নিজস্ব সংবাদদাতা • সিউড়ি |
ময়ূরাক্ষী নদীর তিলপাড়া জলাধারের সঙ্গে যুক্ত সেতুর উপরে একটি ট্রাকের যত্রাংশ (গোল্লা) ভেঙে যাওয়ায় প্রায় ১০ ঘণ্টা ধরে যানজট তৈরি হয়েছে মোরগ্রাম-রানিগঞ্জ ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে। বুধবার বিকেল প্রায় সাড়ে ৪টা নাগাদ ওই ট্রাকটিকে সরিয়ে দেওয়ার পরে যানচলাচল ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা-৭টা নাগাদ সিউড়িগামী একটি পাথরবোঝাই ট্রাকের যত্রাংশ ভেঙে যায়। এর জেরে সেতুর দু’প্রান্তে ট্রাক, বাস-সহ সমস্ত রকমের গাড়ি সার দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে। খানাখন্দে ভরা সেতুর এক পাশ দিয়ে কোনও রকমে একটি করে গাড়ি পারাপার করাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে পুলিশকে। প্রচণ্ড গরমে সব চেয়ে খারাপ অবস্থা দূরপাল্লার বাস যাত্রীদের। গাড়ি চালক থেকে সাধারণ যাত্রী এমনকী পুলিশকর্মীরাও এই অবস্থার জন্য রাস্তার বেহাল অবস্থাকেই দুষছেন। |
সিউড়িতে তিলপাড়া ব্যারাজের রাস্তায় যানজট। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়। |
যদিও জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের দাবি, রাস্তার এই অবস্থার জন্য দায়ী ওভারলোডিং। ইঞ্জিনিয়র বঙ্কিমচন্দ্র সরকার বলেন, “খুব শীঘ্রই সেতু-সহ রাস্তার খানাখন্দ মেরামতির কাজ শুরু হবে।”
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, জাতীয় সড়কের তুলনায় সেতুটি চওড়ায় কম। কোনও রকমে আপ-ডাউনে একটি করে গাড়ি যাতায়াত করতে পারে। সেতুর উপরে গাড়ি খারাপ হলে তো আর রক্ষা নেই। মঙ্গলবারও ঠিক তাই হয়েছে। সেতুর মাঝামাঝি ট্রাকের যত্রাংশ ভেঙে যাওয়ায় এই সমস্যা তৈরি হয়। বুধবার সকালে গিয়ে দেখা গেল, সেতুর দু’প্রান্তে সারি ভাবে গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে। অনেক দূর পর্যন্ত গাড়ির লাইন চলে গিয়েছে। চোখে পড়ছে না। সেতুর দক্ষিণপ্রান্তে সিউড়ি থানার পুলিশ এবং উত্তর প্রান্তে মহম্মদবাজার থানার পুলিশ দাঁড়িয়ে এক একটি করে পার করে দিচ্ছেন। ৮-১০টি করে গাড়ি এক বার ওদিক থেকে এক বার এ দিক থেকে ছাড়া হচ্ছে। কিন্তু তা যথেষ্ট নয়। যতই বেলা বাড়ছে গাড়ির লাইনও বাড়ছে। আর গরমে হাঁসফাঁস করছেন চালক, সাধারণযাত্রী সকলেই। জেলা পুলিশ সুপার হৃষিকেশ মিনা বলেন, “দূরপাল্লার বাস-সহ পাথর বোঝাই গাড়িগুলি অন্য পথে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। পাথর খালি করে ক্রেন দিয়ে ট্রাকটিকে সরানো হয়েছে।”
এ দিকে, মালদহের দিক থেকে আসা ট্রাক চালক রাজীব সিংহ, আকবর হোসেন, পরেশ রায়রা বলেন, “দুর্গতির শেষ নেই। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। গরমে প্রাণ যায় যায় অবস্থা। গাড়ি ছেড়ে যে কোথাও গিয়ে বিশ্রাম নেব তার উপায় ছিল না।” একই অবস্থা দুবরাজপুরের দিক থেকে আসা ট্রাক চালক রশিদ খান, গোলাম শেখ, বাবু পাণ্ডাদেরও। মালদহগামী একটি বাসের চালক বলেন, “ঘণ্টা দুই-তিন দাঁড়িয়ে থাকার পরে পুলিশের সহায়তায় সাঁইথিয়া হয়ে যেতে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে।” ওই বাসের যাত্রী মৌসুমী বন্দ্যোপাধ্যায়, নির্মল সরকার, হাসিব শেখরা বলেন, “গরমে প্রাণ বেরিয়ে যাচ্ছিল। গাড়ি চলতেই বাঁচলাম।” |