ এই প্রকল্প। পরিকাঠামো-সহ ১১টি কেন্দ্র অকেজো পড়ে রয়েছে। কেন্দ্র পিছু রাজ্যের খরচ প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা।
২০১১-র নভেম্বরের পরিসংখ্যান বলছে, সে সময়ে ৭টি কেন্দ্র চালু ছিল। বাকিগুলি নির্মীয়মান পর্যায়ে ছিল। ছাত্র ভর্তি করে রাজ্যের ভাগে এসেছিল দু’লক্ষ টাকারও কম। প্রকল্প বাবদ আয় ও ব্যয়ের হিসেব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে প্রিন্সিপাল অ্যাকাউন্ট্যান্ট জেনারেল (অডিট)-এর অফিসও। তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পমহলের মতে, বাজারে এ ধরনের পাঠ্যক্রমের খরচ কত, তা না-দেখেই প্রকল্প শুরু করা হয়েছে। ওয়েবেল-এর অন্য ফ্র্যাঞ্চাইজিরাও তুলনায় কম খরচে এ ধরনের প্রশিক্ষণ দেয়। ফলে ‘ডিস্ট্রিক্ট আইটি ট্রেনিং সেন্টার’-এ প্রশিক্ষণ নেওয়ার চাহিদা ছিল পড়তির দিকে।
প্রকল্প নিয়ে সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন ওয়েবেল-এর বর্তমান ম্যানেজিং ডিরেক্টর প্রবীর কুমার দাস। তবে তিনি জানান সমাধানসূত্রও হাতে রয়েছে। তিনি বলেন, “ওয়েবেলের পক্ষে একলা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালানো সম্ভব নয়। মাস চারেক আগে এই কেন্দ্রগুলি চালানোর জন্য বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার কাছ থেকে দরপত্র চাওয়া হয়। তার মধ্যে টেকনো ইন্ডিয়াকে চূড়ান্ত করা হয়েছে।” কিছু দিনের মধ্যেই কেন্দ্রগুলি চালু হয়ে যাবে বলে দাবি তাঁর। পরবর্তী পর্যায়ে বাকি ৭টি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। ওয়েবেল-এর দাবি, এ বার ব্যবসায়িক সাফল্যের কথা মাথায় রেখেই শুরু করা হচ্ছে প্রকল্প।
২০১০-এর জুলাই মাসের মধ্যে এই প্রকল্পে প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করে রাজ্য। প্রথম দফায় মুর্শিদাবাদ, জলপাইগুড়ি, উত্তর দিনাজপুর, কোচবিহার ও উত্তর চব্বিশ পরগনায় তৈরি হয় প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। পরবর্তী পর্যায়ে মালদহ, নদিয়া, পুরুলিয়া ও হুগলিতে কেন্দ্র গড়ার কাজ শুরু হয়। এ জন্য বরাদ্দ করা হয় ৭৩ লক্ষ টাকা। প্রাথমিক ভাবে ব্যবসায়িক লাভ-ক্ষতির হিসেব না করে এগোলেও প্রকল্প চালু হয়ে যাওয়ার পরে ক্রমে স্পষ্ট হয়ে ওঠে ফাঁকফোকর। সরে যেতে চায় এইচ সি এল। সংস্থার পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে অবশ্য মুখ খুলতে চায়নি কেউ।
প্রকল্পের দ্বিতীয় ইনিংসে রাজ্য ঠেকে শিখতে পারল কি না, এখন সেটাই দেখার।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.