শহরে ক্যাথের বদলে ড্রাগনের উড়ান
মূল সংস্থা এখনও মুখ ফিরিয়ে, এল ‘সস্তা’র সহযোগী
মুখ ঘুরিয়ে কবেই চলে গিয়েছিল হংকংয়ের অভিজাত বিমান সংস্থা ‘ক্যাথে-প্যাসিফিক’। দীর্ঘ বিয়াল্লিশ বছর পরে এ বার কলকাতায় পা রাখতে চলেছে তাদেরই সহযোগী ‘ড্রাগন এয়ার’। একই ছাদের তলায় থেকে আন্তর্জাতিক স্তরে দূরপাল্লার উড়ান চালায় ক্যাথে। আর চিন-সহ আশপাশের দেশে ছোট রুটে চলে ড্রাগনের বিমান।
অর্থাৎ, মূল সংস্থার বদলে ফের আসছে ‘সহযোগী’।
ঘটনাটিকে উড়ান-মানচিত্রে কলকাতার ক্রমিক অবনমনেরই ছবি হিসেবে দেখছেন অনেকে। ইতিমধ্যে কলকাতাকে প্রায় ব্রাত্য করে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স জায়গা ছেড়েছে সহযোগী সংস্থা ‘সিল্ক এয়ার’কে। এয়ার ইন্ডিয়ার আন্তর্জাতিক উড়ান-তালিকাতেও কলকাতা বাদ, পরিবর্তে তার সহযোগী অ্যালায়েন্স এয়ার এখন আগরতলা-শিলচরের মতো কিছু রুটে বিমান চালায়। আর শুধুমাত্র সাধারণ শ্রেণির আসন নিয়ে যে ‘সস্তা’র বিমান সংস্থা উড়ান চালায়, সেই ‘ইন্ডিগো’ এ শহরে ভাল ব্যবসা করলেও উচ্চ শ্রেণির আসনে যাত্রীর অভাবে উড়ান তুলে নিয়ে চলে যায় লুুফত্হানসা, ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ। বিমানবন্দরের এক কর্তারও আক্ষেপ, “নামী-দামি এয়ারওয়েজগুলোর কাছে কলকাতার কদর দিন দিন কমছে।”
বস্তুত বিমান পরিবহণের ক্ষেত্রে কলকাতা যে ‘দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক’ হয়েই রয়েছে, বুধবার ড্রাগন এয়ারের কর্তার কথায় তারই ইঙ্গিত। সাংবাদিক সম্মেলনে যিনি জানিয়ে দিলেন, তাঁদের ১৫৮ আসনের বিমানে ‘বিজনেস ক্লাস’ থাকবে সাকুল্যে আটটি! ওঁদের আশা, কলকাতা-হংকং রুটে দু’দিক থেকেই চাহিদামতো যাত্রী মিলবে। তবে এই মুহূর্তে কলকাতার পুরনো টার্মিনাল থেকে তাঁরা উড়ান চালাতে নারাজ। তা হলে কী হবে?
বিমানবন্দর-কর্তৃপক্ষ ওঁদের জানিয়েছেন, নতুন টার্মিনাল অক্টোবরেই চালু হয়ে যাবে। তার পরে কলকাতা-হংকং সরাসরি উড়ান চালু করবে ড্রাগন। উল্লেখ্য, নতুন টার্মিনালের এই কাজ পুজোর আগে শেষ করতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যে চাপ দিয়ে রেখেছেন। ডিজিসিএ-র সর্বময় কর্তা ভরত ভূষণ এ দিন কলকাতায় এসে নতুন প্রকল্প-এলাকা ঘুরে দেখে বলেন, “যে ভাবে কাজ এগোচ্ছে, মনে হচ্ছে নয়া টার্মিনাল অক্টোবরে চালু হয়ে যাবে।” নতুন টার্মিনালকে তাঁর দফতর থেকেই লাইসেন্স নিতে হবে।
পাশাপাশি, ড্রাগন এয়ারের জেনারেল ম্যানেজার (দক্ষিণ এশিয়া) টম রাইটকেও প্রকল্প-এলাকা ঘুরিয়ে দেখানো হয়েছে। তাঁর কথায়, “খুব দ্রুত কাজ হচ্ছে। আমরা এখনই উড়ান চালু করতে পারতাম। কিন্তু ক’মাস পরে যাবতীয় পরিকাঠামো আবার নতুন টার্মিনালে নেওয়ার ঝক্কি নেব কেন?”
তার মানে, ৪২ বছর পরে কলকাতা-হংকং উড়ান ফের চালু হতে আর মাস চারেক। ১৯৫৩ থেকে ’৭০ পর্যন্ত কলকাতায় নিয়মিত ক্যাথে-প্যাসিফিকের উড়ান চলেছে। তার পরে পর্যাপ্ত যাত্রী না-পাওয়ার যুক্তি দেখিয়ে তারা এ শহরের পাট গোটায়। ড্রাগনও শেষ পর্যন্ত ওই পথে হাঁটবে না তো?
টমের দাবি: দু’দিকেরই বহু মানুষ এই উড়ানের জন্য মুখিয়ে রয়েছেন। অন্তত সমীক্ষা তা-ই বলছে। এখন অনেককেই দিল্লি ঘুরে যাতায়াত করতে হচ্ছে। টমের মন্তব্য, “যাত্রীর অভাব হবে না। কারণ, হংকং যেতে ভারতীয়দের ভিসা লাগে না। উপরন্তু প্রচুর বাঙালি ইদানীং হংকং বেড়াতে যাচ্ছেন।” আপাতত কলকাতা থেকে সপ্তাহে চার দিন উড়ান চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের।
কিন্তু ক্যাথে-প্যাসিফিক কেন আসছে না কলকাতায়? টম জানাচ্ছেন, হংকং থেকে চার ঘণ্টার দূরত্বের উড়ানগুলি প্রধানত ড্রাগনই চালায়। অন্যগুলো চালায় ক্যাথে। বেঙ্গালুরু ও কলকাতার বরাত ড্রাগনই পেয়েছে। ভারত-হংকং চুক্তি অনুযায়ী এত দিন ক্যাথে ও ড্রাগন মিলিয়ে সপ্তাহে ৩৫টি উড়ান চালাতে পারত। এক মাস আগে এটা সাতটি বেড়েছে। তখনই ঠিক হয়, কলকাতা থেকেও উড়বে ড্রাগন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.