| নিজস্ব সংবাদদাতা • দুর্গাপুর |
এমএএমসি কারখানা থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনী তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে যৌথ ভাবে জাতীয় সড়ক অবরোধ করল কয়েকটি শ্রমিক সংগঠন। বুধবার সকালে ২ নম্বর জাতীয় সড়কে এই অবরোধ হয়। আধ ঘণ্টা ধরে চলা অবরোধের জেরে রীতিমতো যানজট হয় ওই রাস্তায়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।
বন্ধ হয়ে পড়ে থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানা ‘মাইনিং অ্যান্ড অ্যালায়েড মেশিনারি কর্পোরেশন’ (এমএএমসি) থেকে ২৫ মে সিআইএসএফ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। সেই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে এ দিন সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ যৌথ ভাবে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে আইএনটিইউসি, এআইটিইউসি এবং আইএনটিটিইউসি। আইএনটিইউসি নেতা অসীম চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, “এক বার সিআইএসএফ চলে গেলে কারখানায় দেদার চুরি শুরু হয়ে যাবে।
তখন এই কারখানা আর আদৌ চালু হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় দেখা দেবে।” আইএনটিটিইউসি নেতা শঙ্করলাল চট্টোপাধ্যায় বলেন, “অভিজ্ঞতায় দেখেছি, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিওজিএল, এইচএফসিএলের নিরাপত্তার দায়িত্বভার বেসরকারি হাতে যাওয়ার পরেই ব্যাপক চুরি শুরু হয়। |
| ২ নম্বর জাতীয় সড়কে বিক্ষোভ। বুধবার সকালে তোলা নিজস্ব চিত্র। |
সিআইএসএফ চলে গেলে এমএএমসির-ও একই হাল হবে বলে আমরা মনে করি।” সিআইএসএফ প্রহরার মেয়াদ বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন এআইটিইউসি নেতা স্বপনকুমার বিশ্বাসও।
১৯৬৫ সালে চালু হয় এমএএমসি। খনির কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন যন্ত্রপাতি তৈরি হত এই কারখানায়। ১৯৯২ সালে তা বিআইএফআর-এ চলে যায়। ২০০১ সালের ৫ অক্টোবর কারখানা বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়। ২০১০ সালের ১১ জুন তিন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা কোল ইন্ডিয়া লিমিটেড (সিআইএল), দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন (ডিভিসি) এবং ভারত আর্থ মুভার্স লিমিটেডের (বিইএমএল) কনসর্টিয়াম হাইকোর্টে নিলামে সর্বোচ্চ দর দিয়ে কারখানার দায়িত্ব পায়। গত অগস্টে কনসর্টিয়ামের হাতে কারখানার চাবি তুলে দেন লিক্যুইডেটর। এর পরেই কারখানা থেকে ধাপে ধাপে সিআইএসএফ তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু শ্রমিক সংগঠনগুলির চাপে তা এখনও কার্যকর করতে পারেনি তারা। কারখানার বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে সিটু আলাদা ভাবে আন্দোলন করে থাকে। তবে আইএনটিইউসি, এআইটিইউসি এবং আইএনটিটিইউসি বরাবর যৌথ ভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি নেয়। এ দিনও যৌথ ভাবেই জাতীয় সড়ক অবরোধের কর্মসূচি নেয় তারা। তৃণমূল নেত্রী বন্ধ-অবরোধের রাজনীতিকে সমর্থন না করার কথা বারবার বললেও দলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি দুর্গাপুরে এ দিন জাতীয় সড়ক অবরোধে সামিল হয়। আইএনটিটিইউসি নেতা শঙ্করলালবাবুর অবশ্য দাবি, এ দিনের অবরোধ কর্মসূচির সঙ্গে সংগঠনের কোনও যোগ নেই। তাঁর কথায়, “প্রাক্তন শ্রমিক হিসেবে কারখানা বাঁচানোর লড়াইয়ে বরাবর রয়েছি। এ দিনও ছিলাম। কেউ কেউ দলীয় ঝান্ডা নিয়ে গিয়ে থাকতে পারেন। কিন্তু এটি দলীয় বা সাংগঠনিক কোনও কর্মসূচি ছিল না।” এ দিন মিনিট দশেকের জন্য প্রতীকী অবরোধ করা হয়েছিল বলেও দাবি করেন তিনি। |
