সিটুর জেলা সম্পাদক অজিত সরকারের ছেলে অচিন্ত্যবাবু তাঁর নিয়ন্ত্রিত বাজারের হোটেলটি শ্রম দফতরেও নথিভুক্ত করাননি বলে অভিযোগ উঠেছে। এই ব্যাপারে তদন্তে নেমেছে শ্রম দফতর। দফতরের সহকারী শ্রম কমিশনার পার্থ বিশ্বাস বলেন, “নিয়ন্ত্রিত বাজারের ওই হোটেল সম্পর্কে অভিযোগ মিলেছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ শ্রম দফতরের শপ অ্যান্ড এস্টাব্লিশমেন্ট অ্যাক্ট অনুসারে হোটেল খোলার ক্ষেত্রে শ্রম দফতরে নথিভুক্ত করা বাধ্যতামূলক। এমনকী, হোটেলে কতজন কর্মচরী রয়েছেন এবং তাঁদের বেতন-সহ অন্যান্য কী কী সুবিধা দেওয়া হয় তাও শ্রম দফতরকে জানাতে হবে। অচিন্ত্যবাবু কিছুই করেননি বলে অভিযোগ। ওই অভিযোগ অচিন্ত্যবাবু অস্বীকার করেননি। তবে তাঁর দাবি, “কয়েক বছর তো হল হোটেল খুলেছি। হোটেলটা ভাল ভাবে দাঁড়িয়ে গেলে হয়তো শ্রম দফতরের নথিভুক্ত করাতাম। তা ছাড়া আমার হোটেলে কোনও স্থায়ী কর্মচারী নেই। ঠিকা শ্রমিক দিয়ে চালানো হয়। প্রতিদিনই মজুরির টাকা দেওয়া হত। মহকুমা প্রশাসন যেদিন তল্লাশি চালায় সেদিন তো মাত্র একজন কর্মচারী ছিল।” সম্প্রতি শিলিগুড়ি মহকুমা প্রশাসন ওই হোটেলে তল্লাশি চালানোর সময়ে বাড়িতে ব্যবহারের জন্য নির্দিষ্ট রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার আটক করে। বেআইনি ভাবে রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার ব্যবহারের অভিযোগে অচিন্ত্যবাবুকে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইনে গ্রেফতার করা হয়। ট্রেড লাইসেন্স, ফুড ও ফায়ার লাইসেন্সও না-মেলায় হোটেলটি সিল করে দেওয়া হয়। মঙ্গলবারও বন্ধই ছিল ওই হোটেল। জেলার অন্যতম প্রবীণ ট্রেড ইউনিয়ন নেতার পরিবারের হোটেল কী ভাবে ট্রেড লাইসেন্স ছাড়াই চলছিল তা খতিয়ে দেখার দাবি তুলেছেন নিয়ন্ত্রিত বাজারের ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে, সম্প্রতি নিয়ন্ত্রিত বাজারে তিনি ছোট গাড়ির পার্কিং নিয়ে আন্দোলন করাতেই প্রশাসন প্রতিহিংসাবশত অচিন্ত্যবাবুর হোটেলে তল্লাশি চালায় বলে অভিযোগ করেছেন সিটুর দার্জিলিং জেলা সম্পাদক অজিতবাবু। প্রশাসন ওই অভিযোগ উড়িয়ে দিলেও বাবার কথায় সায় দিয়েছেন অচিন্ত্যবাবু। তিনি দাবি করেন, “গত এক বছরে কয়েকবার পুরসভায় ট্রেড লাইসেন্সের জন্য গিয়েছি। সেখানে নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতির ‘নো অবজেকশন’ দাবি করা হয়। বাজার সমিতির আধিকারিকেরা তা আমায় দেননি। সেই কারণেই ট্রেড লাইসেন্স করা হয়নি।” নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতির কর্তারা অবশ্য ওই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। বাজার সমিতির এক আধিকারিক বলেন, “ট্রেড লাইসেন্সের সঙ্গে বাজার সমিতির কোনও সম্পর্ক নেই। নিয়ন্ত্রিত বাজারে যিনি বা যাঁরা ব্যবসা করছেন তাঁদের জমি সংগ্রহের ক্ষেত্রে বৈধ অনুমতি রয়েছে কি না সেটাই দেখা হয়।” এদিকে, ছোট গাড়ির পার্কিং নিয়ে এদিনও নিয়ন্ত্রিত বাজারে উত্তেজনা ছিল। নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতির কর্মী ও আধিকারিকেরা বেআইনি পার্কিং সরাতে গেলে কিছু লোক উত্তেজনা তৈরির চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। কর্মী ও আধিকারিকদের চেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়ন্ত্রিত বাজারে ছোট তিন ও চার চাকার গাড়ির পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হলে সিটু আপত্তি জানায়। মহকুমাশাসক বৈভব শ্রীবাস্তব সমস্যা মেটাতে ফের সিটু-সহ সংশ্লিষ্ট পক্ষকে বৈঠকে ডেকেছেন। |