অণ্ণা হজারের মন রাখতেই লোকপাল বিল নিয়ে গঠিত সিলেক্ট কমিটির সদস্য হতে রাজি হলেন রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা অরুণ জেটলি।
কাল সরকার যখন লোকপাল বিলটি সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর তোড়জোর শুরু করে, সেই সময় জেটলি টেলিফোনে কথা বলেন ‘টিম অণ্ণা’র দুই সদস্য প্রশান্ত ভূষণ ও অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সঙ্গে। তাঁদের বোঝান লোকপাল বিলে লোকায়ুক্তকে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব নিয়েই এর আগে সরকারের শরিক তৃণমূল-সহ বাকি সব বিরোধী দল এককাট্টা হয়। কিন্তু এখন দু’টি বিষয়কে পৃথক করার প্রস্তাব সরকার মেনে নেওয়ায় আগের মতো সকলের সমর্থন পাওয়া যাবে না। কিন্তু সিবিআইকে সরকারি নিয়ন্ত্রণের বাইরে রাখা থেকে শুরু করে লোকপাল নিয়োগ ও অপসারণের মতো আরও অনেক বিষয় রয়েছে, যেগুলি সরকার মানেনি। এই পরিস্থিতিতে বিলটি সিলেক্ট কমিটিতে গেলে সরকারকে আরও চেপে ধরার সুযোগ থাকবে।
অণ্ণার পরামর্শ অনুযায়ী কেজরিওয়ালরা জেটলিকে সিলেক্ট কমিটির সদস্য হওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। জেটলি এর পরে বেঙ্কাইয়া নায়ডু, রাজীবপ্রতাপ রুডি, মায়া সিংহ, ধর্মেন্দ্র প্রধানদের মতো বিজেপি নেতাদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে বৈঠকও করেন। অনেকের মনে প্রশ্ন ছিল, রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতার পদে থেকে কোনও কমিটির সদস্য হওয়া সঠিক হবে কি না। জেটলি সকলের সঙ্গে আলোচনা করে স্থির করেন, বিরোধী দলনেতা হলে কমিটির চেয়ারম্যান হওয়া যায় না। কিন্তু সদস্য হতে বাধা নেই। তার উপরে খোদ অণ্ণা শিবির থেকে যখন অনুরোধ আসছে, প্রস্তাবটি বিবেচনা করে দেখা উচিত। জেটলি আজ বলেন, “এর পরেই আমি স্থির করি, সিলেক্ট কমিটির সদস্য হব। যে সব বিষয় এখনও সরকার মেনে নেয়নি, সেগুলি মানতে বাধ্য করার কৌশলই নেওয়া হবে কমিটির বৈঠকে।” অণ্ণা হজারের আন্দোলন যখন দেশ জুড়ে সাড়া ফেলেছিল, সেই সময় তাঁর হাত থেকে কংগ্রেস-বিরোধিতার রাশ কেড়ে নিতেই সক্রিয় ছিল বিজেপি। লালকৃষ্ণ আডবাণীর রথযাত্রার অন্যতম উদ্দেশ্যও ছিল তাই। কিন্তু এখন অণ্ণা কিংবা যোগগুরু রামদেবের আন্দোলন ফিকে হয়ে গিয়েছে। বিজেপি চাইছে, অণ্ণার আন্দোলন এমন পর্যায়ে না পৌঁছক, যাতে বিরোধী দল হিসেবে তাদের ভূমিকা অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যায়। আবার অণ্ণারা এতটাও দুর্বল হয়ে না পড়ুন, যে তাঁদের আন্দোলন কংগ্রেসের কাছে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যায়। অণ্ণা ও রামদেব এখন যৌথ ভাবে আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। সঙ্ঘ ও বিজেপি নেতৃত্বের আশঙ্কা, ভবিষ্যতে যদি তাঁরা রাজনৈতিক দল গঠন করেন, তা হলে খেসারত দিতে হবে বিজেপিকেই। সে কারণে এখন রামদেব-অণ্ণাদের সঙ্গে সুকৌশলে সমন্বয় করেই এগোতে চাইছেন তাঁরা। |