নিজস্ব সংবাদদাতা • আরামবাগ |
দু’বছর অতিক্রান্ত। এখনও হুগলি জেলার কোথাও চালু হল না ‘ভারত নির্মাণ রাজীব গাঁধী সেবাকেন্দ্র’।
গ্রাম পঞ্চায়েতের পরিকাঠামো শক্তিশালী করার জন্য কেন্দ্র সরকারের গ্রামোন্নয়ন দফতরের বিশেষ কর্মসূচিতে ওই ‘সেবাকেন্দ্র’ নির্মাণ করার কথা ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের মাধ্যমে। অর্থাৎ, এক ছাতার তলায় গ্রামোন্নয়ন সংক্রান্ত যাবতীয় পরিবেষা দেওয়া। প্রাথমিক ভাবে একটি করে ভবন তৈরির কথা প্রতিটি পঞ্চায়েত এবং ব্লক চত্বরে। জায়গা না থাকলে সংশ্লিষ্ট দফতরের কাছাকাছি সেই ভবন তৈরি করতে হবে। কিন্তু এখনও জেলার কোথাও সেই ভবন নির্মাণ না হওয়ায় প্রকল্পটির ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিভিন্ন ব্লক প্রশাসনের কর্তারা।
জেলার ১৮টি ব্লকের প্রশাসনের কর্তাদের অনেকেরই অভিমত, ওই ভবন নির্মাণ হলে গ্রামোন্নয়নের কাজ অনেক সহজ হবে। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের কাছে একাধিকবার প্রস্তাব পাঠিয়েও কোনও উত্তর মিলছে না বলে তাঁদের অভিযোগ। জেলাশাসক শ্রীপ্রিয়া রঙ্গরাজন অবশ্য চলতি বছরেই ওই কাজ শুরু করার আশ্বাস দিয়েছেন। জেলাশাসক বলেন, “কাজটিতে এত দিন অগ্রাধিকার দেওয়া হয়নি শুধুমাত্র ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে মজুরি খাতে কম খরচ হবে বলে। ওই প্রকল্পের নিয়ম অনুযায়ী বরাদ্দ ৬০ শতাংশ মজুরি খাতে এবং ৪০ শতাংশ সামগ্রী খাতে খরচ করতে হবে। আমরা চাইছিলাম, গ্রামবাসীরা বেশি কাজ পাক। তবে, এ বছর পরিস্থিতি দেখে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, প্রথম দফায় জেলার ১০টি ব্লকে ওই ভবন নির্মাণ হবে।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েত ও ব্লক স্তরে ‘ভারত নির্মাণ রাজীব গাঁধী সেবাকেন্দ্র’ তৈরির বিশেষ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয় ২০০৯ সালের ১১ নভেম্বর। একশো দিনের প্রকল্পের অধীনে পঞ্চায়েতগুলির ক্ষেত্রে ওই ভবন নির্মাণের জন্য ১০ লক্ষ টাকা খরচ ধরা হয়েছে। ১৩০ বর্গমিটারর জায়গার মধ্যে তা তৈরি করতে হবে। আর ব্লক অফিস চত্বরে ওই ভবন নির্মাণের জন্য ২৯০ বর্গমিটার জমি লাগবে। ব্যয় ধরা হয়েছে ২৫ লক্ষ টাকা। ভবনটি ‘মহাত্মা গাঁধী জাতীয় গ্রামীণ কর্মসংস্থান সুনিশ্চিত’ প্রকল্পের দফতর হওয়ায় ওই কাজ সংক্রান্ত কারও কোনও অভিযোগ থাকলে তা শোনা হবে। পাশাপাশি, এলাকার গ্রামোন্নয়ন সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য দেওয়া হবে ভবন থেকে। গ্রামবাসীদের সঙ্গে বিভিন্ন প্রকল্প সম্পর্কে মত আদান-প্রদান করা যাবে।
ভবনটি যে গুরুত্বপূর্ণ, তা মেনে নিয়েছেন প্রশাসনের সব মহলের কর্তারাই। পাশের বর্ধমান জেলায় বেশ কিছু পঞ্চায়েত এবং ব্লক স্তরে ওই ভবনের নির্মাণ কাজ ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে। বেশ কিছু পঞ্চায়েতে নির্মাণ কাজ চলছে।
হুগলিতেও সহজেই ভবন তৈরি করা যেত বলে মনে করছেন বেশ কয়েকটি ব্লক প্রশাসনের কর্তারা। তাঁদের মতে, ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে বরাদ্দ থেকে মজুরি খাতে বেশি খরচ হয়। সামগ্রী খাতে খরচ কম হওয়ায় বেঁচে যাওয়া টাকায় ভবন নির্মাণ করা যায়। ব্লক প্রশাসনের কর্তাদের আশ্বাস, জেলা প্রশাসনের নির্দেশ পাওয়া গেলেই ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করে দেওয়া হবে। |