ভিটেমাটি-সহ সামান্য যেটুকু জমি ছিল, স্বামীর মৃত্যুর পর দুই মেয়ের বিয়ে দিতে তাঁর পুরোটাই বিক্রি করে দিতে হয়। এক ছেলে পাঁচ বছর আগে বাড়ি থেকে চলে গিয়েছে। তাঁর কোনও খোঁজ নেই। অন্যের দেওয়া জমিতে সামান্য কুঁড়ে ঘর বেঁধে অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন এক ৬৫ বছরের এক বৃদ্ধা। সুধারানি মণ্ডল নামে ওই বৃদ্ধার বাড়ি আলিপুরদুয়ার-২ ব্লকের টটপাড়া-১ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার উত্তর মজিদখানা গ্রামে। কিছুদিন পরিচারিকার কাজ করে ক্ষুণ্ণবৃত্তির চেষ্টা করেছিলেন। অসুস্থ হয়ে পড়ার পরে এখন আর শরীর চলে না। প্রতিবেশীরা দিলে খাবার জোটে না-হলে অভুক্তই থাকতে হয় সুধারানি দেবীকে। বিপিএল তালিকাতেও নাম থাকলেও বার্ধক্য ভাতা বা বিধবা ভাতা তিনি পান না। সহায় প্রকল্পেও তাঁর নাম নেই। |
এলাকার বিডিও সৌমেন মাইতি বলেন, “সরকারি এত প্রকল্প রয়েছে। তাই অর্ধাহারে অনাহারে কারও থাকার কথা নয়। কেন ওই বৃদ্ধা কোনও সরকারি সুবিধে পান না সেই ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য মাধবী রায়ের দাবি, বার্ধক্য ভাতার জন্য দেড় বছর আগে সুধারানি দেবীর নাম পাঠানো হয়েছে। এখনও অনুমোদন আসেনি। তিনি বলেন, “তা ছাড়া সহায় প্রকল্পের নতুন তালিকায় যাতে সুধারানি দেবীর নাম তোলা যায় সেটা দেখা হচ্ছে।” পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য নরেশ রায় বলেন, “বৃদ্ধার নিজস্ব জমি নেই, তাই ‘চাষ ও বসবাস’ প্রকল্পের জন্য ওই বৃদ্ধার নাম পাঠানো হয়েছে। কয়েকবার জিআর-এর চাল দেওয়া হয়েছে। বার্ধক্য ও বিধবা ভাতার জন্য নাম পাঠানো হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনও অনুমোদন মেলেনি।” বৃদ্ধা সুধারানি দেবী জানান, কেউ খাবার দিলে খাই, না দিলে খাই না। সবাই বিডিও অফিসে যেতে বলেন। পঞ্চায়েতরা সবাই আমার অবস্থা জানেন। তাও কোনও কিছুই পাই না। পেটে খাবার নেই। অতটা পথ হেঁটে যাওয়ার শক্তিও নেই।” টটপাড়া-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শিউলি রায়ের অভিযোগ, বিপিএল তালিকাটাই গলদে ভরা। তাই বহু অসহায় দরিদ্ররা সরকারি প্রকল্পের সুবিধা থেকে বঞ্চিত। তিনি বলেন, “বৃদ্ধা যাতে সরকারি সুবিধে পান সেটা দেখব।” |