রাত নটা বাজতেই ঠেলাঠেলি তেলেভাজার দোকানে। বেগুনি বা আলুর চপ নয়, ফুলুরির কদরই এখন সব থেকে বেশি। ছোট-বড়-মশলা দেওয়া নানা ধরনের ফুলুরি বিকোচ্ছে রমরমিয়ে। কিন্তু এই প্রচন্ড গরমে হঠাৎ এত ফুলুরি প্রীতি কেন? ফুলুরি ভাজতে ভাজতেই উত্তর দিলেন দোকানদার রামু সাহা। বললেন, “এই গরমে রাতের বেলা পান্তা ভাতই পছন্দ করে সবাই। আর তার সঙ্গে দারুন জমে ফুলুরি। ভাত, কাঁচা পেঁয়াজ, লঙ্কা আর সরষের তেল-ব্যাস।”
দিন ভর কাঠফাটা রোদ্দুর। দেখা নেই বৃষ্টির। গরমের সঙ্গে পাল্লা দিতে তাই খাবারের আয়োজনও বদলাচ্ছে বাড়িতে বাড়িতে। অনেক বাড়িতেই এখন রোজ রাতের পাতে পান্তাভাত। বিশেষ করে যারা চড়া রোদে কাজ করেন তাঁরা জানাচ্ছেন, সারাদিনের ক্লান্তির পরে জল ঢালা পান্তাই খাচ্ছেন নিয়ম করে। কমেছে রুটির বিক্রিও।
বাধ সেধেছে শাক সবজির আকাশছোঁয়া দাম। এ বছর দাম কমেনি গ্রীষ্মকালীন সব্জিরও।
চাষিদের অভিযোগ, সবজির দাম বাড়ছে ফড়েদের মধ্যস্থতায়। চাষিদের কাছ থেকে সস্তায় সবজি কিনে প্রায় দু’গুণ এমন কী তিনগুণ দামে বাজারে বিক্রি করছেন তাঁরা। কোনও নিয়ন্ত্রণ না থাকায় এ ভাবেই চড়ছে দাম। ঝিঙে, ঢেঁড়শের মতো সব্জির দাম গড়ে ২০ টাকা কেজি। আলু ১৫-১৬ টাকা, পটল ২০-২৫ টাকা, পেঁপে ৩৫ টাকা, কাঁচকলা বিকোচ্ছে জোড়া ৫ টাকায়। এমন কী কুমড়োও ২০ টাকা কেজি। ফলের দামও চড়ছে পাল্লা দিয়ে। আম ৩৫-৪০ টাকা কেজি, লিচু ৬০ টাকা কেজি। রোজই দেখা মিলছে শীতের সব্জির। ফুলকপি মিলছে ১৫-১৬ টাকায়, বাঁধাকপি ২০ টাকা, টমেটো ২০-২৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এমন কী পালংশাক, ধনেপাতাও রয়েছে বাজারে।
শুধু শাক-সবজিই নয় চড়ছে মাছের বাজারও। দেশি রুই-কাতলা ২০০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি। অন্ধ্রের মাছও মিলছে ১৫০-১৮০ টাকা কেজিতে। এছাড়া বোয়াল ৩০০, আর ২৫০-৩০০, শোল ১৫০। আর চিংড়ি, ইলিশ, চিতলের ওজন অনুপাতে দাম ৩৫০ থেকে ৬০০ টাকা। দাম কমছে না ছোট মাছেরও। ট্যাংরা ২০০-৩০০ টাকা, মৌরলা ৩০০, পুঁটিও ২৫০ টাকা কেজি। গরমকে টেক্কা দিতে পাতে এখন স্পেশ্যাল পান্তাভাত আর ফুলুরিই। |