সন্দেহ, মানুষের ভুলেই দুর্ঘটনা
মালগাড়িতে ধাক্কার পরে ট্রেনে আগুন, মৃত ২৬
শ্চিমবঙ্গের সাঁইথিয়ার পরে অন্ধ্রপ্রদেশের পেনুকোন্ডা। দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রেনকে ধাক্কা মারল একই লাইনে ছুটে আসা অন্য একটি ট্রেন।
সাঁইথিয়ায় মৃত্যু হয়েছিল ৭১ জনের। পেনুকোন্ডায় মৃতের সংখ্যা ২৬। তার মধ্যে ১৬ জনের মৃত্যু আগুনে পুড়ে। রেল এবং অন্ধ্র পুলিশ জানিয়েছে, সম্ভবত মানুষের ভুলেই দুর্ঘটনা ঘটেছে। যাত্রিবাহী ট্রেনটি মালগাড়িতে ধাক্কা দেওয়ায় মৃত ও আহতের সংখ্যা তুলনায় কম। তবে ধাক্কার পরে একটি কামরায় আগুন কী করে লাগল, তা স্পষ্ট নয়।
২০১০ সালের ১৯ জুলাই সাঁইথিয়ায় তিন নম্বর প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে থাকা বনাঞ্চল এক্সপ্রেসকে পিছন থেকে ধাক্কা মেরেছিল উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেস। সোমবার একই ধরনের ঘটনা ঘটল পেনুকোন্ডায়। এ ক্ষেত্রে দুই নম্বর লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি মালগাড়ির পিছনে সজোরে ধাক্কা মারে বেঙ্গালুরুগামী হাম্পি এক্সপ্রেস। যাত্রিবাহী প্রথম চারটি কামরা লাইনচ্যুত হয়। তার মধ্যে একটি মহিলা কামরায় আগুন ধরে যায়। প্রাথমিক তদন্তের পরে রেল কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে হাম্পি এক্সপ্রেসের চালককেই।
উদ্ধার করা হচ্ছে এক শিশুকে। ছবি: পি টি আই।
তবে আগুন লাগা নিয়েই রেল-কর্তারা অন্ধকারে। ট্রেনটি বাতানুকূলও ছিল না। তাই মনে করা হচ্ছে, শর্ট সার্কিট কিংবা চায়ের স্টোভ থেকে আগুন লেগেছে। মঙ্গলবারই পেনুকোন্ডায় গিয়েছেন রেলমন্ত্রী মুকুল রায় ও রেল বোর্ডের কর্তারা। মৃতদের পরিবারের জন্য ৫ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন রেলমন্ত্রী। মৃতদের পরিবারপিছু এক জনকে চাকরির প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন। কর্নাটকের রাজ্য সরকারও ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছে।
সাঁইথিয়ার ক্ষেত্রে রেলওয়ে বোর্ড অফ সেফটি উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেসের চালক ও সহ-চালকের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছিল। দু’জনেই মারা যান দুর্ঘটনায়। হাম্পি এক্সপ্রেসের চালক ও সহকারী চালকের বিরুদ্ধেও অভিযোগ উঠছে। ওঁরা দু’জনে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
বর্তমান প্রযুক্তিতে কোনও ট্রেন সিগন্যাল উপেক্ষা করলে সেটির অন্য লাইনে চলে যাওয়ার কথা। সেটা এ ক্ষেত্রে হয়নি। রেলের কর্তাদের একাংশের মত, স্টেশনমাস্টার হয়তো পয়েন্ট সেট করতে ভুল করেছিলেন নয়তো লাইনের পয়েন্ট ঠিক মতো কাজ করেনি। রেল সূত্রে খবর, পেনুকোন্ডা স্টেশনে তিনটি লাইন রয়েছে। মাঝের লাইনটি (দুই নম্বর লাইন) দিয়ে আপ ও ডাউন ট্রেন যাওয়া-আসা (রিভার্সিবল) করতে পারে। সোমবার রাত তিনটে নাগাদ ধর্মাবরম স্টেশনের দিক থেকে একটি মালগাড়ি মাঝের লাইনে দাঁড়ায়। কয়েক মিনিটের মধ্যেই নানদেড় এক্সপ্রেস এসে দাঁড়ায় তিন নম্বর লাইনে। তার দু’তিন মিনিটের মধ্যেই মাঝের লাইনে আসে হাম্পি এক্সপ্রেস।
স্টেশনমাস্টারের দাবি, হাম্পি-র চালককে তিনি স্টেশনে ঢোকার মুখে হোম সিগন্যালে দাঁড়ানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। রেল কর্তাদের বক্তব্য, হাম্পি এক্সপ্রেসের চালক সেই লাল সিগন্যাল দেখেও ট্রেন না থামানোয় ট্রেনটি মাঝের লাইনে ঢুকে পড়ে ও ধাক্কা মারে মালগাড়িকে। তাঁরা বলছেন, চালক ঘুমিয়ে পড়লে কিংবা ব্রেক ফেল করলেই এমন হতে পারে। এ ক্ষেত্রে চালক ঘুমিয়ে পড়েছিলেন কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ট্রেনটির ব্রেক কাজ করেছিল কি না, স্টেশনমাস্টার ঠিক মতো ইন্টারলকিং ব্যবস্থা কার্যকর করেছিলেন কি না, দেখা হচ্ছে তা-ও। তবে কী করে একটি কামরায় আগুন ধরে গেল, তা নিয়েই বেশি চিন্তিত রেল প্রশাসন।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.