ঢিল ছুড়ে শান্তিপুর কলেজের এক শিক্ষকের বাড়ির কাচ ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠল কলেজেরই ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক তুষার প্রামাণিকের বিরুদ্ধে। তুষারবাবু অবশ্য তাঁকে মারধরের পাল্টা অভিযোগ করেছেন ওই শিক্ষক রামকৃষ্ণ মণ্ডলের বিরুদ্ধে। কলেজের ছাত্র সংসদের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক প্রলয় রায়ের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ এনেছেন তুষারবাবু। তুষারবাবু ও প্রলয়বাবু উভয়েই ছাত্র পরিষদের সদস্য। এই ঘটনার ফলে এই কলেজে ছাত্র পরিষদের দুই গোষ্ঠীর কোন্দল প্রকাশ্যে চলে এল বলেই মনে করা হচ্ছে। বিবাদমান দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপের অভিযোগ করেছেন। তবে শান্তিপুরের বিধায়ক কংগ্রেসের অজয় দে বলেন, “খুবই সামান্য একটা ঘটনা। দু’পক্ষকে সামনাসামনি বসিয়ে সব কিছু মিটমাট করে দেওয়া হবে।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাতে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক তুষারবাবু কলেজের আংশিক সময়ের শিক্ষক রামকৃষ্ণবাবু ও প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক প্রলয়বাবুর বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ দায়ের করেন। এরপরে রবিবার দুপুরে রামকৃষ্ণবাবু অভিযোগ করেন, তুষারবাবু সহ বেশ কয়েকজন ছাত্র তাঁর বাড়ি ভাঙচুর করেছে। তুষারবাবুর দাবি, “রামকৃষ্ণবাবু ও প্রলয়বাবু আর্থিক দুর্নীতি করেছেন। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পরে তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাঁরা আমাকে মারধর করেছেন।” রামকৃষ্ণবাবুর পাল্টা দাবি, “তুষার প্রামাণিকই আর্থিক দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত। আমিই সেটা প্রথমে ধরে ফেলেছিলাম। প্রলয়বাবুও সেই ঘটনার প্রতিবাদ করেছিল। তাই শনিবার রাতে ওরা প্রলয়ের উপরে হামলা করতে এসেছিল। প্রলয়কে না পেয়ে শনিবার রাত ৮টা নাগাদ তুষার প্রামাণিক সহ বেশ কয়েকজন ছাত্র আমার বাড়ি চড়াও হন। অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করার সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা আমার বাড়ি ভাঙচুর করেন।” প্রলয়বাবুর বক্তব্য, “তুষার ছাত্রছাত্রীদের প্রচুর টাকা তছরুপ করেছে। আমি প্রতিবাদ করায় ওরা চাইছে মিথ্যা অভিযোগ করে আমাকে ফাঁসাতে।” তুষারবাবু অবশ্য সব অভিযোগই অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “আমি কোনও শিক্ষকের বাড়ি হামলা করিনি। কাউকে মারধরেরও চেষ্টা করিনি।”
ওই কলেজে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ যে উঠেছে, তা স্বীকার করে নেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অসীম পাল। তিনি বলেন, “ছাত্রদের কাছ থেকে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ পেয়েছিলাম। সেই মতো দু’জন কর্মীকে আমি চিঠি দিয়ে প্রকৃত ঘটনা জানতেও চেয়েছি। কলেজের গভর্নিং বডির বৈঠকে প্রসঙ্গটি তোলা হবে। ওই বৈঠকের সিদ্ধান্ত মতোই এই ব্যাপারে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।” |