সেনসেক্স ১৬ হাজারের নীচে উদ্বিগ্ন রিজার্ভ ব্যাঙ্ক
ডলারে টাকা আরও তলানিতে
উরোপীয় অর্থনীতির টালমাটাল অবস্থার জেরে বুধবারও পতনের কবল থেকে রেহাই পেল না টাকা। এই নিয়ে টানা ছ’দিন। যার মধ্যে গত তিন দিনেই ডলারে টাকা পড়েছে ১৫০ পয়সা। সেনসেক্সকেও তা টেনে নামিয়েছে ১৬ হাজারের নীচে। যা গত প্রায় চার মাসে সর্বনিম্ন। টাকার দাম এত বেশি পড়ায় আমদানির খরচ মেটাতে নাজেহাল তেল সংস্থাগুলি পেট্রোলের দাম ৭.৫০ টাকা বাড়িয়েছে।
গ্রিসকে নিয়ে দুশ্চিন্তা বেড়ে যাওয়ার কারণেই এ দিন ডলারে টাকা নেমে যায় ৫৬.২২-তে। উদ্বিগ্ন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তরফে এই বাজারে সরাসরি হস্তক্ষেপ করাটাও শাঁখের করাতের সামিল। তাই এ দিনও তারা সরাসরি ডলার বিক্রি করেনি। পরে অবশ্য রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নির্দেশে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ডলার বিক্রির ফলে টাকার দাম কিছুটা বেড়ে যায়। দিনের শেষে প্রতি ডলারের দাম দাঁড়ায় ৫৬ টাকা। যা আগের দিনের ৫৫.৩৯-র তুলনায় টাকা পড়েছে আরও ৬১ পয়সা। একই মুদ্রার বিপরীত দিকের মতোই তার প্রতিফলন পড়ে বাজারে। সেনসেক্স ৭৮.৩১ পয়েন্ট পড়ে বন্ধ হয় ১৫,৯৪৮.১০ পয়েন্টে। অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায় এ দিনও জোরের সঙ্গে দাবি করেন, এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার মতো শক্তি ভারতীয় অর্থনীতির আছে। টাকা এবং সমান্তরাল ভাবে সূচকের পতনের জন্য বিশেষজ্ঞরা যে সমস্ত কারণকে দায়ী করেছেন, তার মধ্যে রয়েছে:
• টাকার দাম কমতে থাকায় ডলারের হিসেবে বিদেশি লগ্নিকারীদের আয়ও নিম্নমুখী। লগ্নির মাধ্যম হিসেবে ডলারকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন তাঁরা।
• ভারতে শেয়ার বেচে লগ্নি ফেরাচ্ছেন বিদেশিরা।
• ১৭ জুনের ভোটে গ্রিস শেষ পর্যন্ত ইউরোপ থেকে বেরিয়ে যেতে পারে বলে নতুন করে ইঙ্গিত মিলেছে। এতে গ্রিসকে দেওয়া ত্রাণের অর্থ ফেরত পাওয়া নিয়ে সংশয় রয়েছে ইউরোপের।
কেন্দ্রীয় সরকার ও রফতানিকারীদের পক্ষে অবশ্য রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে হস্তক্ষেপের জোরালো দাবি উঠেছে। অন্য দিকে, বিশ্ব বাজারের পরিস্থিতির কারণেই পড়তে থাকা টাকার দামে হস্তক্ষেপ করলে বাজারের স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হবে বলেই কিছুটা শঙ্কিত শীর্ষ ব্যাঙ্ক। সংশ্লিষ্ট মহলের ইঙ্গিত ডলার বিক্রির মাধ্যমে টাকার দাম বাড়াতে উদ্যোগী হলে ইতিমধ্যেই কমতে থাকা বৈদেশিক মুদ্রার ভাঁড়ারে আরও টান পড়বে।
তবে কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী আনন্দ শর্মা বলেছেন, “টাকাকে টেনে তুলতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে হস্তক্ষেপ করতেই হবে।” রফতানিকারীদের সংগঠন ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান এক্সপোর্ট অর্গানাইজেশন্স-এর দাবি, “দুর্বল টাকাকে বাঁচাতে কড়া সিদ্ধান্ত নিয়ে হবে আরবিআইকে।” সংগঠনের প্রেসিডেন্ট রফিক আহমেদ বলেছেন, তেল সংস্থাগুলিকে সরাসরি ডলার বিক্রি করা উচিত আরবিআইয়ের। তা হলে তেল সংস্থাগুলি আর বাজার থেকে ডলার কিনবে না।
এ দিকে, ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রাক্তন ডিরেক্টর বিনয় কুমার অগ্রবাল মনে করেন, ভারতের শেয়ার বাজার আরও পড়বে। তিনি বলেন, “টাকার দাম না বাড়া পর্যন্ত বাজারের হাল ফেরার সম্ভাবনা আছে বলে মনে হয় না। তাই অন্তত আগামী মাস তিনেকের আগে বাজারের হাল ফেরার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।” মাসখানেকের মধ্যেই বাণিজ্য ঘাটতি, আর্থিক বৃদ্ধির নতুন তথ্য প্রকাশিত হবে। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, ওই সব তথ্য সূচকের মুখ আরও নীচে নামাতে পারে।
পতন
১ ডলারে
টাকার দাম
দিন টাকা
৫৪.৪৭ (+২ পয়সা)
৫৪.৪২ (+৫ পয়সা)
৫৫.০৩ (-৬১ পয়সা)
৫৫.৩৯ (-৩৬ পয়সা)
৫৬.০০ (-৬১ পয়সা)
তথ্যসূত্র: পিটিআই



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.