|
|
|
|
দখল ছাড়লেন ব্যবসায়ীরা |
পুরসভার আবেদনে সাড়া |
নিজস্ব সংবাদদাতা • জলপাইগুড়ি |
ফুটপাত থেকে অবৈধ নির্মাণ সরিয়ে নেওয়ার পুরসভার আবেদনে সাড়া দিয়েছেন শহরের বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীরা। গত মাসেই শহরের রাস্তাগুলির ফুটপাত থেকে ব্যবসায়িক এবং অন্যান্য সব ধরনের নির্মাণ সরিয়ে ফেলার অভিযান শুরু করে জলপাইগুড়ি পুরসভা। অভিযানের প্রথম ধাপে ফুটপাতে গজ়িয়ে ওঠা অবৈধ নির্মাণ চিহ্নিত করেন পুর কর্তৃপক্ষ। দ্রুত সেগুলি সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়। পুরসভার এই উদ্যোগে শহরের মাসকলাইবাড়ি, শান্তিপাড়া, পান্ডাপাড়া, রায়কতপাড়া এবং স্টেশন রোডের একাংশ ব্যবসায়ী নিজেরাই অবৈধ নির্মাণ সরিয়ে ফেলেন। ব্যবসায়ীদের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে অবৈধ নির্মাণ সরিয়ে দেওয়ার জন্য আরও কিছুটা সময় দিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি, পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, রাস্তা দখল করে তৈরি অবৈধ নির্মাণ সরিয়ে ফেলার ঘোষণার পরেও মার্চেন্ট রোড, দিনবাজার-সহ কিছু এলাকার চিত্র কিছুই পাল্টায়নি। সে কারণেই রাস্তা দখলমুক্ত করতে প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে পুরসভার তরফে অবৈধ নির্মাণ ভেঙে দেওয়ার অভিযানের সিদ্ধান্ত থেকে পুর কর্তৃপক্ষ সরে আসেননি। প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনার পরে স্থির হয়েছে, ধূপগুড়ি পুরসভা নির্বাচন পর্ব মিটে যাওয়ার পরে সেই অভিযান শুরু হবে। ধূপগুড়িতে পুরসভা নির্বাচনের কারণে আপাতত পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তারা ব্যস্ত রয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে জলপাইগুড়িতে অভিযান শুরু হলে আইনশৃঙ্খলা জনিত ছোট সমস্যাও বড় আকার ধারণ করতে পারে, এই আশঙ্কাতেই ধূপগুড়ির নির্বাচন পর্ব মেটা পর্যন্ত অপেক্ষা করছেন কর্তৃপক্ষ। তবে ইতিমধ্যে বেআইনি নির্মাণের পাশাপাশি ফুটপাত দখল করে বালি পাথর রেখে দেওয়ার প্রবণতা বন্ধ করতে অভিযান শুরু করেছে পুরসভা। ফুটপাতে বালি পাথর রেখে ব্যবসা করছেন এমন ২১ জন ব্যবসায়ীকে গত দু’সপ্তাহে জরিমানা করা হয়েছে। ফুটপাতে পড়ে থাকা বালি, পাথর, ইট বাজেয়াপ্ত করেছে পুরসভা। জলপাইগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু বলেন, “শহরের যোগাযোগ পরিকাঠামোর উন্নতি ঘটাতে রাস্তা বা ফুটপাত দখল করে তৈরি হওয়া সব অবৈধ নির্মাণ ভেঙে ফেলা হবে। তবে পুরসভার ঘোষণার পরে বেশ কিছু ব্যবসায়ী নিজেরাই ফুটপাত থেকে সরে গিয়েছেন। পুরসভার পক্ষ থেকে তাদের অভিনন্দন জানানো হয়েছে। কেউ কেউ পুরসভার আবেদনে সাড়া দেয়নি। শীঘ্রই অভিযান হবে।” জলপাইগুড়ি শহরের বেগুনটারি, দিনবাজার, রায়কতপাড়া, শান্তিপাড়া, কদমতলা, মার্চেন্ট রোড-সহ ব্যস্ত এলাকার রাস্তার ফুটপাত অবৈধ দখলদারে ভরে গিয়েছে বলে অভিযোগ। রাস্তা জবরদখলের কারণে একদিকে যেমন যানজট এবং দুর্ঘটনার ঘটনা বেড়ে গিয়েছে, তেমনই অবৈধ দখলে ক্রমশ শহরের রাস্তাগুলি ঘিঞ্জি আকার নিয়েছে। গত মাসে পুরসভার তরফে ঘোষণা করে জানিয়ে দেওয়া হয়, রাস্তার দু’পাশের ফুটপাত এবং নর্দমার ওপর থেকে সব ধরনের স্থায়ী ও অস্থায়ী নির্মাণ সরিয়ে নিতে হবে। জেলা ব্যবসায়ী সমিতির তরফে পুরসভার ঘোষণাকে স্বাগত জানানো হয়। সমিতির সম্পাদক সাধন বসু বলেন, “শহরের উন্নতির বিষয়ে আমরা সব সময়েই আন্তরিক। পুরসভার ঘোষণা মতো অনেক ব্যবসায়ীই নিজেদের মতো করে উদ্যোগ নিয়েছেন। আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান সম্ভব।” পুরসভার বিরোধী দলনেতা তথা সিপিএম কাউন্সিলর প্রমোদ মন্ডল বলেন, “আমরা আগেই জানিয়েছি, সব ব্যবসায়ীদের যথাযথ পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। এই বিষয়ে হঠকারী কোনও সিদ্ধান্ত না নিয়ে সার্বিক আলোচনার প্রয়োজন।” পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান পিনাকী সেনগুপ্তের মতে, শহরের উন্নয়নের স্বার্থেই এই পদক্ষেপ। শহরবাসী পুরসভার এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। এ বিষয়ে ক্ষুদ্র রাজনীতি বরদাস্ত করা হবে না। |
|
|
|
|
|