এক-লাখি ঘর না পাওয়ায় ক্ষোভ
রিমপুর ছায়াপল্লি এলাকা। আলপথে হেঁটে ওই এলাকার একটি নির্মীয়মাণ বাড়ির কাছাকাছি পৌঁছে দেখা গেল মূল বাড়ির দেওয়ালের গায়ে আরও দু’টি বাড়ি রয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, নির্মীয়মাণ বাড়িটি রসুল্যা বিবির। দু’বছর আগে বস্তি উন্নয়ন প্রকল্পে পুরসভা রসুল্যা বিবির নামে ঘর নির্মাণ করে দেয়। কিন্তু তৈরি করে দেওয়া ঘরের নম্বর বর্তমানে মুছে ফেলা হয়েছে।
একটু এগোলেই পড়বে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী মমতাজ খাতুনের বাড়ি। ওই প্রকল্পে বাড়ি মমতাজ খাতুনের বাড়ির নম্বর ২৫০। তিনি বললেন, “দু’বছর পুরসভা ঘর করে দিয়েছিল। প্রার্থী হওয়ায় পুরপ্রধান আমাদের ওয়ার্ডে এসেছিলেন। ঘরের ভগ্নদশা ও ফাটল দেখালাম। ভোটের পরে তা সারিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।”
এ ভাবে তৈরি হওয়া ঘরকে নিয়ে বিতর্ক।
কিন্তু বর্তমানে মমতাজ খাতুনের একলাখি বাড়ি এখন চার কামরার। ঘরের মধ্যে গ্রিল দেওয়া রয়েছে, কাঁচের জানলাও আছে। শুধু মমতাজ খাতুন বা রসুল্যা বিবি নন, এলাকা ঘুরে দেখা গেল, এরকম আরও অনেকে ঘর পেয়েছেন। বাসিন্দাদের অভিযোগ, যাঁরা প্রকৃত প্রাপক তাঁরা ঘর আজও পাননি। যদিও বিদায়ী কাউন্সিলর কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যাওয়া আলিয়া বিবির দাবি, “দুঃস্থ দেখে ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়েছিল। পরে অবস্থা ভাল হলে কেউ নতুন করে ঘর তৈরি করেন, তা হলে আমাদের কিছু করার নেই।”
অন্য দিকে, এলাকায় ঘোরার সময়ে করিমপুরে একটি ‘পুকুর’ বুজিয়ে এলাকার তৃণমূল কর্মী বাড়ি নির্মাণ করছে বলে অভিযোগ শোনা গেল। গিয়ে দেখা গেল, মানুষের ব্যবহার্য ‘পুকুরটি’ প্রায় অর্ধেক বুজিয়ে বাড়ি তৈরির কাজ প্রায় শেষ। ওই তৃণমূলকর্মীর দাবি, “এটা পুকুর নয়, ডোবা। তাও আবার নিজস্ব সম্পত্তি।”
এই ওয়ার্ড আগে ১৪ নম্বর ছিল। ২০০৭ সালে গণনার দিন প্রথম দিকে ফব ৮টি ভোটে এগিয়েছিল। ৯টি ভোট বাতিল হয়েছিল। কংগ্রেস দাবি করে, ওই ৯টি ভোট ওদের। পরে পুনর্নিবার্চনে কংগ্রেস ৬টি ভোটে জয়ী হয়। এ ছাড়া, বিধানসভা ভোটে ফব প্রার্থী এই ওয়ার্ডে ৪৮১টি ভোট পায়। ফব-র দাবি, এই ওয়ার্ডে এ বার তাদের মর্যাদার লড়াই। আবার এই ওয়ার্ডে প্রার্থী হয়েছেন বিদায়ী পুরপ্রধান বিপ্লব ওঝা।
করিমপুর গ্রাম নিয়েই ১৩ নম্বর ওয়ার্ড। এর উপর দিয়ে ২, ৫ ও ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে যাওয়া যায়। প্রায় দেড় কিমি এই রাস্তার অর্ধেক করিমপুরের মধ্যে পড়ে। সংস্কারের অভাবে রাস্তাটির জায়গায় জায়গায় খানাখন্দে ভরে গিয়েছে। গাড়ি নিয়ে যাতায়াত করা বিপদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুধু তাই নয় রাস্তার দু’ধারে নিকাশি নালা নির্মাণের দাবি বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের হলেও তা পূরণ হয়নি। ফলে বর্ষাকালে ওয়ার্ডের জল রাস্তার উপরে জমে যায়। আলিয়া বিবির যুক্তি, “এখানে নিকাশি নালা খুব প্রয়োজন নেই। কারণ এলাকাটি উঁচু। তাই জল নীচের দিকে বয়ে গিয়ে ২ নম্বর ওয়ার্ডে সহজেই পড়ে।” এই করিমপুরের মধ্য দিয়ে চলে গিয়েছে বর্ধমান-সাহেবগঞ্জ লুপলাইন। এই রেললাইন পেরিয়ে করিমপুর প্রাথমিক স্কুলে যেতে হয়। স্কুলের সামনের রাস্তা সংস্কারের প্রয়োজন। অথচ স্কুল লাগোয়া কমিউনিটি হলটি এলাকার একটি ‘পুকুরের’ পাড়ে করা হয়েছে। যার পিলার ‘পুকুরের’ জায়গায় করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, স্কুল লাগোয়া লেটপাড়া এলাকায় সব নিকাশি নালা খোলা। পানীয় জলের সংযোগ খুবই কম। এলাকার এক বাসিন্দা অনাদি দাস বললেন, “এক বছর ধরে অসুখে ভুগছি। চিকিৎসক অস্ত্রোপচার করতে হবে বলে জানিয়েছেন। রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনায় কার্ড আছে। খোঁজ করতে গিয়ে দেখি, আমার কাছে টাকা নেই।” আর এক বাসিন্দা নমিতা লেটের ক্ষোভ, “বাড়ির উপরে ত্রিপলের ছাউনি রয়েছে। গরিব মানুষের জন্য ঘর পাওয়া গেল না। অথচ অবস্থাপন্নরা ঘর পেয়েছেন!”
নজরে নলহাটি
ওয়ার্ড ১৩
• হাইড্রেন হয়নি। নিকাশি নালা খোলা।
২, ৫, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে যাওয়ার রাস্তা সংস্কার হয়নি।
•পথবাতি মাঝে মাঝে জ্বলে না।
• অপরিকল্পিত ভাবে রাস্তা করায় দ্রুত বেহাল হয়ে পড়ে।

রাস্তাঘাট, নিকাশির উন্নতি হয়নি। কাউন্সিলর
নিজেদের লোককে কাজ পাইয়ে দিয়েছেন। টেন্ডার
ডাকার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতার আভাব আছে।
হাসিবুল রহমান,

এলাকার মানুষের জন্য অনেক
কাজ করেছি। রাস্তাঘাট, বিদ্যুৎ, নিকাশি
নালার কাজও করেছি।
আলিয়া বিবি,

ছবি: সব্যসাচী ইসলাম।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.