বিন্দোলে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি রুদ্রনাথের
‘অভাবের তাড়নায়’ পাচার চক্রের ফাঁদে দিয়ে যাঁরা কিডনি বিক্রি করেছেন, তাঁদের আর্থিক সাহায্য করার কথা ভাবছে রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার রায়গঞ্জের বিন্দোল গ্রামে গিয়ে বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলার পরে এ কথা জানান রাজ্য বিধান সভার স্বাস্থ্য বিষয়ক স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান তথা শিলিগুড়ির বিধায়ক রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “বাম আমলে বিন্দোলের জালিপাড়া এলাকার মাছচাষিরা সরকারি সাহায্য পাননি। অভাবের তাড়নায় কেউ চিকিৎসার খরচ জোটাতে, কেউ বাড়ি তৈরি করার জন্য, কেউ মেয়ের বিয়ে দেওয়ার জন্য দালালদের প্রস্তাবে রাজি হয়ে কিডনি বিক্রি করেছেন। স্বাস্থ্য দফতর সক্রিয় থাকলে কিডনি বিক্রির ঘটনা ঘটত না। যারা ইতিমধ্যেই কিডনি বিক্রি করেছেন তাঁদের পরিবারকে দ্রুত আর্থিক সাহায্য দেওয়ার বিষয়ে রাজ্য সরকার চিন্তাভাবনা করছে।” বিন্দোলের ওই গ্রামের অন্তত ৩০ জন বাসিন্দা নানা সময়ে কিডনি বিক্রি করেছেন বলে সরকারের কাছে খবর পৌঁছেছে। এক মাস আগেও কিডনি পাচার চক্রে জড়িত সন্দেহে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতারের পরে ফের বিন্দোলের নাম প্রকাশ্যে আসে। তার পরেই সরকারি তরফে খোঁজখবর শুরু হয়।
ছবিটি তুলেছেন তরুণ দেবনাথ।
সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাদ্যায় বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তার পরেই রুদ্রনাথবাবুকে সরেজমিনে এলাকা পরিদর্শন করে রিপোর্ট দেওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ দিন রুদ্রনাথবাবুর সঙ্গে ওই এলাকায় যান কমিটির অপর সদস্য তথা গোয়ালপোখরের কংগ্রেস বিধায়ক গোলাম রব্বানি, রায়গঞ্জের কংগ্রেস বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্ত, ইটাহারের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক অমল আচার্য, উত্তর দিনাজপুরের ভারপ্রাপ্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অজয় চক্রবর্তী, রায়গঞ্জের বিডিও সুব্রত পাল সহ প্রশাসনিক কর্তারা। সেখানে গিয়ে বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে তাঁরা জানতে পারেন, জালিপাড়া এলাকায় মোট দেড়শো পরিবারের বসবাস। বাসিন্দার সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার। তাঁরা বেশির ভাগই মাছচাষ করে সংসার চালান। যারা ইতিমধ্যেই কিডনি বিক্রি করেছেন তাঁদের কয়েকজনের সঙ্গে এদিন কথা বলেন রুদ্রনাথবাবু। এর পরে রুদ্রনাথবাবু অভিযোগ করে বলেন, “গত ৩৪ বছরের বাম আমলে জালিপাড়ার বাসিন্দারা সরকারি সাহায্য পাননি বলেই দুর্দশা বেড়েছে। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীর অভাবে এলাকার একমাত্র প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র বেহাল হয়ে পড়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে একটি রিপোর্ট জমা দেব। তিনিই যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেবেন।” ২০০৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে ফ্রন্টকে হারিয়ে এলাকার পঞ্চায়েত দখল করে কংগ্রেস। বর্তমান গ্রাম পঞ্চায়তের উপপ্রধান মনসুর আলি বলেন, “বামফ্রন্ট পঞ্চায়তের ক্ষমতায় থাকলেও জালিপাড়া এলাকার বাসিন্দারা কোনও সরকারি সুবিধা পাননি। আমরা ক্ষমতায় আসার পর এলাকায় ১০০ দিনের প্রকল্পের কাজ শুরু করেছি। তবে প্রশাসনের অসহযোগিতার জেরে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করতে দেরি হচ্ছে।” উত্তর দিনাজপুর জেলা বামফ্রন্টের সচিব অপূর্ব পাল বলেন, “রুদ্রনাথবাবুরা ক্ষমতায় এসে উল্টোপাল্টা কথা বলছেন। বাম আমলে অনুন্নয়নের কোনও অভিযোগ ওঠেনি। তৃণমূল ও কংগ্রেসের জোট সরকারের এক বছরের ব্যর্থতা ঢাকতেই আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে অপপ্রচারে নেমেছে। দালালচক্র যাতে বাসিন্দাদের টাকার প্রলোভন দেখিয়ে কিডনি বিক্রি করাতে না পারেন রুদ্রনাথবাবুদের সেই দিকেই প্রথমে নজর দেওয়া উচিত।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.