|
|
|
|
অভাবের সংসারে আনন্দ আনল মাহামুদুলের ফল |
নিজস্ব সংবাদদাতা • হলদিয়া |
বাবা পেশায় সামান্য দর্জি। মা গৃহবধূ। চার জনের অভাবের সংসার। এই অবস্থাতেও শেখ মাহামুদুল হাসান হাই-মাদ্রাসা পরীক্ষায় ৭১১ নম্বর পাওয়ায় উচ্ছ্বসিত তার পরিবারের সকলেই। সোমবার ফলাফল প্রকাশের পরেই গ্রামের সবার মধ্যে ছড়িয়ে গিয়েছে হলদিয়ার ঢেকুয়া ফারুকিয়া হাই-মাদ্রাসার ছাত্র মাহামুদুলের নাম। বাড়ি ওই এলাকাতেই। মাটির বাড়িটির ভগ্নপ্রায়। কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও পড়াশোনো চালিয়ে গিয়েছে মাহামুদুল। তার কথায়, “খুব ভাল লাগছে। বাবা-মাকে খুশি করতে পেরে আরও ভাল লাগছে। ইঞ্জিনিয়র হওয়ার ইচ্ছে।” কিন্তু ভবিষ্যতে কী-ভাবে পড়াশোনো চালাবেমাথার মধ্যে ঘুরছে সেই ভাবনা। ভাবনা শুধু মাহামুদুলের নয়, পরিবারের অন্যদেরও।
মা আফসানা বিবির কথায়, “ছেলের ফলাফলে সকলেই খুশি। ছেলে ইঞ্জিনিয়র হতে চায়। ওর ভাইও পড়াশোনোয় ভাল। কিন্তু আমাদের কষ্টের সংসারে কী ভাবে ওরা পড়াশোনা চালাবে, তা ভেবে পাচ্ছি না।” বাবা মনিরুল ইসলাম কর্মসূত্রে হাওড়ায় থাকেন। সেখানেই একটি দোকানে দর্জির কাজ করেন। তিনিও ছেলের এই সাফল্যে মুগ্ধ। তিনি বলেন, “বড় ছেলে বরাবরই পড়াশোনায় ভাল। অনেক কষ্ট করেই সংসার চালাচ্ছি। ছেলে উচ্চশিক্ষিত হোক, সব বাব-মার মতো আমরাও চাই। কিন্তু আর্থিক দুর্বলতায় তা পারব কি না, সেটাই সংশয়ের।”
ছোট ছেলে আমিরুল ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। সেও ক্লাসে প্রথম হয়। দাদার সাফল্যে সে-ও আরও অনুপ্রাণিত হয়েছে। আরও ভাল করে পড়ার জেদ বেড়েছে। মাহামুদুলের কৃতিত্বে খুশি স্কুলের শিক্ষকেরাও। তাঁরা জানান, বরাবরই ও শান্ত। প্রধান শিক্ষক শেখ খিলাফত হোসেন বলেন, “আমাদের স্কুলের ফল বরাবর ভাল হয়। তবে এ বছর এ রকম অভাবের মধ্যে মানুষ হওয়া এই ছেলেটি আমাদের বিস্মিত করেছে। আমরা যতটা সম্ভব চেষ্টা করব ও যাতে পড়াশোনো চালিয়ে যেতে পারে, সে ব্যাপারে সাহায্য করার।” মাহামুদুল অঙ্কে ৯৪, পদার্থবিদ্যায় ৯৩, জীবনবিজ্ঞানে ৯৭ ও ইতিহাসে ৯১ নম্বর পেয়েছে। আপাতত উস্তির আল-আমিন মিশনে বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনো করার ইচ্ছে। ভবিষ্যতে মাহামুদুলের আরও সাফল্যের দিকে তাকিয়ে গোটা ঢেকুয়া গ্রাম। |
|
|
|
|
|