ক্ষতস্থান সেলাই করছেন যিনি, তিনি আদতে সাফাই কর্মী। চিকিৎসকের নির্দেশে যিনি প্রতিদিন কয়েকশো রোগীকে ইনজেকশন দিচ্ছেন, তিনি বহিরাগত এক যুবক। কোনও গ্রামে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নয় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে। ৫০ জন চিকিৎসক, আড়াইশো নার্স, শতাধিক স্বাস্থ্যকর্মী থাকলেও জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগ চালাচ্ছেন কয়েকজন সাফাই কর্মী ও বহিরাগত যুবক। চিকিৎসক এবং নার্সও রয়েছেন। চিকিৎসক রোগীকে পরীক্ষা করে দেখার পরে প্রয়োজন মতো ইঞ্জেকশন বা ক্ষতস্থান সেলাই করার নির্দেশ দিচ্ছেন। পাশে বসে থাকা নার্স ব্যস্ত থাকছেন রোগীদের নামধাম কম্পিউটারে নথিভুক্ত করার কাজে। ঘটনাটি অস্বীকার করা তো দূরের কথা, মালদহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সুপার হিমাদ্রি আড়ি বলেছেন, “ওঁরা আছেন বলেই জরুরি বিভাগ চলছে। জরুরি বিভাগ চালাতে যে পরিকাঠামো দরকার তা মালদহ মেডিক্যাল কলেজে নেই। তবে এটা ঠিক ক্ষতস্থানে সেলাইয়ের কাজ চিকিৎসকের করা উচিত। ইনজেকশন দেওয়া উচিত কর্তব্যরত নার্সের। কম্পিউটার চালানোর অপারেটর না-থাকায় নার্সদের দিয়ে ওই কাজ করাতে হচ্ছে।” এ কথা জেনে স্তম্ভিত মালদহ মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতি চেয়ারম্যান, নারী সমাজল্যাণ মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র। তিনি বলেন, “এত ডাক্তার ও নার্স থাকার পরেও কেন মালদহ মেডিকেল কলেজের জরুরি বিভাগে কেন সাফাই কর্মী ও বহিরাগত যুবকরা জখম ও অসুস্থ রোগীদের সেলাই করবেন? জরুরি বিভাগ থেকে সাফাই কর্মী ও বহিরাগত যুবকদের বের করার জন্য মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষকে বলব। চিকিৎসক ও নার্সদের নিজের কাজ করতে হবে। না-হলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” হাসপাতালের কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, ইনজেকশন কিংবা সেলাই করাই নয়, রোগীদের ট্রলিতে ওয়ার্ডে নিয়ে যাচ্ছেন ওই সাফাই কর্মী এবং বহিরাগতেরা। বিনিময়ে তাঁরা রোগীর পরিবারের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছেন। টাকা দিতে অস্বীকার করা হলে রোগীকে মেঝেয় ফেলে রাখা হচ্ছে।” অভিযোগ বহিরগতদের সঙ্গে মালদহ মেডিকেল কলেজের বেশ কিছু চিকিৎসক ও আধিকারিকদের বহিরাগতদের গোপন আঁতাত রয়েছে। সেজন্য জরুরি বিভাগ থেকে বহিরাগতদের উচ্ছেদ করতে কেউ উদ্যোগী হয়নি। |