দফতরের কাজ হয় না। অথচ প্রায়ই দেখা যায়, কেন্দ্রীয় সরকারের পাঠানো টাকা ফেরত চলে যাচ্ছে। এ বার সেই টাকা ফেরত যাওয়া আটকাতে কড়া মনোভাব নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তাঁর সাফ কথা, উন্নয়ন খাতে কেন্দ্রের দেওয়া টাকা খরচ না-হয়ে ফেরত গেলে সংশ্লিষ্ট দফতরের মন্ত্রীরাই দায়ী থাকবেন। মঙ্গলবার কৃষি, কৃষি বিপণন, সমবায়, উদ্যান ও মৎস্য দফতরের মন্ত্রী ও সচিবদের বৈঠকে এ কথা জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
ওই পাঁচটি দফতরের কাজ এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে বৈঠকে সবিস্তার পর্যালোচনা হয়। কৃষিপণ্য উৎপাদনের সঙ্গে তার বিপণনের ব্যবস্থার উপরেও গুরুত্ব দেন মুখ্যমন্ত্রী। কৃষি উৎপাদন এবং সেই সংক্রান্ত প্রকল্প রূপায়ণের জন্য কৃষিসচিবকে আহ্বায়ক করে একটি কমিটি গঠন করে দেন তিনি। মমতা ওই বৈঠকেই মৎস্যমন্ত্রী আবু হেনাকে বলেন, “অনেক মৎস্য সমবায়ে মৎস্যজীবী সেজে অনেকেই যুক্ত হয়ে যাচ্ছেন। অথচ আসল মৎস্যজীবীরা সেখানে জায়গা পাচ্ছেন না। শুধু প্রকৃত মৎস্যজীবীরাই যাতে ওই সব সমবায়ে জায়গা পান, সেটা দেখুন।”
কৃষিমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য পরে জানান, কৃষকদের কাছে উন্নত মানের বীজ ও যথাযথ ব্যবস্থাপনায় সার পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা আগেই ১২টি কিষান মান্ডি গড়ার কথা ঘোষণা করেছেন। সেই ১২টি তো বটেই, সারা রাজ্যে মোট ৬২টি কিষান মান্ডি তৈরির বিষয়টিও ওঠে বৈঠকে। কিন্তু কিষান মান্ডি তৈরির জমি আসবে কোথা থেকে? এই প্রশ্নের উত্তরে কৃষিমন্ত্রী বলেন, “যেখানে কৃষি দফতরের বীজ খামার আছে, কিষান মান্ডি তৈরির জন্য সেখান থেকে জমি দেওয়া যেতে পারে।’’ রবীন্দ্রনাথবাবু জানান, সিঙ্গুর বাজারেই একটি কিষান মান্ডি তৈরির জন্য তিনি ইতিমধ্যেই কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপ রায়কে প্রস্তাব দিয়েছেন। সিঙ্গুর বাজারে একটি সরকারি হিমঘর আছে। সরকার কিনে নেওয়ার পরে সেটি এখনও চালুই হয়নি।
এক হাজার টাকা করে ভাতা এবং দু’টাকা কিলোগ্রাম দরে চাল দেওয়ার ঘোষণায় সিঙ্গুরের অনিচ্ছুক কৃষক ও খেতমজুরেরা খুশি বলে মন্তব্য করেন কৃষিমন্ত্রী। সেই সঙ্গেই তিনি বলেন, “যে-সব অনিচ্ছুক চাষি জমি দিতে বাধ্য হওয়ার পরে প্রায় ছ’বছর ধরে কিছু পাচ্ছেন না, তাঁদের মনে ক্ষোভ আছে। সেটাই স্বাভাবিক। তবে সেই ক্ষোভ আমাদের বিরুদ্ধে নয়।” |