অপূর্ব চট্টোপাধ্যায় • নলহাটি |
২০০২ সালে প্রথম নলহাটি পুরসভা নির্বাচনের সময়ে সিউড়া, নতুনগ্রাম, পাহাড়িএই তিনটি গ্রামকে পুরসভার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। নতুনগ্রাম ও পহাড়ি এই দু’টি গ্রাম নিয়ে ১২ নম্বর ওয়ার্ড গঠিত হলেও আজ পর্যন্ত গ্রামে যাওয়ার রাস্তার উন্নয়ন হয়নি। কিছু অংশ মোরাম ও কিছু অংশ পাকা হলেও খানাখন্দে ভরা এই রাস্তা দিয়ে গাড়ি নিয়ে যাতায়াত করা দুষ্কর।
নতুনগ্রামে ঢুকতে দেখা গেল গ্রামের কয়েক জন মহিলা বাটি করে জল তুলে কলসি ভরছেন। জিজ্ঞাসা করতেই তাঁরা বললেন, “সকালে ট্যাপ কলে খুব ভিড় হয়। তাও বেশিক্ষণ জল থাকে না। গভীর নলকূপেও লম্বা লাইন পড়ে। শুধু তাই নয়, মাঝে মধ্যে পাইপ লাইনে ফাটল দেখা দায়। পঞ্চাশ মিটার দূরের গ্রাম থেকে মহিলারা ওখান থেকে জল নিয়ে যান।”
এর পরে পাহাড়ি পাড়াতে ঢুকতে একট মোড়ে বিদায়ী সিপিএম কাউন্সিলর পরিমল লেটকে ঘিরে ভিড়। নাগরিক পরিষেবা নিয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভের কথা শোনা গেল ভিড় থেকে। ঝর্নাপাড়া, লেটপাড়া এখনও নিকাশি নালা হয়নি। এলাকার বাসিন্দা আব্দুল রেকিব, মোস্তাকিম শেখরা বলেন, “রাস্তার দু’ধারে নিকাশি নালার অভাবে জল ঠিক মতো বেরতে পারে না। একটা গভীর নলকূপের উপরে ২০০টির বেশি পরিবার নির্ভরশীল। |
বাড়ির ইঁদারা শুকিয়ে গিয়েছে।” তাঁদের ক্ষোভ, “জল, রাস্তাঘাট, নিকাশি নালার উন্নয়ন পঞ্চায়েত এলাকা থেকে অনেক পিছিয়ে। পঞ্চায়েত আমলে ভাল ছিলাম।” অন্য দিকে, লেটপাড়ার হাসিমা বেগম, মানিরা বিবিদের দেখা গেল, নিকাশি নালা নিজেরাই লাঠি দিয়ে পরিষ্কার করছেন। তাঁরা বললেন, “গতকাল রাতে অল্প বৃষ্টি হয়েছিল। নিকাশি নালা সংস্কার ও নিয়মিত পরিষ্কার না করার জন্য বাড়িতে জল ঢুকে যায়। তাই নিজেরাই নালা পরিষ্কার করছি।” এলাকার বাসিন্দাদের আরও ক্ষোভ, “মাঠে সহজে পৌঁছনোর জন্য বাসিন্দারা স্বেচ্ছাশ্রমে রাস্তা তৈরি করেছিলেন। কিন্তু আইনি ঝামেলায় মাটি ফেলার কাজ শেষ করা যায়নি। এর ফলে ফেলা নতুন মাটিতে বর্ষায় চলাচল করতে সমস্যা হয়।”
কংগ্রেস প্রার্থী রাহেলা বিবির স্বামী আলি হোসেনের কটাক্ষ, “ওয়ার্ডে কেমন উন্নয়ন হয়েছে বাসিন্দারাই ভাল ভাবে জানেন।” বিদায়ী সিপিএম কাউন্সিলর পরিমল লেটের দাবি, “বিধবা, বার্ধক্য ভাবা উপযুক্ত প্রাপকদের দেওয়া হয়েছে। মাঠ দিয়ে বাউটিয়া যাওয়ার জন্য রাস্তা করে দেওয়া হয়েছে এবং পানীয় জলের সমস্যা মেটাতে দু’টি গভীর নলকূপ বসানো হয়েছে।” তাঁর পাল্টা অভিযোগ, “বিরোধী কাউন্সিলর হওয়ায় অনেক সময় আমাদের চাহিদাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।”
যদিও বিদায়ী পুরপ্রধান বিপ্লব ওঝা বলেন, “উন্নয়নমূলক কাজে কোনও দলবাজি করা হয়নি।” বাসিন্দাদের ক্ষোভ, যতই নির্বাচন এগিয়ে আসছে, ততই অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ বাড়ছে। কিছু কাজ হলেও এখনও রাস্তা, নিকাশি নালার কাজ হয়নি। |
নজরে নলহাটি |
ওয়ার্ড ১২ |
• ঝর্নাপাড়া, লেটপাড়ায় নিকাশি নালা নেই।
• নতুনগ্রামে ঢোকার রাস্তা বেহাল।
• পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে। |
সার্বিক উন্নয়ন করতে কাউন্সিলর ব্যর্থ। ঝর্ণাপাড়া,
লেটপাড়ায় পানীয় জল, নিকাশি নালা,
রাস্তাঘাট
এখনও নির্মাণ হয়নি।
রাহেলা বিবি, কংগ্রেস প্রার্থী |
কাউন্সিলর হওয়ার পর থেকে বার্ধক্য, বিধবা ভাতা
উপযুক্ত প্রাপকদের দেওয়ার চেষ্টা করেছি। ২০০
মিটার রাস্তা ঢালাই করে দেওয়া হয়েছে।
পরিমল লেট, সিপিএম কাউন্সিলর |
|